সোমবার রাত ২:১৭, ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৮শে মে, ২০২৩ ইং

যে হাসপাতালে অসুস্থ্ রোগীর প্রবেশাধিকার নেই

৭৭৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

“রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ”- এই মানবিক শ্লোগানে পরিচালিত হচ্ছে দেশের প্রতিটি কারাগার। যদি শ্লোগানের সাথে বাস্তবতার মিল খোঁজে পাওয়া যেত, তাহলে একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা যেত, যে কোন আসামী জেল থেকে বেরুনোর পর সে নিশ্চিত আলোকিত মানুষ হয়েই বেরুত। কিন্তু শ্লোগানের বাস্তবিক কর্মকান্ড ভেতরে না থাকায় – একজন অপরাধী দীর্ঘ দিন জেল খেটে বেরুনোর পর ও তার মাঝে স্বাভাবিক চরিত্র বহাল থাকে না, অনেক ক্ষেত্রে একজন জেল ফেরত অপরাধীর মাঝে অপরাধের প্রবণতা আরো বেশী বৃদ্ধি পায় ।

আমার শিরোনামটি শুনে হয়ত অনেকেই ভাবছেন এমন আজব হাসপাতাল কি আদৌ কোন দেশে আছে যেখানে – অসুস্থ্য রোগীর প্রবেশাধিকার নেই । হ্যাঁ এমন শতাধিক হাসপাতাল রয়েছে আমাদের দেশের প্রতিটি জেলায়! প্রতিটি জেল খানায়। রাজনৈতিক মামলায় ২ দফায় ৭৭+১৯= ৯৬ দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে বন্দি ছিলাম। যে কারাগারে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় গাঁজা, ইয়াবা,সহ অন্য সব মাদক। অপরাধ যেখানে নিয়মিত নিয়মে পরিণত।

একজন মানুষ সে যত বড়ই অপরাধী হোক না কেন, প্রতিটি রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব রয়েছে তাকে আইনি লড়ায়ের সুযোগ ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা । পৃথীবীর যে কোন মানুষকেই যদি প্রশ্ন করা হয় – হাসপাতাল কিসের জন্য নির্মাণ করা হয়। একবাক্য সবাই বলবে – অসুস্থ্য মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য । এখানে কারো দ্বীমতের কোন সুযোগ ও নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারা হাসপাতাল যে হাসপাতালে কোন অসুস্থ্য আসামীকে জাগয়া দেওয়া হয় না। এমতাবস্থায় যে কারো মনেই প্রশ্ন আসতে পারে -হাসপাতালে অসুস্থ্য রোগীদের জায়গা না হলে কারা থাকে এই আজব হাসপাতালে ? হ্যাঁ কেউ না কেউ তো থাকেই তবে কোন অসুস্থ্য মানুষ নয়।

যারা এখানে থাকে তাদের অনেকেই টাকা ওয়ালা আসামী / আর বাকিরা মাদক সম্রাটরা -বা ইয়াবা ব্যবসায়ী য়ারা রাতারাতি অঢেল টাকা কামায় করে থাকে তারাই থাকে। হাসপাতালে থাকতে হলে প্রতি মাসে আপনাকে দিতে হবে নগদ ৬০০০/ টাকা তা ও হাসপাতালে ঢুকার আগেই পরিশোধ করা লাগবে। এবার আপনার জামিন ১ দিন পর হয়ে গেলে গেলে ও ৬০০০/ আর এক মাস থাকলে ও ছয় হাজার টাকা গুনতে হবে, যে কোন আসামীকে। অর্থাৎ টাকা ছাড়া সেখানে শ্বাস নেওয়া ও যায় এরই নাম জেল খানা, প্রতিটি স্থরে স্থরেই এখানে ঘুষ লাগে, টিকিট কেটে বন্দির সাথে কথা বলতে ও জেল খানার ভেতর থেকে ধেয়ে আসা ঘুষের কাটি, যার মাথায় লাগানো রাবারে ৫০/১০০ টাকা ঘুষ বেধে দেওয়া লাগবেই। অন্যথায় আপনার সামনেই বন্দিকে টেনে সাক্ষাত কক্ষ থেকে বের করে দিবে দায়িত্বরত কারারক্ষী ও তাদের সহযোগি আসামীরা ।

৫০৪ জন বন্দির ধারন ক্ষমতা সম্পূর্ণ কারাগারে প্রায় ১৫০০ আসামী থেকেই যায়। যাদের অনেকেই মারাত্বক অসুস্থ্য হলে ও হাসপাতালে শুয়ে চিকিৎসা নেওয়ার ভাগ্য হয় না। আমার দেখা একজন কিডনী সমস্যায় আক্রান্ত রোগী, সারা শরীরে পানি জমে গিয়েছিল দাঁড়িয়ে থাকতে পারত না, জেলের ভেতর মাঠেই বসে থাকতে। নিজে গোসল করতে ও পারত না, একজন বয়স্ক মানুষকে দেখতাম প্রায় ওনাকে পানির হাউজে পাড়ে বসিয়ে গোসল করিয়ে দিতেন, মানবতাকে একজন বয়োবৃদ্ধ যখন বাঁচানোর চেষ্টা করতেন, আর জেল কর্তৃপক্ষ অসুস্থ্য রোগীকে হাসপাতালে ঢুকতে না দিয়ে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লংঘন করে চলছে ।

জেল খানায় রয়েছে ডিসি ফাইল, জজ ফাইল, ডি আই জি ফাইল সহ নানান ফাইল, অর্থাৎ জেল খানা পরিদর্শনে যখন যে উচ্চপদস্থ কর্মকতা আসেন ঐদিন ওনার পদের নামেই ফাইলের নাম করন হয়ে যায় । যখন উচ্চপদস্থরা পরিদর্শনে আসেন তখন কারা হাসপাতাল থেকে ভাড়াটিয়া আসামীদের ঘন্টা দেড়েকের জন্য বের করে দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ১০/১২ জন অসুস্থ্য মানুষকে হাসপাতালে এনে শুয়িয়ে রাখা হয়। পরিদর্শন শেষ হলেই আবার হাসপাতাল থেকে অসুস্থ্যদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চরম অমানবিক ঘুষ দূর্নীতি যখন চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের ভেতর – তখন ও জেল খানার কপালে দোল খাচ্ছে- “রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ।”

লেখক :
মোঃ মাহফুজুর রহমান পুষ্প
সাধারণ সম্পাদক
মানব কল্যাণ নবীণ সংঘ
গোকর্ন ঘাট- ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Some text

ক্যাটাগরি: খবর, নাগরিক সাংবাদিকতা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

The Disadvantages of totally free…

Why I Bought TWO Persian…

Syrian Girl for Dummies

The Simple Truth About Russian…

New Report Shows The Reduced…

Azerbaijan Girls – Five Popular…

5 Closely-Guarded Bangladesh Women Strategies…

The New Fuss About Panamanian…

Simply How Much You Should…

The Thing You Need To…