রবিবার সন্ধ্যা ৬:৪৭, ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং

সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন প্রধানের সুস্থতা কামনা করছি

৬৩২ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

চ্যানেল আইতে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় গাইবান্ধার তৎকালিন জেলা প্রতিনিধি সহকর্মী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন প্রধানের সাথে। বেশ সাদাসিধা ঘরনার হাস্যজ্জল মানুষ তিনি। খুব সহজেই সবাইকে আপন করে নেয়ার অসাধারণ যোগ্যতা ছিল তার। আমন্ত্রন পেয়ে ২০০৩ সালের দিকে তার গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ার ছিমছাম বাড়িটাতে গিয়েছিলাম। তার আতিথীয়তা আর আপ্যায়নে আমি বেশ মুগ্ধ হয়েছিলাম। একসাথে বসে কিছু কর্মপরিকল্পনাও করেছিলাম। সারাদিন তার সাথেই হৈ-হুল্লুর করে কাঠিয়ে দিলাম। সন্ধ্যায় আমাকে গোবিন্দগঞ্জ প্রেসক্লাবে নিয়ে অন্য সহকর্মীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। চা-চক্রের ফাঁকে সব সাংবাদিক মিলে চুটিয়ে আড্ডা দিলাম। সে সময় তিনি ওই প্রেসক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক ছিলেন। অবশেষে ওইদিন রাতেই তাকে আমার বাড়ি আসার আমন্ত্রন জানিয়ে ফিরে এলাম আপন নিবাসে। এর কদিন বাদেই গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি। একেবারে বিছানাগত হবার কারনে সে আর আমার বাড়িতে আসতেই পারলোনা। সারাজীবন এই আফসোসটা থেকেই যাবে।

যে মানুষটা দেশ ও জাতির কল্যানে অবিরাম ছুটে বেরাতেন শহর থেকে গ্রাম-গ্রামান্তরে। যার খুরধার লেখনিতে উঠে আসতো রাষ্ট্র বা সমাজের নানা ভালো-মন্দ, উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার কথা। যার ক্যামেরায় ধরা পরতো সমাজের নানা সমস্যা, সম্ভাবনা ও অসংগতি। সেই মানুষটিই হঠাৎ ২০০৩ সালে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল এবং সাভার সিআরপিতে কয়েক মাস চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে এলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। তার চিকিৎসার ব্যায় মেটাতে গিয়ে সঞ্চিত সব অর্থ খরচ করেও ধার-দেনায় পরে যান। একদিকে দেনার দায় অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় জেকে বসে অর্থাভাব। যে কারনে পরবর্তীতে আর চিকিৎসাও করাতে পারেননি তিনি। এরমধ্যে গত বছরের ২১ নভেম্বর ২য় দফায় মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত রোগে পুনরায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা বলছেন তার দীর্ঘ মেয়াদী উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার সুচিকিৎসায় যে পরিমান অর্থ ব্যায় হবে তা কোনভাবেই নির্বাহ করা সম্ভবপর নয় তার পরিবারের পক্ষে। চিকিৎসার অভাবে দিন দিন তার অবস্থার অকনতিই ঘটছে। বিছানায় শয্যাশায়ী এই মানুষটি এখন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আর অসহায়ের মত স্মৃতি হাতড়িয়ে দুচোখের জল ফেলেন আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।

আমরা কি পারি না এই কলমযোদ্ধার দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতে যারা তার সহকর্মী বা সহযোদ্ধা ছিলাম। বিশেষ করে গাইবান্ধা জেলার সকল সাংবাদিক ও চ্যানেল আইতে কর্মরত ৬৪ জেলার সাংবাদিক এক হয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে তার চিকিৎসার অর্থ যোগান দিতে পারি তাহলে তিনি আবারো সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। আবারো দেশ ও জাতির কল্যানে নিজেকে আত্মনিয়োগ করার সুযোগ পেতেন। বিশেষ অনুরোধ জানাই চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষের কাছে এই অসহায় মানুষটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। এই মানুষটির কল্যানেই আপনাদের সংবাদ বিভাগ কিছুটা হলেও সমৃদ্ধ হয়েছে। নিঃসন্দেহে সে চ্যানেল আই পরিবারেরই গর্বিত সদস্য। সুসময়ে পাশে ছিলেন দুঃসময়েও পাশে থাকবেন সে প্রত্যশা রইল। আর যারা নিজাম সাহেবের শুভাকাঙ্খি ছিলেন তারাও এগিয়ে আসবেন এই আহবানে সাড়া দিয়ে সে বিশ্বাস করতেই পারি। সেই সাথে বিত্তবানদের পাশাপাশি সরকারী-বেসরকারী সহযোগিতা কামনা করছি। সকলের সহযোগীতায় তিনি দ্রুত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে আবারো দেশ ও জাতির কল্যানের মহান এ পেশায় ফিরে আসবেন এমন প্রত্যশা পরিবার, স্বজন ও সকল সহকর্মীদের।

সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন প্রধান বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতিয় দৈনিক পত্রিকায় গাইবান্ধা জেলা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইতে কর্মরত আবস্থায় অসুস্থ্য হয়ে পরেন।

লেখক: শফিউল বারী রাসেল, সাংবাদিক-চ্যানেল আই ও দেশ দর্শন, সভাপতি-জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাব।

Some text

ক্যাটাগরি: খবর, নাগরিক সাংবাদিকতা, মতামত, স্মৃতিচারণ

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি