শুক্রবার সন্ধ্যা ৭:৫৪, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৩রা মে, ২০২৪ ইং

সম্পদের প্রলোভনে সারাজীবন বিভোর ছিলাম -স্টিভ জবস

স্টিভ জবস

[বৈষয়িক যে কোনো জিনিস হারালে আপনি পাবেন। কিন্তু একটা জিনিসই হারালে আর পাওয়া যায় না। তা হলো মানুষের জীবন। -স্টিভ জবস] বিশ্ববিখ্যাত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘এ্যাপল’ এর প্রতিষ্ঠাতা, তারুণ্য দুনিয়ার আইকন- স্টিভ জবস। তুখোর মেধাবী আর বিশাল সম্পদের অধিকারী ছিলেন। কিন্তু জীবনের মাঝপথেই তাকে থেমে যেতে হয়। চলে যেতে হয় হাসপাতালের বিছানায়, অপারেশন থিয়েটারে। এ্যাপলের ব্যাংক একাউন্টে তখন জমা ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কী ছিল তার তখনকার অনুভূতি? শুনুন তার নিজের মুখ থেকে। - সংগৃহীত

বাণিজ্যিক দুনিয়ায় আমি সাফল্যের একেবারে চূড়ান্ত শিখরে আরোহণ করেছি, যা আপনাদের কাছে সাফল্যের এক অনুপম দৃষ্টান্ত। কিন্তু একটি কথা ধ্রুব সত্য, কাজের বাইরে আমার আনন্দ ছিলো অতি সামান্যই। সম্পদের প্রলোভনে বিভোর ছিলাম সারাজীবন। আজ মৃত্যুবিছানায় শুয়ে যখন জীবনটাকে দেখি, তখন মনে হয় আমার সব সম্মান, খ্যাতি আর অর্জিত সম্পদ আসন্ন মৃত্যুর সামনে একেবারেই ম্লান, তুচ্ছ আর অর্থহীন। এ্যাপলের বিশাল সাম্রাজ্য আমার নিয়ন্ত্রণে ছিলো, কিন্তু মৃত্যু আজ আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি কবরের বিছানায় শুয়ে আছে সেটা আদৌ কোনো বড় ব্যাপার না। প্রতি রাতে নিজের বিছানায় শোবার আগে সারাদিন আমি কী করলাম, সেটি ভাবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অন্ধকার রাতে জীবনরক্ষাকারী মেশিনের সবুজ বাতিগুলোর দিকে চেয়ে আমার বুকের গহীনে হাহাকার করে ওঠে। মেশিনের শব্দের ভিতরে আমি নিকটবর্তী মৃত্যু-দেবতার নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারি। অনুধাবন করতে পারি- শুধু সম্পদ না, সম্পদের সাথে সম্পর্কহীন জিনিসও মানুষের অন্বেষণ করা উচিত।

পৃথিবীতে সবচেয়ে দামী বিছানা কি জানেন? তাহলো- হাসপাতালের মৃত্যুশয্যা। আপনাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আপনি একজন গাড়ি চালক রাখতে পারেন। আপনার নিযুক্ত কর্মচারীরা আপনার জন্য অনেক টাকা আয় করে দিবে। কিন্তু এটাই সবচেয়ে বড় সত্য, গোটা পৃথিবী চষে, পৃথিবীর সব সম্পদ দিয়ে দিলেও একজন মানুষও পাবেন না যে আপনার রোগ বয়ে বেড়াবে।

বেকুবের মতো সম্পদ আহরণই সবকিছু নয়, আরো অনেককিছু মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো- মানুষের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করা, সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করা এবং তারুণ্যে একটি সুন্দর স্বপ্ন হৃদয়ে লালন করা। শুধু সম্পদের পেছনে ছুটলে মানুষগুলো আমার মতোই এক ভ্রান্ত মানুষে পরিণত হতে পারে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার হৃদয়ে ভালোবাসা অনুভব করার জ্ঞান দিযেেছন কেবল এই নশ্বর দুনিয়ায় সম্পদের মোহে জড়িয়ে পড়ার জন্য নয়। এই যে মৃত্যুশয্যায় শুয়ে আছি, কোথায়, সব সম্পদতো এই বিছানায় নিয়ে আসতে পারিনি? আজ সাথে আছে শুধু ভালোবাসা, প্রেম, মায়া আর মমতার কিছু স্মৃতি। এগুলোই শুধু সাথে থেকে সাহস যোগাবে, আলোর পথ দেখাবে।

ভালোবাসা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। শুধুই সম্পদ না খুঁজে ভালোবাসাও খোঁজা একান্ত দরকার। সম্পদ সর্বক্ষেত্রেই শান্তি নিশ্চত করে না। মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ আর ভালোবাসাই শান্তি আনে। পৃথিবীটাকে দেখো, শুধু সম্পদের পেছনে ছুটে হাহাকার করলে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবে না।

মানুষ যখন অপারেশান থিয়েটারে যায় তখন সে কেবলই অনুধাবন করে, কেন জীবনের মূল্যটা আগে বুঝিনি? জীবনের যে স্টেজেই আপনি আজ থাকুন না কেন, মৃত্যুর পরোয়ানা আপনার জীবনের সামনে হাজির হবেই। সাঙ্গ হবে জীবন। তাই, এই নশ্বর জীবনের পরিসমাপ্তির আগে পরিবারের জন্য, আপনজনের জন্য, বন্ধুদের জন্য হৃদয়ে সবসময় ভালোবাসা রাখুন।

পৃথিবীতে সবচেয়ে দামী বিছানা কি জানেন? তাহলো- হাসপাতালের মৃত্যুশয্যা। আপনাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আপনি একজন গাড়ি চালক রাখতে পারেন। আপনার নিযুক্ত কর্মচারীরা আপনার জন্য অনেক টাকা আয় করে দিবে। কিন্তু এটাই সবচেয়ে বড় সত্য, গোটা পৃথিবী চষে, পৃথিবীর সব সম্পদ দিয়ে দিলেও একজন মানুষও পাবেন না যে আপনার রোগ বয়ে বেড়াবে। বৈষয়িক যে কোনো জিনিস হারালে আপনি পাবেন। কিন্তু একটা জিনিসই হারালে আর পাওয়া যায় না। তা হলো মানুষের জীবন।

মানুষ যখন অপারেশান থিয়েটারে যায় তখন সে কেবলই অনুধাবন করে, কেন জীবনের মূল্যটা আগে বুঝিনি? জীবনের যে স্টেজেই আপনি আজ থাকুন না কেন, মৃত্যুর পরোয়ানা আপনার জীবনের সামনে হাজির হবেই। সাঙ্গ হবে জীবন। তাই, এই নশ্বর জীবনের পরিসমাপ্তির আগে পরিবারের জন্য, আপনজনের জন্য, বন্ধুদের জন্য হৃদয়ে সবসময় ভালোবাসা রাখুন। নিজের জীবনটাকে ভালোবাসুন। ঠিক নিজের মতো করে অন্যকেও ভালোবাসুন।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply