বৃহস্পতিবার রাত ৩:৪৪, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাসপাতালগুলোতে

৬২৭ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হলেই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় মায়েদের। অফিস, শপিং মল কিংবা হাসপাতালের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার না থাকার কারণে শিশুদের দুধপান করানোর সময় মায়েদের প্রতিনিয়ত ‘অবাঞ্ছিত দৃষ্টির’ শিকার হতে হয়। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়েদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে গিয়ে। জেলার বেশিরভাগ হাসপাতালেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার নেই। এর ফলে হাসপাতালগুলোতে গিয়ে শিশুকে দুধপান করানো নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে মায়েদের।

শিশুর জন্মের প্রথম ৬ মাস ব্রেস্ট ফিডিংয়ের সময়। এই সময়টাতে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ানো শিশুর জন্য ক্ষতিকর। মূলত শিশুর জন্মের পর অনেক সময় মা ও শিশুর শরীরে নানা ধরণের জটিলতা দেখা দেয়। আর সেজন্য ছুটতে হয় চিকিৎসকের কাছে। তাই প্রতিটি হাসপাতালেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার থাকা প্রয়োজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নয়টি উপজেলায় দেড় শতাধিকেরও বেশি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর সিংহভাগই বেসরকারি। প্রতিটি হাসপাতালেই শিশু ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে ভিড় লেগে থাকে মায়েদের। সেখানে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় মা ও শিশুকে। অপেক্ষার এই সময়টা মায়েদের জন্য সবচেয়ে বিরক্তিকর। এর কারণ হলো শিশু দুধের জন্য কান্না করলে সবার সামনেই দুধ পান করাতে গিয়ে ‘অবাঞ্ছিত দৃষ্টির’ শিকার হতে হয় মায়েদের। শুধুমাত্র জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে একটি করে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার রয়েছে। সেগুলোতে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য লাইন লেগে থাকে মায়েদের।

চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুকে বুকের দুধ পান করানো বা ব্রেস্ট ফিডিংয়ে শিশুদের যেমন উপকার হয় তেমনি মায়েদের জন্যও এটি বেশ উপকারী। ব্রেস্ট ফিডিং করানোর ফলে মায়েদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে আসে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট ফৌজিয়া আখ্তার বলেন, শিশু জন্মের পর ৬ মাস পর্যন্ত আমরা এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং করতে বলি। এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং বলতে শিশুর যখন দরকার তখন তার মায়ের বুকের দুধ খাবে, বাইরের কিছুই খাবে না। এই ৬ মাসে মা ও শিশুর যে কোনো শারীরিক সমস্যা হতে পারে। আর সেজন্য চিকিৎসকের আছে আসতে হবেই।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকের কাছে আসলে লম্বা সময় নিয়ে আসতে হয়। এই সময়টাতে শিশুকে কয়েকবার ব্রেস্ট ফিডিং করাতে হয়। সেজন্য হাসপাতালগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার থাকা দরকার। যাতে করে সেই কর্ণারে মা তার শিশুকে নিরাপদে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন। ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ফলে মায়ের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।

ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার নিয়ে লজ্জাবোধ করায় মিডিয়ায় খোলাখুলিভাবে কথা বলতে না চাইলেও হাসপাতালগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার স্থাপনের ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মায়েরা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম বলেন, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার রয়েছে। বেসসরকারি হাসপাতালগুলোতেও যেন মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার করা হয় সেজন্য আমরা হাসপাতাল মালিকদের সংগঠনগুলোকে চিঠি দেব।

আবির হোসাইন জসিম : স্পেশাল  করেসপন্ডেন্ট, দেশ দর্শন

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি