বৃহস্পতিবার রাত ৮:০৫, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২রা মে, ২০২৪ ইং

নির্যাতিত রোহিঙ্গা, মোড়লদের চাপে অসহায় বাংলাদেশ

শরীফ উদ্দীন রনি

মোড়ল রাষ্ট্রগুলো যখন যেদিকে সুবিধা পায় সেদিকেই হাত বাড়ায়। রোহিঙ্গারা আরাকান প্রদেশের বাসিন্দা হয়ে বসবাস করছে কয়েক শতাব্দী ধরে। সেই সূত্রে তারাই এ প্রদেশের স্থায়ী মালিক। কিন্তু অন্য রাষ্ট্রেগুলোর সম্পদের লোভের শিকার হয়ে তারা পিতৃপুরুষের ভূমি ছেড়ে আজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিশ্বে শুধু রোহিঙ্গারাই নয়, আরো অনেক জাতির মধ্যে বিষের বীজ বপণ করে চলেছে মোড়ল রাষ্ট্রগুলো। জাপান ও চীনের একাধিক ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের উৎপাদন কারখানা রয়েছে মায়ানমারে। পুরো পৃথিবীর ইলেক্ট্রনিক্স বাজারের বিশাল অংশ ধরে রেখেছে তারা। তাদের চাপে পড়ে আজ অসহায়ভারে বাংলাদেশের মতো দুর্বল রাষ্ট্রদের মেনে নিতে হচ্ছে এ ধরনে অভিবাসন।

রোহিঙ্গা পৃথিবীর অত্যাচারিত এবং অতি নিপীড়িত একটি জাতিসত্তার নাম। রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত নিধন কোনো নতুন বিষয় নয়, রোহিঙ্গাদের উপর বর্মী সেনাদের পরিকল্পিত আক্রমণ সেই ১৯৬০-এর দশক থেকেই শুরু হয়েছে। সর্বশেষ আক্রমণে তাদের নিজেদের আবাসভূমি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বাংলাদেশে। এদের মতো অভিবাসীদের আশ্রয় হয় পাশ্ববর্তী কোনো রাষ্ট্র। কোনো রাষ্ট্র বিপদে পড়লে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র তার সামর্থ্য অনুযায়ী হাত বাড়াতে পারে ঠিকই। কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া বোঝা বহন করা বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রের জন্য শুধু কষ্টকর নয়, অমানবিকও। নিজের স্বল্পসংখ্যক জনগণের নুন আনতে পানতা ফুরায় এ দেশের সরকারের। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে সরকার হয়তো রোহিঙ্গা ইস্যুতে নাক গলানোর খুব একটা সুযোগ পাচ্ছে না। তবে সাধারণ মানুষের মাথাব্যাথার অন্ত নেই। সরকারকে তাদের খাদ্য, বাসস্থান ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার জন্য গুণতে হচ্ছে বিশাল অঙ্কের অর্থ। যা ব্যয় হওয়ার কথা এদেশের অসহায় জনগণের পেছনে। বাংলাদেশ ছাড়াও এদের পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত ও চীন রয়েছে, যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল। তারা কেন তাদের পাশে নেই?

 

 

মোড়ল রাষ্ট্রগুলো যখন যেদিকে সুবিধা পায় সেদিকেই হাত বাড়ায়। রোহিঙ্গারা আরাকান প্রদেশের বাসিন্দা হয়ে বসবাস করছে কয়েক শতাব্দী ধরে। সেই সূত্রে তারাই এ প্রদেশের স্থায়ী মালিক। কিন্তু অন্য রাষ্ট্রেগুলোর সম্পদের লোভের শিকার হয়ে তারা পিতৃপুরুষের ভূমি ছেড়ে আজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিশ্বে শুধু রোহিঙ্গারাই নয়, আরো অনেক জাতির মধ্যে বিষের বীজ বপণ করে চলেছে মোড়ল রাষ্ট্রগুলো। জাপান ও চীনের একাধিক ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের উৎপাদন কারখানা রয়েছে মায়ানমারে। পুরো পৃথিবীর ইলেক্ট্রনিক্স বাজারের বিশাল অংশ ধরে রেখেছে তারা। তাদের চাপে পড়ে আজ অসহায়ভারে বাংলাদেশের মতো দুর্বল রাষ্ট্রদের মেনে নিতে হচ্ছে এ ধরনে অভিবাসন। বিশ্বজনীনভাবে অনেক রাষ্ট্র হয়তো প্রতিবাদ করছে ঠিকই। তা কতটুকু ফল বয়ে নিয়ে এসেছে তার বাস্তবতা আজো আমাদের চোখের সামনে রয়েছে। তবে সমস্যা কোথায়? আর সেই সমস্যার সমাধানইবা কী?

২০১২-১৩ সালে একাধিক বৌদ্ধ এবং মুসলিম জাতিগত সংঘর্ষের কারণে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এদের অনেকেই বার্মার অস্থায়ী পুনর্বাসন কেন্দ্রে আশ্রয় নেন এবং পরবর্তীতে অনেকেই মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে যান প্রধানত বৌদ্ধ মতাবলম্বী সন্ত্রাসীদের আক্রমনের কারণে। ঐ বছর শুধুমাত্র প্রকাশিত তথ্য মতে, প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার এবং নিপীড়নের ভয়ে বার্মা থেকে সমুদ্রপথে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্রে চলে যায় এবং এর ফলে কমপক্ষে এক হাজার রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে নৌকাডুবি হয়ে মারা যায়। একজন রাষ্ট্রপ্রধান যে কিনা শান্তিতে পর্যন্ত নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিল। তারা যতই অত্যাচারিত হউক না কেন, অন্ততপক্ষে তার আমলে অমানবিক অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার কথা। তা না হয়ে হয়েছে উল্টো। তার সময়টাতেই রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয়। এটা কি তার শান্তির ধরন? নাকি তিনি মোড়ল রাষ্ট্রেগুলো থেকে পাচ্ছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার মদদ?

ক্যাটাগরি: অপরাধ-দুর্নীতি,  সারাদেশ

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply