শুক্রবার রাত ১২:৫৮, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

ব্রাহ্মণবাড়িয়া গোকর্ন ঘাটে মাদক ও চুরি বন্ধে পুলিশ সুপারকে খোলাচিঠি

৬৬৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রামের নাম গোকর্ন ঘাট। তিতাস পাড়ে অবস্থিত এই গ্রামটিতেই জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী উপন্যাসিক “তিতাস একটি নদীর নাম” উপন্যাসের রচয়িতা অদ্বৈত মল্ল বর্মণ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার ৭ নং ওয়ার্ডের ছয় হাজার ভোটারের এই গ্রামটিতে স্থানীয় অস্থানীয় মিলিয়ে প্রায় ১১০০০/ হাজার মানুষের মানুষের বসবাস রয়েছে। ১২টি মসজিদ, পুরুষ ও মহিলার ৪টি মাদ্রাসা, একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি কিন্ডারগার্টেনসহ জেলার শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র লঞ্চ ঘাট ও সকল সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাপূর্ণ আমাদের প্রাণের গ্রামটি সময়ের বিবর্তনে এখন মাদকসেবী, বিক্রেতা ও চোরদের স্বর্গে পরিণত হয়েছে।

সামাজিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায়  সমাজ বিনির্মাণ কল্পে কেউ আর এগিয়ে আসতে চায় না । ফলে দ্রুত অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলছে। এক সময় যখন সামাজিক অবস্থা ভাল ছিল, গ্রাম্য শালিসে সামাজিক অপরাধে জড়িতদের বিচার করা হত। বিচারের আওতায় ছিল মাদক বিক্রেতারাও।

কিন্তু সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে যাওয়ার সুযোগে যে যার মত করে অপরাধ করে যাচ্ছে নির্ভয়ে। বর্তমান সময়ে গত ৫/৬ বছরে আমাদের গ্রামটিতে আশংকাজনক হারে বাড়ছে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবীদের দৌড়াত্য । সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চুরি ছিনতাই সহ নানান অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডও। প্রতিদিনই গ্রামের কোন না কোন বাড়িতে চুরি হচ্ছেই । বিশেষ করে মোবাইল চুরি এখন নিত্যদিনকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে । আশ্চর্যজনক হলো এর থেকে পরিত্রাণলাভ কল্পে কারোই কোন উদ্যোগ নেই।। ফলে মাদকের ভয়াল ছোবলে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

সেই সাথে মাদকের টাকা জোগাড় করতে মরিয়া তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে চুরিসহ অসামাজিক কাজে, যা পুরো সমাজ ব্যবস্থার জন্য হুমকী হয়ে দেখা দিয়েছে। আজ রাত ৩ টা ২০ মিনিটে অর্থাৎ ১লা অক্টোবর ২০১৯ ইং রোজ মঙ্গলবার আমার দোকানে চুরের হানা পড়ে একটা তালা ভেঙ্গে যখন দিত্বীয় তালাটি ভাঙ্গতে শুরু করে তখন তালা ভাঙ্গার শব্দে আমার স্ত্রীজেগে উঠে তাৎক্ষণিক জানালা মেলে তাকাতেই দেখে ২ জন চুর আমার দোকানের দরজায় লাগানো তালা ভাঙতেছে। তখন আমাকে ডাক দিলে আমি উঠে বেরুতে বেরুতে চুরেরা পালিয়ে যায় ।

চারিদক খোজাখুজি করলে তাদের পাওয়া যায়নি, সকালে উঠে শুনি আমার পাশের ৩ বাড়িতে চুরেরা হানা দিয়ে ২ বাড়ি থেকে চুরি করে ৭ টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়, যেমন জলিল কাকার ঘর, আবু ইউসুফ ভাইয়ের ঘর থেকে ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। ঠিক একই ভাবে তারা প্রতিদিন গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায় ইতিমধ্যে ঐ সমস্ত কাজের যারা ধরা পড়েছে আমরা দেখতে পাচ্ছি তাদের সবাই ইয়াবা আসক্ত আবার মাঝে মাঝে দেখেছি যারা ছাড়িয়ে নিতে এসেছে তারাও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।

সুতরাং যে প্রত্যেকটা চোরের সাথে এলাকার মাদক ব্যবসায় জড়িত এবং মাদক ব্যবসায়ীরা যারা অতি মুনাফালোভী যারা অল্প দিনে কোটিপতি বনে যাওয়ার চিন্তা চেতনা নিয়ে মাদকের ব্যবসা করে যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তারাই এর জন্য দায়ী কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সারাদেশে যখন মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চলছে, তার ব্যতিক্রম শুধু আমাদের গ্রামে অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গোকর্ণ ঘাট গ্রাম। এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সম্পর্কে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ তাদেরকে চিনলে জানলেও যেন জানে না শুধু প্রশাসন যার কারণে তারা এখন মাদকের ব্যবসা নির্বিঘ্নে করার যেন একটি অবাধ ভূমি পেয়েছেন।

সুতরাং এখান থেকে তাদের ফিরে আনতে হলে প্রশাসনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এমতাবস্থায় আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আনিসুর রহমান স্যারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনার প্রতি গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আমি বিনীত অনুরোধ করছি। কারণ আমরা আপনারা এবং আমরা সবাই মিলে একটি সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে।

মাদকমুক্ত একটি সুন্দর ও সুস্থ সমাজ আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য খুবই দরকার। অন্যথায় আমাদের জন্য চরম অন্ধকার অপেক্ষা করছে যেহেতু আমার গ্রামটি আপনার কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ৩ কিলোমিটার পশ্চি।।  এবং  আপনার নাগালের মধ্যেই গ্রামটি। তাই আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি আমাদের গ্রামে যে সমস্ত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা আছে তাদেরকে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করুন। এবং যারা সেবি এবং তাদেরকে ও আইনের আওতায় আনার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি । তা না হলে চুরিসহ অসামাজিক কাজ আমাদের সমাজে বেড়েই যাবে । যা কিনা পুরো গ্রামের হাজার হাজার মানুষের জন্য দুঃসংবাদ। আর বিশেষ করে যারা এসবে যুক্ত তারা কিন্তু শতভাগ সত্য যে তারা শুধু ই ইয়াবার টাকা যোগাড় করতেই মূলত চুরি ছিনতাইসহ নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে ।

সুতরাং তাদেরকে নির্মূল করতে হলে মাদক ব্যবসায়ীদের কে নির্মূল করতে হবে । যুবসমাজ যারা রয়েছে তারা যখন মাদক না পাবে তাহলে হয়তো আস্তে আস্তে তারা এর থেকে ফিরে আসতে পারবে ফলে তাদের মধ্যে চুরি ছিনতাই রাহাজানি অসামাজিক কর্মকাণ্ডের একটা চেতনা বিরাজ করছে সেটা হয়তো তাদের মন থেকে চলে যেতে পারে ফলে তারা আলোর পথে ফিরে আসতে পারে। এবং গ্রামের মানুষ শান্তি ফিরে পাবে বলে আমি আশা করি।

সুতরাং আপনার কাছে আমাদের গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে এইটুকু অনুরোধ । শীঘ্রই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আমাদের গ্রাম থেকে মাদক মুক্ত করুন গ্রামটি মাদকমুক্ত হলেই কেবল গ্রাম থেকে চুরি ছিনতাইসহ নানা অসামাজিক দিয়ে কাজ গুলো রয়েছে সেগুলো আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যাবে।

তাই আমি আবারও আমার গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট বিনীত আরজি রাখছি আপনি আপনার নিজ উদ্যোগে একটি মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করুন যাতে করে কোন লাগব বোয়াল, এবং যারা মাদক বিক্রি করছে এবং বিক্রেতাদের যারা লালন পালন করছে তাদের কেউ যেন এর থেকে রেহাই না পাই ।

যদি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া যায় তাহলেই সমাজ থেকে চুরি ছিনতাই বন্ধ হবে অন্যথায় আমাদেরকে চরম অন্ধকারে ধাবিত হতে হবে। তাই আপনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ প্রধান হিসেবে আপনার কাছে আমরা বিনীত আর্জি রাখছি।

পরিশেষে আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি এবং একটি সুন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আপনার সহযোগিতা কামনা করছি আপনি ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এই প্রত্যাশা রইল ।

গ্রামবাসীর পক্ষে
মোঃ মাহফুজুর রহমান পুষ্প
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
মাদকমুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া চাই
গোকর্ণ ঘাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Some text

ক্যাটাগরি: খবর, চিন্তা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি