শুক্রবার সন্ধ্যা ৬:৪৯, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং

সরাইলে মলাইশ-শাহজাদাপুর সড়ক বেহাল: সীমাহীন জনদুর্ভোগ

৪৯৭ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের মলাইশ-শাহজাদাপুর সড়ক দীর্ঘদিন ধরে ৪ কিলোমিটার সড়কটির জন্য ১৮’শ পরিবার সীমাহীন জনদুর্ভোগে ভ‚গছেন। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন। এরপর বছরের প্রায় সাত মাসই পানি থাকে খোয়ালিয়ার খালে। এখানের ব্রিজ ও সড়কের স্বপ্ন দেখেই সময় পার করছেন ওই জনপদের মানুষগুলো। সরকারি সেবা বঞ্চিত হচ্ছে বিশ সহ¯্রাধিক লোক। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত যানবাহন। বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি আটকে থাকে কয়েকদিন। ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে যান চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। যানবাহনের যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। অনেকটা ইঞ্জিনের শক্তি দিয়ে যুদ্ধ করেই যাচ্ছেন চালকরা। আবার কাঁদায় আটকে যাচ্ছে। চালকের সাথে নিরুপায় যাত্রীরাও। জুতা খুলে যাত্রীরা নেমে পড়ছেন। প্যান্ট উপরে তুলে লুঙ্গি কাচা দিয়ে অটোরিকশাকে ঠেলে পার করছেন। আর মহিলা যাত্রীরা অনেক কষ্ট করে পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ইউপি সদস্য মোঃ আজহার মিয়া জানান, সড়কে এমন চিত্র নিত্যদিনের। এভাবেই আমরা চলছি। শাহজাদাপুর গ্রামের ঠাকুর চান সরকারের স্ত্রী নিত্য রানী সরকারের প্রসব বেদনা ওঠে। চিকিৎসার উদ্যেশ্যে রওনা দেয় জেলা শহরের দিকে। কিন্তু পথ তো আর এগুচ্ছে না। বার বার কাঁদায় ফেঁসে যাচ্ছে অটোরিকশা। একটু পরপর ধাক্কা। ব্যাথায় চিৎকার করছে নিত্য রানী সরকার। ঘড়ির কাটাও থামছে না। রোগীর স্বজনদের টেনশন বাড়ছেই। কারণ, সময় চলে গেলে সবই শেষ। এরই মধ্যে মাঝ পথে বাচ্চা প্রসব হয়ে যায়। মা সহ নবজাতক(ছেলে)কে নিয়ে যায় হাসপাতালে। চিকিৎসক জানিয়ে দেন বিলম্বের কারণে নবজাতকটি আর বেঁচে নেই। ওই সড়কে এমন মর্মান্তিক ঘটনা মাঝে মধ্যে ঘটছেই। কখনো মা কখনো নবজাতক লাশ হচ্ছেই। গত এক বছরে এ সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ৩ জন। সিরিয়াস রোগীও প্রাণ হারাচ্ছেন। বাড়িতে লাশ নিয়ে যাওয়ার কষ্ট ও সীমাহীন। খোয়ালিয়ার খাল পাড়ে গিয়ে দেখা যায় প্রায় দেড়শত গজ জায়গায় পানি। বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ ও শিশুরা গ্রাম থেকে নৌকায় পারাপার হচ্ছে। ভাড়া জনপ্রতি ৫ টাকা। ওপার থেকে গ্রামের চকবাজার পর্যন্ত ১ কিলোমিটার পথ যেতে হয় পায়ে হেঁটে। বছরের ৭ মাসই এখানে নৌকা চলে। রাত দশটার পর গ্রাম থেকে কোথাও যাওয়া বা আসার চিন্তা করাই দুরহ বিষয়। গ্রামের বাসিন্ধা মোঃ জয়নাল মিয়া ও মোঃ ফরিদ মিয়া আক্ষেপের সাথে বলেন, নির্বাচনের আগে সবাই বলে রাস্তা হয়ে যাবে। পরে আর খোঁজ নেয় না। অটোরিকশা চালক মনির মিয়া (৩৫) বলেন, এ সড়কে পেটের জন্য গাড়ি চালায়। রোগী নিয়ে যেতে পারি না। বৃষ্টির পরে গাড়ি চালালে রাতে ঘুমাতে পারি না। সারা শরীর প্রচÐ ব্যাথা করে। সরকারী কর্মকর্তা, প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মর্তারগণ একবার আসলে দ্বিতীয়বার আসতে চাই না। জনগুরুত্বপূর্ন এই সড়কটি শিগগিরই সংস্কার করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

শেখ মো. ইব্রাহীম, সহ-সম্পাদক

Some text

ক্যাটাগরি: খবর

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি