শুক্রবার বিকাল ৫:৫২, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই মে, ২০২৪ ইং

প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজক পানীয়

তোফায়েল হোসেন জাকির

যৌন উত্তেজক ড্রিংকস সেবনকারী কয়েকজন বলেন, যৌন উত্তেজক ড্রিংকস সেবনের পূর্বে যৌন ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলেও অধিক শক্তি পাওয়ার আশায় এ সকল পানীয় সেবন করা হয়। এখন সেবনকারীদের এমন অবস্থা হয়েছে যে সেবন না করলে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি হয় না। তাই বাধ্য হয়ে নিয়মিত এ ড্রিংকস সেবন করতে হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলার ৭ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজক পানীয়। বিশেষ করে জেলা ও উপজেলা শহর এলাকার কিছুসংখ্যক তরুণ-যুবক ও বৃদ্ধসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ ঝুঁকছে এসব পানীয় পানের দিকে। আর এসব পানীয় পানের কু-প্রভাবে জেলায় যৌনাচার, ব্যভিচার, ধর্ষণ, আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাম্প্রতিকালে দেশীয় ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আসা বিভিন্ন অসাধু কোম্পানির সরবারহকৃত এসব যৌন উত্তেজক পানীয়তে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন বা ভ্রাম্যমান আদালতের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার নজরদারি করা হচ্ছে না। প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে যৌন উত্তেজক এসব পানীয় পানের ফলে যৌন অপরাধ-প্রবনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে স্থানীয় চিকিৎসকরা আশংকা প্রকাশ করছেন।

গাইবান্ধা জেলার ৭ উপজেলার শহর-হাট-বাজারে প্রকাশ্যে এসব যৌন উত্তেজক পানীয় বিক্রি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারকীর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায় না। জেলার হাট-বাজারে গড়ে উঠা কনফেকশনারী, গলামালের দোকান, হোটেল-রেস্তোরা ও পানের দোকানসহ অধিকাংশ দোকানেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির প্রস্তুতকৃত এসব পানীয়। এসব পান করার জন্য দোকানের সামনে ভীড় জমায় যুবক থেকে মধ্য বয়সী বিভিন্ন পর্যায়ের সেবনকারীরা। বিএসটিআই’র অনুমোদনহীন এসব যৌন উত্তেজক পানীয় পানের তোড়জোড় লক্ষ করা যায়।

কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন কোম্পানির প্রস্তুতকৃত ড্রিংকস এর মধ্যে ডাবল হর্স, হর্স পাওয়ার, ম্যান পাওয়ার, পাওয়ার ম্যান, তৃপ্তি পাওয়ার, মাসরুম, পাগলু ২, নাইট পাওয়ার, জিনসিং পানীয় উল্লেখযোগ্য। ব্যবসায়ীরা আরো জানায়, অন্যান্য ড্রিংকস বিক্রি করে লাভ বোতল প্রতি ২/৪ টাকা। আর এ সকল যৌন উত্তেজক ড্রিংকস বিক্রি করে বোতল প্রতি লাভ ৮ থেকে ১০ টাকা। আর বিক্রিও হয় অন্যান্যগুলোর চেয়ে দ্বিগুন/তিনগুন।

যৌন উত্তেজক ড্রিংকস সেবনকারী কয়েকজন বলেন, যৌন উত্তেজক ড্রিংকস সেবনের পূর্বে যৌন ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলেও অধিক শক্তি পাওয়ার আশায় এ সকল পানীয় সেবন করা হয়। এখন সেবনকারীদের এমন অবস্থা হয়েছে যে সেবন না করলে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি হয় না। তাই বাধ্য হয়ে নিয়মিত এ ড্রিংকস সেবন করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের বহিঃ ভাগের চর্ম ও যৌন বিভাগের ডাক্তার জানায়, নিয়মিত যৌন উত্তেজক ড্রিংস সেবন করলে যৌন শক্তি একেবারে হারিয়ে যায়। এমন কি মানব শরিরের গুরুত্বপূর্ণ কিডনি ড্যামেজ, যৌনশক্তি স্থায়ী ভাবে হারিয়ে ফেলাসহ নানারকম ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

স্থানীয় সচেতন মহলের অভিমত, প্রশাসন ও ভ্রাম্যমান আদালতের দায়িতত্বশীল কর্মকর্তাদের অতিসত্ত্বর এ সকল যৌন উত্তেজক ও মানব দেহের ক্ষতিকারক পানীয় বাজারজাত ও বেচাকেনার বিষয়ে নজরদারী একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে চটকদারী ও সাময়িক কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে এসব পানীয় সেবন করে বড়ধরনের বিপর্যয় ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানায়, তাদের খাবার হোটেলগুলোতে প্রায় সময়ই ভ্রম্যমান আদালত অভিযান চালায় বিভিন্ন অংকের জরিমানা-জেল দন্ড দেয়া হয়। কিন্তু জনস্বাস্থ্যের মারাত্নক ক্ষতিকর এসব যৌন উত্তেজক ড্রিংস এর উপর প্রশাসনের কোন নজরদারী নেই কেনো ? এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

ক্যাটাগরি: সারাদেশ

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply