শুক্রবার বিকাল ৫:১৯, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৩রা মে, ২০২৪ ইং

কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ: ইসলাম কী বলে?

৩৯৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আমাদের সমাজে কয়েকটি রীতিনীতি প্রচলিত রয়েছে, ১.কবরে গিলাফ, চাদর পরানো ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা। ২. মৃত ব্যক্তির দাফনের পর খুব গুরুত্বের সাথে তার কবরের উপর গাছের ঢাল গেঁথে দেওয়া।

উপরোক্ত সবগুলো কাজ শরীয়াহ পরিপন্থী। এগুলো কিছুতেই শরীয়তে কাম্য নয়। তাই এসব কাজ পরিহার করা আবশ্যক।
দেখুন

وضع الستور والعمائم والثياب على قبور الصالحين والأولياء كرهه الفقهاء
অর্থাৎ নেককার ও ওলীদের কবরে পর্দা, পাগড়ি ও কাপড় পরানো ফুকাহায়ে কেরাম অপছন্দ করেন।
আল উকুদুদ্দুররিয়্যাহ -২.৩২৪
২.
وقال العيني إن إلقاء الرياحين ليس بشيئ
হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহিমাহুল্লাহ বলেন, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা কোনো (ছাওয়াবের) কাজ নয়।
ফায়যুল বারী -২.৪৮৯
৩.ফাতাওয়া মাহমুদিয়া -৫.৫৪৮-৪৯
৪.আহসানুল ফাতাওয়া -১.৩৭৪
৫.কিতাবুন নাওয়াযেল -১.৬৬৭
আমাদের কিছু অবুঝ বেদাতী ভায়েরা উপরোক্ত কাজগুলো করেন আবার তাদের স্বপক্ষে নিম্নের হাদিস দিয়ে দলীল পেশ করেন।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَبْرَيْنِ فَقَالَ ‏”‏ إِنَّهُمَا يُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ أَمَّا هَذَا فَكَانَ لاَ يَسْتَنْزِهُ مِنَ الْبَوْلِ وَأَمَّا هَذَا فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ دَعَا بِعَسِيبٍ رَطْبٍ فَشَقَّهُ بِاثْنَيْنِ ثُمَّ غَرَسَ عَلَى هَذَا وَاحِدًا وَعَلَى هَذَا وَاحِدًا وَقَالَ ‏”‏ لَعَلَّهُ يُخَفَّفُ عَنْهُمَا مَا لَمْ يَيْبَسَا
অর্থাৎ ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুইটি কবরের পাশ দিয়ে গমণকালে বললেনঃ নিশ্চয়ই এই দুই ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এদের কোন বড় ধরনের অন্যায়ের জন্য নয়। অতঃপর তিনি একটি কবরের প্রতি ইশারা করে বলেনঃ এই ব্যক্তিকে পেশাব হতে সঠিকভাবে পবিত্রতা অর্জন না করার কারণে এরপর (দ্বিতীয় কবরের প্রতি ইশারা করে বললেন) এই ব্যক্তিকে পরনিন্দা করে বেড়ানো হেতু আযাব দেয়া হচ্ছে। অতঃপর তিনি একটি কাঁচা খেজুরের ডাল সংগ্রহ করে তা দুই ভাগে বিভক্ত করলেন এবং দুইটি কবরের উপর স্থাপন করলেন এবং বললেনঃ যতক্ষণ পর্যন্ত না এই দুইটি ডালের অংশ শুকাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এদের আযাব কম হবে।
সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ২০
সুনানে নাসাঈ হাদিস নং ৩১ আমরা বলি ঢাল গেঁথে দেওয়া রাসূল সা. এর একক বৈশিষ্ট্য। এটা উম্মতের জন্য অনুসরণীয় না।
যদি হতো তাহলে সাহাবায়ে কেরাম অতি গুরুত্বের সাথে করতেন। কারণ তারা নেক কাজের প্রতি অতি আগ্রহী।রাসূল সা.এর কথা ও কাজ বুঝার জন্য সাহাবায়ে কেরামের আমল ফলো করা আবশ্যক। কেননা তাদের আমল রাসূল সা.এর কথা ও কাজের ব্যাখ্যাস্বরুপ।

এখন আমরা বলব, হে অবুঝ বেদাতী ভায়েরা! তোমরা যদি হাদিসের অনুসরের দাবী করো, তাহলে কবরে ঢাল গেঁথে দিবে ফুল নয়।তবে করব হতে হবে আযাবরতদের নেক্কারদের নয়।কেননা হাদিসটি আযাবরতদের প্রেক্ষাপটে বর্ণিত হয়েছে।
সবচে মজার ব্যাপার হলো, তারা উক্ত আমল করার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করেও কবর নির্বাচন করতে পারবেনা।
—————
আব্দুল্লাহ ইদরীস
সহকারী শিক্ষা সচিব,
জামিয়া দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ, আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি