সোমবার রাত ১:৩৯, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

কতো বছর পিছিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা ও মানসিকতা?

৫৯২ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আমাদের বর্তমান জেনারেশনের একটা বড় অংশ সালমান মুক্তাদির, তাহসিনেশন, তিশা আর এয়ারটেলের নাটক নিয়ে ব্যাস্ত। আমরা আবাহনী, মোহামেডান নিয়ে মারামারি করি। ক্যাম্পাস নিয়ে মারামারি করি। কনসার্টের টিকেট নিয়ে ফাইট করি। যতো সহজে আমরা বিভিন্ন চ্যাটিং এ্যাপসের নাম বলতে পারবো, ততো সহজে আমরা কোন বৈজ্ঞানিক কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে পারবো না।

আমাদের জীবনের একটা বড় অংশ কাটে ইউটিউবের কিছু থার্ডক্লাস ভিডিওতে চোখ রেখে। জীবনের আরেকটা অংশ কাটে রিলেশনে কী করেছি আর কী করি নাই এসব ভেবে। কেন আমাদের নিজস্ব কোন ব্রান্ড এখনো সেভাবে উঠে আসে নাই, কেন আমরা নিজেদের টেকনোলজি পাই না, কেন আমাদের সেনসেশন শুধু ইউটিউবাররাই হয়, কেন শুধু রোস্টিং ভিডিওতেই আমাদের রুচি? তার একটা সংক্ষিপ্ত উত্তর হতে পারে আজকের এই লেখাটা ।

কেন? আমরা কি পারি না সাউথ কোরিয়ার মতো নিজেদের প্রযুক্তি দিয়ে ব্যাটেল ট্যাংক বানাতে? চীনের মতো জনবহুল দেশেও তারা আজ মহাদেশে চীন পণ্য দিয়ে সয়লাব করেছে। পাকিস্তানী এটম বোমা বানানোর স্বপ্ন দেখেছিল ১৯৭২সালে। যা তারা ১৯৯৮ সালে বাস্তবায়িত করে। এটম বোম বানিয়েই ছেড়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের নিউক্লিয়ার সাইন্সে উন্নত করছে। উন্নত করছে গবেষণায়। চীনের সাথে মিলে তৈরি করছে ফাইটার জেট। তারপর যদি তাকান আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে, দেখবেন ভারতীয় সিরিয়াল নিয়ে আমরা হাজার হাজার ট্রল করি। তবে এটা মেনে নিতেই হবে, তাঁদের ইয়াং জেনারেশন আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। ভারতীয় মুভিগুলো দেখলে খেয়াল করবেন এরা সব সময় নিজেদের ব্রান্ডের গাড়িগুলোকে (মাহেন্দ্র, টাটা, মারুতি) প্রমোট করে। পৃথিবীর সবগুলা দেশের চিন্তাভাবনা ডিফেন্সিভ। তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের আপডেট করছে।

আফসোস… আমাদের দেশে লুলভিডিও মেকাররা যে ধরনের এটেনশন পায়, তার এক অংশও এই মেধাবীরা পায় না। যদি পেতো তবে স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এসে আমাদের গল্পটা হয়তো একটু অন্যরকম হতো।

এবার আমাদের দিকে তাকান। স্বাধীনতার এতোবছর কেটে গেলো, এখনো আমদেরকে ১৯৭৩ সালে মিশরের উপহার দেয়া T-54 মডেলের ট্যাঙ্ক সংস্কার করে চলতে হয়। এখনো সেকেন্ডহ্যান্ড সাবমেরিন কিনতে হয় । ভার্সিটির র‍্যাঙ্কিং নিয়ে মারামারি হলেও ঠিকই পদ্মা সেতু বানাতে ইঞ্জিনিয়ার আনতে হয় বাইরে থেকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেইন্টেইন করতে অন্যদেশের পায়ে ধরতে হয়। ভারতের হাতে-পায়ে ধরেও তিস্তার পানি পাই না। বেশি কথা বললে তারা আবার সীমান্তে গুলি করে মানুষ মারে। পতাকা নিয়ে বেকুব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি আমরা ।

আমাদের নিজেদের ব্র্যান্ড দরকার। আমাদের চিন্তাভাবনা পাল্টাতে হবে। নিজেদের আপডেট করতে হবে। তাই আজই কম্পিউটার সাইন্সের মেধাবী ছেলেটাকে ডেকে আনুন। তাকে সুযোগ দিন। দেখুন, সে কী করে দেখায়। যে ছেলেটা ড্রোন বানাচ্ছে, তাকে একটু পরিচর্যা করুন। বলা যায় না, এই ছেলের হাত দিয়েই নতুন ফাইটার প্লেনের নকশা আসতে পারে। বিসিএস করে যে মানুষটা পাগল হয়ে যাচ্ছে, তার মেধাকে অবহেলা করবেন না । হতে পারে এই মানুষটা ভবিষ্যতে ওয়ার্ল্ডক্লাস ডিপ্লোমেট হবে ।

মাদ্রাসার ছেলেটাকে ‘ইংরেজি পারে না’ দোহাই দিয়ে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করবেন না। তাকে সুযোগ দিন। দেখুন সে কী করে দেখায়। পলিটেকনিকের যে ছেলেটা মোটর নিয়ে কাজ করে, তাকে পরিচর্যা করুন। ইন ফিউচার ভালো কিছুই করে দেখাবে।

আফসোস… আমাদের দেশে লুলভিডিও মেকাররা যে ধরনের এটেনশন পায়, তার এক অংশও এই মেধাবীরা পায় না। যদি পেতো তবে স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এসে আমাদের গল্পটা হয়তো একটু অন্যরকম হতো।

লেখক : সুমন আহাম্মেদ

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি