রবিবার বিকাল ৫:৩৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৯শে মে, ২০২৪ ইং

দ্রুত খুলে দিন মসজিদগুলো

তাসনীম বিন হাবীব

“লক-ডাউন মসজিদ ছাড়া কোথাও মানা হচ্ছে না। বাজার-ব্যাংক-ত্রাণের সিরিয়ালে উপচে পড়া ভিড়। সাংবাদিকরাও ভিড় করছেন বিভিন্ন জায়গায়। এই দুর্নীতিপূর্ণ ভঙ্গুর রাষ্ট্র-ব্যবস্থায়? আবার দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে? এটা আসলে সম্ভবও না।”

এক সময় লকডাউনের পক্ষ নিয়ে মসজিদ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বলেছিলাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটা এখন পরিষ্কার, আমাদের দেশ উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না। আমরা যারা বাইরে আছি, বিশেষত কাতারে, তারা হয়ত আমার সাথে একমত হবেন- এখানে মার্কেটে গেলে প্রবেশের আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করায়। তারপর তাপমাত্রা চেক করে। গ্লাবস না থাকলে পরতে দেয়। ট্রলির হাতল প্রত্যেক কাস্টমারের জন্য আলাদাভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করে পরিষ্কার করে দেয়। এরপর প্রবেশের পালা।

মার্কেটের ফ্লোরে দূরত্ব মেপে মেপে স্টীকার লাগানো আছে। সেভাবে দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। বিল দেয়ার সময় সিরিয়ালে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। বিল দেয়া শেষে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে আবার হাত পরিষ্কার করে আসার ব্যবস্থা রেখেছে তারা। (আমার নিকটস্থ লু’লু’ হাইপার মার্কেটে দেখেছি এমনটা)

আর আমাদের দেশে? এসবের কিচ্ছু নেই। লক-ডাউন মসজিদ ছাড়া কোথাও মানা হচ্ছে না। বাজার-ব্যাংক-ত্রাণের সিরিয়ালে উপচে পড়া ভিড়। সাংবাদিকরাও ভিড় করছেন বিভিন্ন জায়গায়। এই দুর্নীতিপূর্ণ ভঙ্গুর রাষ্ট্র-ব্যবস্থায়? আবার দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে? এটা আসলে সম্ভবও না। তাই আল্লাহর ঘর মসজিদ অযথা লকডাউন করে লাভ নেই। সবক্ষেত্রে লকডাউন মান্য করা হলে মসজিদের ক্ষেত্রে হয়ত মেনে নেয়া যেত। মানার প্রশ্ন ছিল৷

“সাধারণ মানুষের জীবন-যাত্রা সহজ করুন। জীবিকা উপার্জনের সুযোগ দিন। যেহেতু আপনারা তাদের খাবারের যোগান দিতে পারছেন না। এতে মানুষ ক্ষুধার-মৃত্যু ও কষ্ট থেকে হয়ত কিছুটা মুক্তি পাবে”

কোথাও মানা হচ্ছে না। শুধু মসজিদ লকডাউন করার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। আবার গ্রেপ্তারের মত ঘটনাও ঘটেছে কিছু জায়গায়! এসব অর্থহীন পদক্ষেপ বিশেষ কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না। খোলে দিন মসজিদগুলো। যারা মরার মরবে। যারা বাঁচার বাঁচবে। বাজারঘাটে আক্রান্ত হয়ে মরার চেয়ে মসজিদে এসে আক্রান্ত হয়ে মরা আমাদের মুসলমানদের জন্য অনেক বেশি আনন্দের ও সম্মানের।

আরেকটা ব্যাপার, সাধারণ মানুষের জীবন-যাত্রা সহজ করুন। জীবিকা উপার্জনের সুযোগ দিন। যেহেতু আপনারা তাদের খাবারের যোগান দিতে পারছেন না। এতে মানুষ ক্ষুধার-মৃত্যু ও কষ্ট থেকে হয়ত কিছুটা মুক্তি পাবে। অন্যথায় ক’দিন পরে এই দেশ চুরি-ডাকাতি এবং খুন-খারাবির অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। আর এটা হবে অভাবের কারণে। যে অভাব রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য রাখে না।

তাসনীম বিন হাবীব : ইমাম ও খতীব, কাতার

ক্যাটাগরি: মিনি কলাম

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply