![](http://www.old.deshdorshon.com/wp-content/themes/deshdorshon/images/featured_image_large.jpg)
আমার এক চাচাত ভাই কলেজে পড়ত। কালের আবর্তে সময়ের পরিবর্তনে এখন তিনি সরকারি চাকরি করেন। মাদরাসা বিরতি হলে বাসায় আসলে মাঝে মাঝে তাদের বাসায় যেতাম। তিনি খুব রসিক মানুষ ছিলেন। নামাজ আদায় করতেন রীতিমতো। কুরআন তেলাওয়াত করতেন। ধর্মীয় কিতাবাদী পাঠ করতেন। তিনি প্রায় সময় একটি প্রবাদ বলতেন,”সবরে মেওয়াহ ফলে”।
কয়েকদিন আগে সপ্তম শ্রেণির “রওযাতুল আদব” কিতাবের “প্রচিলত প্রবাদ- প্রবচন” অধ্যায়টি পড়ানোর সময় একটি প্রবাদ এমন ছিল, “من صبر ظفر” অর্থঃ যে সবর করে সে সফল হয়। তখন আমার মনে পড়ল ভাইয়ের মুখে অগণিত বার শোনা প্রবাদ “সবরে মেওয়াহ ফলে”। তাই ছাত্রদেরকে বললাম, এখানে “যে সবর করে সে সফল হয়” এর পরিবর্তে “সবরে মেওয়াহ ফলে” এটিই অনেক খাপ খায়।
আরেকটি প্রবাদ আছে, “লেগে থাকুন, সফলতা আসবেই।” রব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআন মাজীদে সবরকারীদেরকে শান্ত্বনার বাণী শুনিয়েছেন। অফুরন্ত প্রতিদানের ওয়াদা করেছেন। দেখুন-
১. রব্বুল আলামিন সবরকারীদের সাথে রয়েছেন।
সূরা বাকারা- ১৫৩
২. সবরকারীদেরকে বে হিসেব প্রতিদান দেওয়া হবে।
সুরা যুমার-১০
রাসূল সা. হাদিসে পাকে সবরকারীদেরদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন।
তাই বিপদে পড়লে অভিযোগ করতে নেই। হতাশ হতে নেই। কেননা রাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটে আসে।
অসুস্থ হলে জীবনের আশা ছেড়ে দিতে নেই। নিজ জীবন সম্পর্কে হতাশ হতে নেই। বরং কাকুতি মিনতি করে রব্বুল আলামীনের দরবারে ফরিয়াদ করা। যিনি বিপদ দিয়েছেন তিনিই উদ্ধার করবেন।
কষ্টের পর সুখ আসবেই। এটি রব্বুল আলামিনের ওয়াদা। তাই আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করুন।
عَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ ، قَالَ : قَالَ لِيَ ابْنُ عَبَّاسٍ : ” أَلا أُرِيكَ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ؟ قُلْتُ : بَلَى ، قَالَ : هَذِهِ الْمَرْأَةُ السَّوْدَاءُ أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَتْ : إِنِّي أُصْرَعُ ، وَإِنِّي أَتَكَشَّفُ ، فَادْعُ اللَّهَ لِي ، قَالَ : إِنْ شِئْتِ صَبَرْتِ وَلَكِ الْجَنَّةُ ، وَإِنْ شِئْتِ دَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُعَافِيَكَ ، فَقَالَتْ : أَصْبِرُ ، فَقَالَتْ : إِنِّي أَتَكَشَّفُ ، فَادْعُ اللَّهَ لِي أَنْ لا أَتَكَشَّفَ ، فَدَعَا لَهَا ” .
আতা ইবনে আবু রাবাহ (রহঃ) বলেন, ইবনে আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে একজন বেহেশতী নারী দেখাবো না? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেন, ঐ কৃষ্ণকায় মহিলা। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললো, আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত এবং (অচৈতন্য অবস্থায়) আমি বিবস্ত্র হয়ে যাই। আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।
তিনি বলেনঃ তুমি চাইলে ধৈর্য ধারণ করতে পারো এবং তোমার জন্য হবে জান্নাত। আর যদি চাও তবে আমি তোমার রোগমুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারি। সে বললো, আমি ধৈর্য ধারণ করবো। সে পুনরায় বললো, আমি বিবস্ত্র হয়ে যাই। আপনি আমার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করুন, যেন আমি বিবস্ত্র না হই। তিনি তার জন্য দোয়া করলেন। সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৬৩৩৭
হাদীসের শিক্ষা
১. মৃগী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি বা জিন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির জন্য পরকালে প্রতিদান রয়েছে।
২. বিপদে সবর মুমিনকে জান্নাতের অধিকারী বানিয়ে দেয়।
৩. সামর্থ্যবান মানুষের জন্য রুখসতের চেয়ে আযীমত অনুযায়ী আমল করা উত্তম।
৪. অসুস্থ ব্যক্তি চিকিৎসা না করার বৈধতা ও আছে।
৫. দোয়া করা ও আল্লাহমুখী হওয়া চিকিৎসার চেয়ে বেশি উপকারী।
লেখক: আব্দুল্লাহ ইদরীস
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]