সোমবার দুপুর ২:৩৪, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

স্বাধীনতার ৫০ বৎসর পরও শহীদের স্বীকৃতি পাননি শিক্ষক আব্দুল হাই

৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর নতুন বস্তি এলাকার আরবী শিক্ষক শহীদ মাওলানা আব্দুল হাই এখনও শহীদের স্বীকৃতি পাননি। স্বাধীনতার ৫০ বৎসর পেরিয়ে গেলেও শেরপুরের জগনাথপুর উপজেলায় শ্রীরামসী গ্রামে প্রথম শহীদ শ্রীরামসী হাই স্কুলের আরবী শিক্ষক মৌলভী শহীদ মাওলানা আব্দুল হাই অজ্ঞাত কারণে শহীদের তালিকায়, মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

আজ ১২ নভেম্বর সালমা বেগম (৫০) মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার পিতার আত্মত্যাগের স্বীকৃতির দাবী জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে জানান- ১৯৭১ সালের ৩১ আগষ্ট পাক হানাদার বাহিনী শেরপুরের রাজাকারের সহযোগীতায় জগনাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী হাই স্কুলের আরবী শিক্ষক মৌলভী শহীদ মাওলানা আব্দুল হাই শহিদ হন। সে সময় সালমা বেগম এর বয়স ছিল মাত্র ১৩ দিন।

তি‌নি ব‌লেন, এই শিশু বয়সে আমি এতিম হয়ে যাই। রাজাকার দালালরা পাক হানাদারকে বুঝিয়ে ছিল শহীদ মাওলানা আব্দুল হাই এর দুই ভাই সোবেদার হোসেন আহমদ ও সামছুল হুদা মুক্তিযোদ্ধ করেছেন। আর শহীদ মাওলানা আব্দুল হাই ও মুক্তিযোদ্ধাদের খবর সংগ্রহ করে দেন। এবং তিনিও যোদ্ধে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাক হনাদাররা পূর্র পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্রীরামসী গ্রামে এসে প্রথমে মাওলানা আব্দুল হাইকে খোঁজে বের করে। তাহার দুই ভাই মুক্তিযোদ্ধা কোথায় আছেন ও গ্রামে কে কে মুক্তি যোদ্ধা তাদের খবর জানতে চায়। তিনি এ সমস্ত খবর না বলায তার দু হাত বেধেঁ ফেলে। এবং ঐ গ্রামে আরো লোকের সাথে ব্রাশফায়ার করে মেরে ফেলে।

স্বাধীনতার ৫০ বৎসর পেরিয়ে গেলেও অজ্ঞাত কারণে আমার পিতার নাম শহীদের তালিকায় ও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি এখনও পাইনি। ১৯৮৮ ইং শ্রীরামসী গ্রামে প্রতিষ্টিত হয় শহীদ স্মৃতি সংসদ। প্রতি বৎসর ৩১ আগষ্ট আলোচনা সভা ও ম্যাগাজিন প্রকাশ হয়ে থাকে। পরবর্তীতে ৩ জানুয়ারী ২০১০ইং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলা কমান্ডার মো: আব্দুল কাদির সিকদার এক প্রত্যায়ন পত্রে শহীদ মাওলানা আব্দুল হাইসহ শ্রীরামসী গ্রামের সকল শহীদদের নাম লিপিবদ্ধ করার সুপারিশ করেন। ৪ জানুয়ারী ২০১০ ইং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডার প্রত্যায়ন পত্রে শহীদ মাওলানা আব্দুল হাই সহ শ্রীরামসী গ্রামের সকল শহীদদের নাম লিপিবদ্ধ করার সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে ২৯/৪/২০১৫ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জজেলার জগন্নাথপুর উপজেলা কমান্ডার মো: আব্দুল কাইযুম ও তথ্য কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলা কমান্ডার ইলিয়াছ আলী মৌলভীবাজার জেলায় শহীদ মাওলানা আব্দুল হাইর পরিবারকে তালিকা ভূক্ত করে শহীদ পরিবার স্বীকৃতি দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

তিনি আরো জানান- ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারী মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা বরাবর ও জ্ঞাথার্থে কমান্ডার মৌলভীবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর নিকট শহীদের তালিকায় নাম অন্তরভূক্তির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ফলা ফল পাইনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শহীদ পরিবার ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সুয়োগ সুবিধা দিচ্ছেন। কিন্ত এখন পর্যন্ত শহীদ পরিবারের হিসাবে সে সকল সুয়োগ সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় এলাকার মানুষ শ্রীরামসী গ্রামের নাম রাখেন শহীদ নগর। এলাকাবাসী ও সরকারের সহযোগীতায় শ্রীরামসীর বধ্য ভূমিতে পাথরে খোদাই করে শহীদদের নাম লিখেছেন। সে দিন পাকহাদার বাহীনী গ্রামের হাট বাজার পেট্রল দিয়ে আগুন লেগে জ্বালিয়ে দিয়ে গিয়েছিল।

Some text

ক্যাটাগরি: খবর, নাগরিক সাংবাদিকতা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি