সোমবার রাত ২:৩২, ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৮শে মে, ২০২৩ ইং

হতাশার জয়গান

৮৫৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

মানবজাতি এখন ছটফট করছে প্রাচুর্যের দীনতায়। মানুষ প্রযুক্তিতে এগিয়েছে অনেক দূর- পিছিয়ে গেছে মূল্যবোধে। মানুষ মূল্য উৎপন্ন করছে বাহ্যজগতে। অন্তর্জগতের প্রতি তার উদাসীনতা প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। তাই অর্থ আছে শান্তি নাই, প্রাচুর্য আছে স্বস্তি নাই। বিদ্যা আছে বুদ্ধি নাই। তর্ক আছে, জ্ঞান নাই। কাম আছে, প্রেম নাই। তাতে কি? প্রত্যেকেই প্রকাশ করে চলেছে, ‘আমি প্রেমী, আমি জ্ঞানী, আমি ধ্যানী’। প্রত্যেকের দৃষ্টিতেই ‘তার চরিত্র, ফুলের মতো পবিত্র’। ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। ভাগ্যিস নন্দ ঘোষ ‘নন্দ নন্দন’কে লালন-পালন করেছিলেন। তা না হলে পৃথিবীতে কেবল ‘কংস মামা’ আর তার অনুচররাই থাকতো!

নন্দ নন্দন তো অধর্ম নাশ করে ধর্মের স্থাপনা করে গেলেন। অধর্ম নাশ হলো কি? প্রতিদিন অধর্মের পাল্লা ভারী হচ্ছে। কারণ, ভোগবাদী সভ্যতার মধ্যেই রয়েছে অসভ্যতা; সম্পদের মধ্যেই রয়েছে দারিদ্র্য, পাওয়ার মধ্যেই রয়েছে হারানোর ভয়। অধর্ম নাশ হবেও না কোনো দিন, যদি নিজের জীবনে দুর্যোধনের কর্তৃত্ব চলে। জীবনে যখন কুরুক্ষেত্র শুরু হয়- রিপুগুলোকে পরাজিত করতে যখন কোনো মমতা থাকে না, যখন জোড়াতালির উপর ভয়ানক ঘৃণা উপস্থিত হয়, যখন সংসারের উপর চরম হতাশা উৎপন্ন হয় ঠিক তখন থেকেই ধর্মের প্রারম্ভ। সমৃদ্ধির উপর হতাশা থেকে উদ্ভাসিত হয় সত্য। সংসারের প্রতি হতাশা না আসা পর্যন্ত জ্ঞানের প্রতি তৃষ্ণা জন্মে না।

বাস্তবেও জীবনে আশার কোনো স্থান নেই। পৃথিবীতে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে জীবন নিরাপদ। যতক্ষণ জীবন আছে ততক্ষণ শুধু জীবন নাশের সম্ভাবনাই আছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, যেদিকে বিশৃঙ্খলার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, সময় সে দিকে যায়। টেবিলের উপর রাখা গ্লাসটি একদিন ভাঙবে। কখনোই ভাঙা গ্লাস মেঝে থেকে টেবিলে উঠে জোড়া লাগবে না। যা এখনো ভাঙেনি তা অচিরেই ভাঙবে। বৃদ্ধ কখনো শিশু হবে না। শিশু বৃদ্ধ হবে। যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ। কারণ জীবনের গতি মৃত্যুর দিকে। মানবজাতি প্রগতিশীলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি ধ্বংসের দিকে। এটি যার উপলব্ধিতে আসে কেবল সে-ই এগিয়ে যেতে পারে জ্ঞানের দিকে। প্রেমের দিকে। আশার ডোবায় ডুবে জ্ঞানের কথা বলা হালকা চুলকানি মাত্র।

সবাই আশা করে- হতাশা কেউ করে না। হতাশা আসে। সুতরাং হতাশাই প্রাকৃতিক। আশা মেকী- জীবনের প্রমত্তা নদীতে বালির বাঁধ- এক ধাক্কাও সহ্য করতে পারে না। এখনও যে বাড়ি-গাড়ি-নারী ও প্রাচুর্যের আশায় বিভোর সে অনেক পিছিয়ে আছে। বলাবাহুল্য, চরম হতাশায় যে আচ্ছন্ন, জ্ঞানের পথে সে অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

আমরা শুধু আশা করতে পারি যে, হতাশা আসবে। জ্ঞান প্রাপ্তিরও কোনো আশা নেই। যারা জ্ঞানের জন্য ধ্যান করতে চায় তারা দিবানিশি ধ্যান করুক। যারা গুরুর দাসত্ব করতে চায়, নিবানিশি তা করুক। অন্যথায় আশা থেকে যাবে যে! যত বেশি দাসত্ব করবে, হতাশাও আসবে তত দ্রুত। সুতরাং সর্বশক্তি লাগিয়ে দাও ধ্যানে। করো গুরুর সেবা। বিলিয়ে দাও সব। তাহলে হতাশা আসবে দ্রুত। যেদিন হতাশা আসবে সেদিন জ্ঞানের জন্য আর আশা করতে হবে না। হতাশার গর্ব থেকে জন্ম নেবে জ্ঞানের বিরাট শিশু।

সংসারের কষাঘাতে হৃদয় জর্জরিত হোক, প্রবঞ্চনায় জীবন অবলম্বনশূন্য হয়ে যাক, দুর্ভেদ্য অন্ধকার নেমে আসুক জীবনের বধ্যভূমিতে। তবেই দেখা দেবে আলোর ইশারা। অ-তে অন্ত। আ-তে আরম্ভ। যার অন্তই হয়নি তার আরম্ভ হবে কোত্থেকে?

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

The Disadvantages of totally free…

Why I Bought TWO Persian…

Syrian Girl for Dummies

The Simple Truth About Russian…

New Report Shows The Reduced…

Azerbaijan Girls – Five Popular…

5 Closely-Guarded Bangladesh Women Strategies…

The New Fuss About Panamanian…

Simply How Much You Should…

The Thing You Need To…