বৃহস্পতিবার রাত ১০:১৪, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৮শে মার্চ, ২০২৪ ইং

দালাল রোগে আক্রান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল

১১০৬ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে দালালদের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। গত ক’দিন আগে এক সন্ধ্যায় সরেজমিনে ইমার্জেন্সি বিভাগে একটি রোগী নিয়ে গিয়ে দেখা যায়, আরো দুজন রোগী বসে আছে। একজনের চোখের উপরে আঘাত, রক্ত ঝরছে। ইমার্জেন্সি বলতে কোনো বালাই নেই। ৭/৮ জন লোক বসে আছে ইমারজেন্সিতে। তারা গল্পগুজব নিয়ে ব্যস্ত।

আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করি, কি ব্যাপার, চিকিৎসা চলছে না কেন? তারা বলে, চিকিৎসা হবে ভাই, ৫০০ টাকা দিলে চিকিৎসা করা হবে। আমি বললাম, ইমার্জেন্সি টিকেট নেওয়া হয়েছে। তাহলে টাকা কিসের ভাই? তারা বলে, এটাই এখানকার নিয়ম। আর তা না হলে বাইরে থেক ওষুধগুলা নিয়ে আসেন। এই বলে একটা চার্ট হাতে ধরিয়ে দিল।

টাকা দিলে ওষুধ ভিতর থেকে মিলে, না দিলে হাতে লম্বা লিস্ট ধরিয়ে় দেওয়া হয়। এত লোক দেখে আমি প্রথমে জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কি হাসপাতালে চাকরি করে? তারা জানায়, হা। তখন আমি আরো অবাক হলাম এটা দেখে যে, খোঁদ ইমারজেন্সি ডাক্তার দালালকে পাশে চেয়ারে বসিয়ে রেখেছে। এসব দেখে ডাক্তার-দালালদের মিলনমেলা আমার কাছে আরো স্পষ্ট হয়। আমার রোগীটা ছিল পা ভাঙ্গার, তাকে পায়ের ব্যান্ডেজ করানোর জন্য আমি আসতে একটু দেরি হওয়ায় তাকে ফুসলিয়ে পাঠিয়ে দেয় প্রাইভেট ক্লিনিকে।

ক্লিনিক এবং প্রাইভেট ডাক্তারকে দেখানো স্লিপ ইমারজেন্সি ডাক্তারকে দেখাতে বলে। আমি এসে জিজ্ঞেস করলাম, কেন তাকে প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো হলো? তখন উত্তরে ডাক্তার বলে, ভালো চিকিৎসার জন্য। আমি তাকে বললাম, আপনারা কি ভালো চিকিৎসা দেন না? উত্তরে উনি আমাকে নানান কথা বোঝাতে চেষ্টা করে। সর্বশেষ প্লাস্টার করানোর জন্য ৮00 টাকা হাকিয়ে বলল, প্লাস্টার করতে হলে টাকাটা দিতে হবে। আমি তখনো আমার পরিচয় দেইনি। তারা পরিচয় পাওয়ার পর আস্তে আস্তে সটকে পড়ে, আর রোগীকে টেবিলের ওপর বসিয়ে রাখে।

পরে কি আর করা, রোগীর বাবা ছিল একজন সাধারণ কৃষক। বাধ্য হয়েই পাঁচশত টাকায় রফাদফা করে রোগীর প্লাস্টার করানো হয়। এখন বোঝেন আমাদের ডিজিটাল সেবা কিভাবে জড়িয়ে পড়েছে ডাক্তার-স্টাফ-দালালচক্রে! সাধারণ মানুষ চায়, এ সকল দালাল চক্রের যথাযথ বিচার হোক এবং যারা দালালদেরকে হাসপাতালে ঢুকতে সহায়তা করে তাদেরও আইন অনুযায়ী বিচার হোক। হাসপাতালে আইডেন্টি কার্ড ছাড়া কেউ যেন হাসপাতাল চত্বরে অযথাই ঘোরাঘুরি করতে না পারে তার জন্য কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত । তাহলেও হয়তো কিছুটা স্বস্তি পাবে সাধারণ রোগীরা।

জাকারিয়া জাকির : সাংবাদিক

Some text

ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি