শনিবার সকাল ১১:২৫, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং

কে ছিলেন এই আল্লামা আহমদ শফী?

৫০৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

শায়খুল আরব ওয়াল আজম আল্লামা হুসাইন আহমাদ মাদানীর খলিফা, আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহঃ) দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বয়োজ্যেষ্ঠ একমাত্র ইসলামী রাহবার ছিলেন। বাংলাদেশের আলেম উলামা, কওমী মাদ্রাসা তথা ইসলামপন্থীদের জন্য আল্লাহপ্রদত্ত এক বিশেষ নেয়ামত ও রহমত হিসেবে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে আল্লাহতায়ালা দান করেছিলেন ।

মুফতী ফজলুল হক আমিনীর (রহঃ) ইন্তেকালের পর বাংলাদেশের আলেম উলামা তথা গোটা কওমী অঙ্গন যখন নেতৃত্ব শূন্যতায় ভোগছিল, তখনই আল্লাহতায়ালা আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে দান করেছিলেন বাংলারদেশের উম্মতে মোহাম্মদীর ইমান আক্বিদাহ হেফাজতের দায়িত্ব দিয়ে। খানকাহ থেকে রাজপথে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পদার্পন যেন মুজাদ্দিদে আলফেসানীরই প্রতিচ্ছবি।

কতিপয় নাস্তিকব্লগার যখন সালে প্রকাশ্যে ইসলাম বিনাশের কর্মসূচী নিয়ে রাজপথে নেমে আসে ঠিক তখনই বাংলার নেতৃত্বহীন উলামাদের হাল ধরে ময়দান থেকে ইসলাম বিরোধী ব্লগারদের হটাতে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করে দেশবিদেশে অবিসংবাদিত নেতৃত্বের আসন লাভ করার পাশাপাশি কোটিকোটি ইসলামপ্রিয় মানুষদের হৃদয়ের আসনে স্থান করে নেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

নাস্তিকব্লগার বিরোধী সফল আন্দোলনের পর বাংলাদেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজেদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ভূমিকার প্রতি তাকিয়ে থাকতে হয়েছে। মোটকথা বাংলাদেশের রাজনীতি কিংবা সরকার পরিচালনায় ইসলাম, কওমী মাদ্রাসার আলেম উলামাদের কথা চিন্তা করার, ভাববার এক পরিবেশ দেশে সৃষ্টি করতে পেরেছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলামের সেই আলোচিত আন্দোলন যেন দিনে দিনে আলেম উলামাদের রাষ্ট্রের প্রতি প্রভাব বিস্তার করার এক সাহসী জাতীতে রুপান্তরিত করে ফেলেছে নতুন আঙ্গিকে। কিন্তু আলেম উলামাদের এই প্রভাব কি ইসলামের দুশমনরা সহ্য করেই যাবে? আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে একেএকে ইসলামী দাবী সমূহ আদায়ে যেন ইসলামের দুশমনদের অন্তরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। তাদের পুরনো স্বভাব অর্থাৎ ইসলামের বিরোধিতা করা, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার নেশা জেগে উঠলো ষড়যন্ত্রকারী মনে। কিন্তু এবারের ষড়যন্ত্রের পদ্ধতিটা ভিন্ন আঙ্গিকে হওয়াতে তা উপলব্দি করতে অনেকেরই দেরি হয়ে গেছে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর আকাশ্চুম্বি জনপ্রিয়তার কারণে সরাসরি তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না এনে সোশ্যালমিডিয়ায় বিভিন্ন অজুহাত সামনে এনে তার চরিত্রহনন করে ইসলাম পন্থীদের কাছে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে বিতর্কিত করে আলেম উলামাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে তারা ।

কওমী অঙ্গনে অস্থিরতা তৈরি করতে আল্লামা শাহ আহমদ শফী সম্পর্কে আলেম উলামা ও কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের হৃদয় থেকে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর প্রতি নিরংকুশ সমর্থন ও ভালবাসাকে মুছে দিতে ইসলাম বিরোধীরা অনেক দূর থেকে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়তে শুরু করে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বেছে নেওয়া হয়েছে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে।নেতৃত্বের আসন থেকে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে মাইনাস করতেই অজুহাত হিসেবে সামনে আনা হয়েছে তার বয়স, কর্মোক্ষম ও মাযুরতার বিষয়টি।

এদেশের ইসলাম পন্থীদের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এবার ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে জনসম্মুখে হেয় করা অন্যদিকে গোটা কওমী উলামাদের বিতর্ক করার জন্য সোশ্যালমিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে অসংখ্য গুজব, করা হয়েছে অজস্র প্রোপাগাণ্ডা। ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। একে একে শীর্ষ উলামায়ে কেরাম, কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড সহ এমন কোনো বিষয় নেই যা তারা বিতর্কিত করছেনা? সামনে আনা হচ্ছে শীর্ষ উলামায়ে কেরামদের ব্যক্তিগত বিষয়াদি। চরিত্র হনন করা হচ্ছে তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যাযের আলেম উলামাদের।

এখনো সময় আছে, কওমী মাদ্রাসার আলেম উলামা, ছাত্রদেরকে এই ষড়যন্ত্রের মূল টার্গেট ও লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত হতে হবে। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে চিলের পেছনে দৌড়াদৌড়ি করা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না।

আল্লাহতায়ালার রহমত পেয়ে যারা এর মর্যাদা রক্ষা করতে ব্যার্থ হয় তাদের থেকে আল্লাহতায়ালা নিজ প্রদত্ত রহমত ছিনিয়ে নেন। এবার হলোও তাই। আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পাশাপাশি এই দুনিয়াকেই ইস্তফা দিয়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন ১৮/০৯/২০ ইং শুক্রবার সন্ধা ৬টা ২০ মিনিটে। আল্লাহতায়ালা আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে (রহঃ) জান্নাতুল ফেরদৌসের উঁচু স্থান দান করুন, আমিন।

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর দেশের আলেম উলামাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইসলামের দুশমন গোষ্ঠী। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত, আলেম উলামাদের মাঝে বিভেদ তৈরি করার যতই ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করা হোক না কেন, তা কখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

মোহাম্মদ এনামুল হাসান: যুগ্ম সম্পাদক 

ইসলামী ঐক্যজোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি