সোমবার দুপুর ১:০৮, ১৩ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ. ২৭শে মার্চ, ২০২৩ ইং

কসবার পানিয়ারূপ আমার প্রথম কর্মস্থল

৯৫৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার অন্তর্গত পানিয়ারূপ গ্রাম আমার জীবনের প্রথম কর্মস্থল। ২০০২ সালে বিশেষ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় ইতি টেনে পানিয়ারূপ গ্রামের কামাল সাহেবদের বাড়ির মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব গ্রহণ করি। মসজিদটি ছিল তখন টিনের। সাথে আমার সহযোগী হিসেবে গিয়েছিলেন হাফেজ ইয়াকুব আলী ইমাম। তাকে আমি আমাদের মাদরাসা থেকে হাফেজ সাহেব (হাফেজ আবুল হাসান- কুমিল্লার হুজুর) হুজুরের কাছে অনুরোধ করে আমার সাথে নিয়েছিলাম। দুজনে সারা গ্রাম চষে বেড়িয়েছি।

এর সাথে আরেকজনের নাম আসে, হাফেজ জাবেদ হোসাইন। তার নিজের গ্রাম এটি। আবার পড়াশোনা করতে ভর্তি হয়েছে আমাদের গ্রামের মাদরাসায়, যেটিতে আমি পড়াশোনা করেছি। শুধু তাই নয়, তখন আমি সে মাদরাসার হেফজ খানার লিডিং দিয়েছি। তাই জাবেদের সঙ্গেও একটা বিশেষ সম্পর্ক গড়ে উঠে। অন্যদিকে আমাকে এখানে আনার মূল কারিগর ছিলেন কামাল সাহেবের বড় ছেলে হাফেজ মাওলানা শাওয়াল সাহেব। তিনিও কুমিল্লার হুজুরের ছাত্র।

গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে দুজনেরই ছিল দারুণ সখ্যতা। আমি মিশতাম কম, তবুও পড়াশোনা ও দায়িত্বে সিনিয়র হিসেবে ছেলে-মেয়েরা আমাকে খুবই সম্মান করতো। মুসল্লিরাও প্রচুর খাতির করতো। কিন্তু আমি ছিলাম খুবই কড়া, যাকে বলে গোয়ার টাইপ ছেলে। কাউকেই ছেড়ে কথা বলতাম না। এখন বুঝি, অনেকক্ষেত্রেই বাড়াবাড়ি করেছি।

বেশি নয়, আমি মাত্র আটমাস ছিলাম। এতেই এটি নিজের গ্রামের মতো হয়ে যায়। তাছাড়া এ আট মাসের ভেতরেই রমজান মাস চলে আসে। দুজন এ মসজিদে তারাবীহ পড়িয়েছি। এ মসজিদের ইতিহাসে সম্ভবত এটিই প্রথম গ্রহণযোগ্য খতমে তারাবীহ। তাই আমাদের বিষয়টা আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। তাছাড়া ইয়াকুব ভাই তো আমি আসার পরও দীর্ঘ বছর সে গ্রামে ছিল এবং পানিয়ারূপ হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে মেট্রিক দিয়েছে।

২০০৫-৬ এর দিকে আবার ক’দিন ছিলাম সে গ্রামে, বিশেষ কারণে। এরপর দীর্ঘ বারো বছর পর আবার সেদিন গেলাম। গ্রামটা দেখতে, গ্রামের মানুষদের দেখতে। এখন রাস্তাঘাট অনেকটা বদলেছে, সাথে গ্রামটাও। চমৎকার একটি গ্রাম। আমার নানাবাড়ি আদমপুর আর খালাবাড়ি ‘রূপা’র পরই এটিকে আমি স্থান দেই।

দীর্ঘ বারো বছর পর যাওয়ায় নতুন আরেকটা প্রজন্ম দেখি, যাদের মক্তবে পড়িয়েছি। এরা এখন দেশের ভবিষ্যৎ। প্রায় প্রত্যেকেই বাইক চালায়। অনেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করছে। সমবয়সীদের অনেকেই বাড়িতে নেই।

মানুষের বয়স বাড়া, বদলে যাওয়া, চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন ঘটতে দেখা এক অত্যাশ্চর্য বিষয়। এসব আমি দেখি, ভাবি, ভালো লগে। একরাত থাকলাম। কথা দিয়ে এলাম, আবারো যাবো, দ্রুতই। যেতেই হবে। কারণ পানিয়ারূপ আমার জীবনের একটা বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। মসজিদের পাশে আম গাছটির নীচে বসে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় বইটা পড়েছিলাম। পড়েছি অনার্স-মাস্টার্সের বাংলা ব্যাকরণ, অথচ আমি পড়েছি মাত্র ক্লাশ টু পর্যন্ত।

অনেকেই তখন জিজ্ঞেস করতো, মেট্রিক বা দাখিল দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছি কি না। বলতাম, প্রশ্নই আসে না। এসব পরীক্ষা দেবার চিন্তা থাকলে এখানে আসতে যাব কেন আর বিনাবেতনে চাকরিই-বা নিতে যাবো কেন? তারা আমার কথার আগা-মাথা কিছুই বুঝতো না। অবশ্য আজো এমনটাই হচ্ছে, পরিবারে, গ্রামে, বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের সঙ্গে। এমনকি নিজ অফিসেও।

জাকির মাহদিন : সম্পাদক, দেশ দর্শন

Some text

ক্যাটাগরি: আত্মজীবনী, সাহিত্য, স্মৃতিচারণ

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

Flirt4free Review: Security, Prices, Models

The Best Chat Room Apps…

Videochat de sexo

Take part in the Finest…

The Fantasy About Ukraine Girls…

The Hidden Treasure Of Costa…

Se corre en su cara

On the web Pokies Modern…

5 Simple Techniques For Portuguese…

The Idiot’s Guide To Sexy…