সোমবার রাত ২:৩৪, ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৮শে মে, ২০২৩ ইং

গল্প

৬৮৫ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আল্লাহর একজন দাসীর সিজদাবনত অবস্থায় মৃত্যু ।

আজ আমাতুল্লাহ’র বিয়ে। পাশের গ্রামের উচ্চশিক্ষিত, টগবগে এক যুবকের সাথে মহা-ধুমধামে বিয়ের আয়োজন চলছে । মায়ের অবদানে একবারে ছোট বয়স থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত মাদরাসায় যাতায়াত করেছে আমাতুল্লাহ। কিন্তু তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে আর পড়া-লেখা হয়ে উঠেনি তার। মা হলো খুব ধার্মিক। আমাতুল্লাহ জন্মের পর থেকে আজ অবদি কোনোদিন তার মা কে নামাজ তরক করতে দেখেনি। সে ছোট থেকেই ধর্মে-কর্মে লালিত হয়েছে এমন এক মহিয়সী মায়ের কোলে যার কোনদিন পর্দাও তরক হয়নি। সেজন্য একজন আলেম স্বামীকে নিয়ে আলোকিত সংসার গড়ার স্বপ্ন ছিল আমাতুল্লাহ’র। কিন্তু তার বাবার পছন্দ অন্যরকম। বাবার কথা হলো- স্কুলের লেখা-পড়া চালানোর মত আর্থিক সামর্থ যাদের নেই কিংবা মেধাহীন, শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রকৃতির বাচ্চাদেরকেই মাদরাসায় ঠেলে দেয়া হয়। মাদরাসা পড়–য়া ছেলেদের ভাগ্যে কোন চাকরী জুটেনা। সরকারী ভাবে এরা চরম অবহেলিত একটি শ্রেণী।

পক্ষান্তরে তথাকথিত জেনারেল শিক্ষার মানেই হলো উন্নত জীবনযাপনের নিশ্চয়তা। স্থায়ী চাকরী, মোটা অংকের সেলারি তার পর পেনশন অবসর ভাতা তো আছেই। সব মিলিয়ে মেয়ে সুখে থাকবে এটা সব বাবারই কাম্য। সে জন্য দেখে-শুনে জেনারেল শিক্ষিত ছেলের সাথেই বিয়ে ঠিক করেছেন তিনি। বাবার মতের বাইরে যাওয়ার সাধ্য পরিবারে কারোরই নাই। তাই নিজের পছন্দের বাইরে গিয়ে বাবার পছন্দেই এ বিয়েতে রাজি হয়েছে আমাতুল্লাহ। মহা-ধুমধামে চলছে সব আয়োজন। চারদিকে উৎসবমুখর পরিবেশ। ‘মাগরিব নামাজের পর কনে সাজানো শুরু হলো। আমাতুল্লাহ’র মাথা থেকে গলা পর্যন্ত মেক-আপ দেয়া হলো। বিভিন্ন ডিজাইনের স্বর্ণালংকার দিয়ে সজ্জিত করা হলো নাক, কান আর কপাল। উন্নত সুন্দর লাল শাড়ি দিয়ে বিয়ের পোশাকে মোড়ানো হলো তাকে।

বরপক্ষ আসার সময় হয়ে গেছে। এমন সময় এশার আজান হলো। আযানের শব্দ কানে ভেসে আসতেই আমাতুল্লাহ’র মনে পড়ল তার ওজু নেই। নতুন ওজু করে নামাজ পড়তে হবে। আমাতুল্লাহ বড় টেনশনে পরে গেল। কারণ ওজু করতে গেলেই এখন এত টাকা খরচ করে দেয়া দামী উন্নত মেক-আপ নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু তাকে যে নামাজ পড়তেই হবে। সে তার পরিবাবরের লোকদের জানাল যে, এশার আযান হয়ে গেছে। আমাকে নতুন ওজু করে নামাজ পড়তে হবে। আমি ওজু করে এশার নামাজ পড়তে চাই।

আমাতুল্লাহ’র কথা শুনে পরিবারের সবাই হতবাক। বলে কী! এখন ওজু করলে এত টাকা খরচ করে দেয়া এই মেক-আপের কি হবে ? তার বাবা বলল মা’মনি ‘তুমি কি পাগল হয়ে গেছ ? এখন ওজু করলে তো পানিতে সব ধুয়ে যাবে। ‘দেখছ না সবাই বরের অপেক্ষা করছে। তারা তোমাকে এখনি উঠিয়ে নিতে আসছে। তারা এসে তোমাকে মেক-আপ ছাড়া দেখলে কী বলবে ? আমাতুল্লাহ বলল, বাবা ! আমি তোমার কোন আদেশ অমান্য করিনি। শেষ পর্যন্ত তোমার ইচ্ছাতেই আমি এ বিয়েতে রাজি হয়েছি। আর কী চাও তুমি ? এখন কি তোমার কথায় নামাজটাও ছেড়ে দিতে হবে ? কে কী বললো তাতে আমার কিছু যায়-আসেনা। আমাকে নামাজ পড়তে হবে।

কারো কথায় কোনো কাজ হচ্ছেনা দেখে তার মা এসে বলল, আমাতুল্লাহ ! আজকের এশার নামাজটা না হয় পরে ক্বাযা করে নিও। মায়ের এমন কথা শুনে আমাতুল্লাহ বলল মা! তুমিও এমন কথা বলতে পারলে! তোমাকে তো কোনো দিন নামাজ ক্বাযা করতে দেখিনি। সেই তুমিই আজ আমাকে নামাজ ক্বাযা করতে বলছো ! মা! আমি নামাজ না পড়ে এখান থেকে যাবো না। সামান্য মেক-আপের জন্য আমি আল্লাহর আবাধ্য হতে পারবো না। এই সৃষ্টির দৃষ্টিতে সুন্দর হওয়ার জন্য আমি যদি নামাজ ছেড়ে দিই তবে স্রষ্টার কাছে যে আমি অসুন্দর হয়ে যাবো। এটা আমি পারবোনা মা।

এ কথা বলে আমাতুল্লাহ উঠে গিয়ে ওজু করতে শুরু করল। ওজুর পানিতে তার সব মেক-আপ মুছে যেতে লাগল, কিন্তু সে এসব কিছুরই পরোয়া করল না। ভালভাবে উত্তম রূপে ওজু করে ঘরে এসে যথারীতি জায়নামাযে দাঁড়িয়ে গেল। আমাতুল্লাহ নামাজ পড়তে শুরু করল। কিন্তু তখনও কেউ জানতো না যে, এটাই তার জীবনের শেষ নামায। হ্যাঁ সে যখন রুকু থেকে সিজদায় গেল, মহান রব্বে কারীমের ইশারায় তখনই তার রুহ বের হয়ে গেল। প্রভুর পায়ে সিজদাবনত অবস্থায় দ্বীনের উপর অটল তার এক দাসী তারই কাছে চলে গেল। আমাতুল্লাহ আর্থাৎ আল্লাহর দাসী তার মুনিবের কাছাকাছি হতে চেয়েছিল। আর নামাজের মাধ্যমে মুনিবের সবচেয়ে কাছে গিয়ে তার দাসত্তে¦র চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেল।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

The Disadvantages of totally free…

Why I Bought TWO Persian…

Syrian Girl for Dummies

The Simple Truth About Russian…

New Report Shows The Reduced…

Azerbaijan Girls – Five Popular…

5 Closely-Guarded Bangladesh Women Strategies…

The New Fuss About Panamanian…

Simply How Much You Should…

The Thing You Need To…