সোমবার বিকাল ৫:৫১, ৬ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ. ২০শে মার্চ, ২০২৩ ইং

ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যক্তিউদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত চরভিটা বিদ্যালয় রংপুর বিভাগের সেরা

৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যক্তিউদ্যোগে অসহায় শিশুদের জন্য গড়া একটি বিদ্যালয় রংপুর বিভাগের সাড়া জাগিয়েছে।

যেখানে সুশিক্ষা পেয়ে বেড়ে উঠছে হতদরিদ্র পরিবারের কয়েক শ’ গরিব শিশু। আর তখন এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগসহ অনেকে। ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে নিজ উদ্যোগে ব্যতিক্রমী এই বিদ্যালয় গড়ার মূল কারিগর এরফান আলী।

৩নং বকুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর বাজারে চা-পরোটার দোকান করে খুব কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করতেন এরফান আলী। স্বপ্ন দেখতেন নিজেকে ও সমাজকে বদলাতে। তিনি উপলব্ধি করেন, শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে হবে নতুন প্রজন্মকে, আর তাই অজপাড়াগাঁয়ের সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত শিশুদের আলোকিত করতে তিনি উদ্যোগী হন। বাবা নুরুল ইসলামের সহযোগিতায় নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন একটি ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বাচ্চাদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল।

একজন এলাকাবাসী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, আমাদের তেমন টাকা-পয়সা নেই। প্রধান শিক্ষক এরফান আলী যেটুকু সহযোগিতা করেন এটাই যথেষ্ট।’

২০০১ সালে নিজের ৩৩ শতক জমিতে বাঁশ-চাটাইয়ের বেড়া ও টিন দিয়ে গড়ে তুলেন বিদ্যালয়টি। যা পরবর্তীতে ২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি লাভ করে। আর ২০১৩ সালে সরকারিকরণ হয় চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০১ জন।

বিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখার পাশাপাশি বিনোদন বিকাশের জন্য প্রধান শিক্ষক এরফান আলী স্কুলের পাশে তৈরি করেছেন একটি শিশু পার্ক। ক্লাস শেষে শিশু পার্কে শিক্ষার্থীরা বিনোদনের মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করতে পারে। যেখানে রয়েছে রড-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হাতি, হরিণ, জিরাফ, বক, টিয়া পাখি, ময়ূর পাখিসহ খেলাধুলার নানান উপকরণ।

এছাড়াও এর দেয়ালে আঁকা রয়েছে ভাষা শহীদ ও বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি এবং বিভিন্ন মনিষীদের উক্তি ও ছবি। স্কুলটির মূল আকর্ষণ মিড ডে মিল, যা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়িয়েছে অনেক।


২০১৬ সালে প্রধান শিক্ষকের নিজ উদ্যোগে মিড-ডে মিলের বিষয়টি তৎকালীন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। যা সেসময়ে মন্ত্রিপরিষদের একটি চিঠিতে প্রজ্ঞাপন জারি করেন, তার ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা মাসিক সমন্বয় সভায় চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পরিচালিত মিড-ডে মিল আয়োজনের বিষয়টি সারা বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে অনুসরণ করার পরিপত্র প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

গ্রামের অবহেলিত গরিব শিশুদের ঝরে পড়া রোধ ও শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রচলিত রুটিনের বাইরেও শিক্ষার্থীদের সু-শিক্ষায় গড়ে তুলতে বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্লাশ করান প্রধান শিক্ষক এরফান আলী। যে কারণে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বাইরে কোনো কোচিং করতে হয় না। প্রধান শিক্ষক এরফান আলীর ব্যতিক্রমী এমন একটি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকতারা।

হরিপুর উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার সুলতান আলরাজী বলেন, ‘চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি ব্যতিক্রমী স্কুল। উদাহরণ সৃষ্টিকারী একটি স্কুল। এমন উদ্যোগ শুধু ঠাকুরগাঁওয়ে নয় সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।’

হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল করিম বলেন, ‘স্কুলের প্রধান শিক্ষক এরফান আলী তার নিজ উদ্যোগে ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় মিড-ডে মিল চালু করে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।’

গ্রামে অবহেলিত পিছিয়ে পড়া শিশুদের এগিয়ে নিতে এরফান আলীর মতো দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এমন উদ্যোগ নেয়া হলে শিক্ষায় ঝরে পড়া কমে আসবে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিকরা।

২০১৯ সালে উপজেলা, জেলা ও রংপুর বিভাগ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই পদক কমিটি প্রধান শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিত্তিতে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকার রাখার জন্য চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত করে।

নুরে আলম শাহ::ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

Some text

ক্যাটাগরি: খবর

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

Take part in the Finest…

The Fantasy About Ukraine Girls…

The Hidden Treasure Of Costa…

On the web Pokies Modern…

5 Simple Techniques For Portuguese…

The Idiot’s Guide To Sexy…

The Fundamentals Of Turkish Girls…

Short Report Reveals The Plain…

The Laotian Women Trap

The Ugly Side of Dog…