দেশে গণতন্ত্রের কথা, সুশাসনের কথা সাংবাদিকরাই বলেন। গণতন্ত্র আর গণমাধ্যম একই হাতের এপিঠ আর ওপিঠ। যদি আপনারা গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেন, তাহলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না। সাংবাদিকরা মানবতার পক্ষে, সুশাসনের পক্ষে, গরিবের পক্ষে। আপনারা যদি সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করেন তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলার লোক কমে যাবে। সাংবাদিকদের স্বাভাবিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে।
‘সাংবাদিক নির্যাতন ও নিপীড়ন’ এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটি আয়োজিত মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য এ কথা বলেন ।
তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তার অপরাধ কি ছিল? তার চোখের সামনে যে ঘটনা ঘটেছিল যেটার ছবি তোলাটাই কি তার অপরাধ? ঘটনাটি কি সমাজবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী বা স্বাধীনতাবিরোধী ছিল । মত প্রকাশের অর্থ হচ্ছে স্বাধীনতার চেতনা। আপনি কথা বলতে পারবেন সেটাই স্বাধীনতার চেতনা। আপনি ভোট দিতে পারবেন এটাই স্বাধীনতার চেতনা। যে বা যারা আমার বন্ধু সাংবাদিক সুমনকে আহত করেছে সে বা তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হতে পারে না। যদি আওয়ামী লীগের পক্ষেরও মানুষ হয় তাহলে সে আওয়ামী লীগের ঘরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী নিশ্চিত।
সব সরকারের কথা উল্লেখ করে আবু জাফর বলেন, সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের কোনো ক্ষমতায় অংশগ্রহণ করেন না, অংশগ্রহণ করতে চায়ও না। আওয়ামী লীগ – বিএনপির পক্ষে লেখলেই ভালো আর না লিখলেই কালো। মনে রাখবেন কারো পক্ষ নিয়ে লেখা সাংবাদিকের কাজ নয়? প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরায় সাংবাদিকের কাজ। আমরা সাংবাদিকরা হচ্ছি স্বাধীনতার পক্ষে স্বাধীনতার চেতনার পক্ষে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে।
তিনি আরো বলেন, যে সাংবাদিক যে কোন ঘটনা, যে কারো ঘটনা জীবন বাজি রেখে তুলে ধরেন সবার আগে সেই সাংবাদিকদের নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেন না। সাংবাদিকদের চাকরি হারালে, বেতন না পেলে তাতে কারো কিছু্ই যায় আসেনা। এই হলো আমাদের সামাজিক অবস্থা।
মানববন্ধনে বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটির আহ্বায়ক হেমায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন, বৃহত্তর ফরিদপুর সাংবাদিক ফোরামের যুগ্ন আহবায়ক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার লায়েকুজ্জামান, বাংলাদেশ সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটির সদস্য সচিব ইউসুফ আহমেদ তুহিন, ঢাকাস্থ গোপালগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গণজাগরনের বিশেষ প্রতিনিধি এস.এম বাবুল, সংবাদ প্রতিনিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার নজরুল ইসলাম, বৃহত্তর মিরপুর সাংবাদিক সোসাইটির যুগ্ম-আহ্বায়ক এস এম জহিরুল ইসলামসহ অন্যরা।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা, সাংবাদিকের ওপর আর কোন হামলা বা নির্যাতন হলে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি প্রয়োজনে জেলায় জেলায় মামলা দায়েরের হুমকি দিয়েছন।
শফিউল বারী রাসেল, ঢাকা থেকে।
Some text
ক্যাটাগরি: খবর, নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]