শুক্রবার বিকাল ৫:১৭, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই মে, ২০২৪ ইং

জুরাইনে কালাপানি সড়ক : বিশ্বের নবম আশ্চর্য

দেশ দর্শন প্রতিবেদক

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাই, এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় থাকাকালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে হাজী খোরশেদ আলী সরদার রোড নামে যে রাস্তায় আপনার সাদা জিপ গাড়িটি হাকিয়ে আপনি কলেজ রোড (তখনো কলেজ রোড নামে নামকরণ হয়নি) মাঠে এসে বক্তব্য দিয়েছিলেন সে রোডটিকে খাল ঘোষণা দিয়ে আমাদের চলাচলের জন্য আপনার দলের প্রতীক কিছু নৌকার ব্যবস্থা করে দিন।”

পঁচিশ বছর ধরে ড্রেনের ময়লা পানির নিচে জুরাইন

এ নিউজটি গত ‘২০১৭ এর ১০ জুলাই’ দেশ দর্শনের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হয়েছিল। তখন দেশ দর্শনের অনলাইন না থাকায় এর কোনো অনলাইন সংস্করণ নেই। তাই তখন যেভাবে নিউজটি লেখা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এখন দেয়া হল। তাছাড়া এখনো নিউজটির প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশ দর্শনের নিউজের প্রায় পরপরই রাস্তাটির কাজ ধরা হয়। এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে কাজ শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে তাও জানা নেই।আবার কাজ শেষ হলেও সমস্যাটা থেকে এলাকাবাসী পুরোপুরি মুক্তি পাবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।

আটাশির বন্যায় প্রায় পুরো বাংলাদেশ যখন পানির তলে, তখন রাজধানী ঢাকার জুরাইনের এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি স্বগর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্রের কি নির্মম পরিহাস, ‘সৎ, নিষ্ঠাবান ও জনদরদী’ জনপ্রতিনিধিদের কল্যাণে আজ সেটি দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে পানির নিচে। তাও আবার নোংরা পানি। মানুষ বসবাসের জায়গা এটি- ভাবতেও কষ্ট হয়। এলাকাবাসীর ও বাইরের আগন্তুকদের কষ্ট-দুর্ভোগ বর্ণনার ভাষা নেই। পশ্চিম দিক দিয়ে মূল ঢাকার সঙ্গে এলাকাবাসীর এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে অন্যদের যোগাযোগের এটিই একমাত্র রাস্তা। এর বিকল্প নেই। এমন একটি রাস্তা কিভাবে দুই যুগ ধরে ঢাকার ভেতরে এভাবে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকে, ‘হর্তাকর্তাদের’ দৃষ্টিসীমায় আসে না তা এই প্রতিবেদকের ক্ষুদ্র জ্ঞানে বুঝে আসছে না।

এটি আওয়ামী শাসনের গত আমলের প্রভাবশালী এমপি, বিখ্যাত নারীবাদী-মানবতাবাদী নেত্রী সানজিদা খানমের এলাকা বলে কথা! ‘বিশ্বের নবম আশ্চর্য’ এ রাস্তাটির পাশেই তার বাড়ি। বর্তমান মহাজোট সরকারের (জাতীয় পার্টি) গুণধর এমপি বাবলার বাড়িও এখানেই। রাষ্ট্রের আরো অনেক হর্তাকর্তা এখানে জন্ম লাভ করে ধন্য হয়েছেন কিংবা রাস্তাটি ‘তাহাদের’ জন্মলাভে ধন্য হয়েছে!

ওখানকার একজন অধিবাসী জানান, টাকার কোনো সমস্যা নেই। রাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া শুধুমাত্র রাস্তার পাশের দোকানগুলোর চাঁদা দিয়েও রাস্তাটি শুধু মেরামত নয়, টাইলস করা সম্ভব। কিন্তু অজানা কারণে হচ্ছে না। আরেকজন বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এর জন্য দায়ী। রাস্তা উঁচু করলে হাজারো দোকান ও বাড়ি মাটির নিচে চলে যাবে, বিশেষ করে বাথরুমের ট্যাংকির পানি সরবে না তাই এখানকার সমস্ত ঘর-বাড়ি নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। অতি মজার তথ্য দিয়েছেন চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় জন্ম নেয়া এক প্রবন্ধকার। চরম হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বললেন, “১৯৯৭ সনের ৮ ডিসেম্বর দৈনিক ইনকিলাব-এর সম্পাদকীয় পাতায় লেখা প্রকাশের মধ্য দিয়ে জাতীয় দৈনিকে আমার লেখার শুরু। লেখাটির শিরোনাম আমি দিয়েছিলাম, ‘জুতা হস্তে চলাচল’। সম্পাদনা করে ছাপা হয়েছিল ‘জুরাইনবাসীর করুণ ফরিয়াদ’ নামে। এই পানি এখন জীবনের সাথে মিশে গেছে।

আমার মনে চায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাই, এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় থাকাকালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে হাজী খোরশেদ আলী সরদার রোড নামে যে রাস্তায় আপনার সাদা জিপ গাড়িটি হাকিয়ে আপনি কলেজ রোড (তখনো কলেজ রোড নামে নামকরণ হয়নি) মাঠে এসে বক্তব্য দিয়েছিলেন সে রোডটিকে খাল ঘোষণা দিয়ে আমাদের চলাচলের জন্য আপনার দলের প্রতীক কিছু নৌকার ব্যবস্থা করে দিন।”

এলাকার ভেতরের অনেক ‘গলি-রাস্তা’ ধাপে ধাপে উঁচু হয়েছে এবং হচ্ছে, সেক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রকট। দেখা গেছে, যে বাড়িওয়ালা ভবিষ্যৎচিন্তা করে দশ বছর আগে তার বাড়িটি পাশের রাস্তা থেকে তিন/পাঁচ ফুট উঁচু করে বানিয়েছিলেন, আজ তার বাড়িটি মাটির নিচে। কারণ যে যত পরে বাড়ি বানাচ্ছে, তত উঁচু করে বানাচ্ছে। আরেকজন সরাসরি রাজনীতিকদের নোংরামী ও দুর্নীতিকে দায়ী করলেন। বললেন, তারা এলাকার ক’জন প্রভাবশালীর টাকা খেয়ে এদিকে নজর দেন না, এমনকি কাজ হতে চাইলেও আটকে দেন।

চেয়ারম্যানবাড়ির পরে কলেজরোডের শেষ মাথায় রয়েছে ‘সেলিনা এস্টেট’ রাস্তাটা ওখানেই শেষ। এটা তাদের দীর্ঘ দিনের জমিদারী। বিগত রওশন চেয়ারম্যান ও অন্যরা অনেক চেষ্টা করেও তাদের জমির উপর দিয়ে রাস্তা নিতে পারেনি। এ রাস্তাটা যদি আরেকটু সামনে বাড়তে দিয়ে ‘শহীদ মোক্তার হোসেন রোড’ পর্যন্ত নেয়া যেত তাহলে এই জলাবদ্ধতা অর্ধেক কমে যেত। এসব নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে পত্র-পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে, কিন্তু বিন্দুমাত্র কাজ হচ্ছে না। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার একনেকে বৈঠকে এ নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়, কিন্তু এটিও তারা ঠেকিয়ে দিয়েছে। সুতরাং কেয়ামতের আগে এ ভোগান্তি থেকে সম্ভবত মুক্তি মিলবে না।

প্রথম আলো (০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪) ‘রাস্তার ওপর নোংরা পানি এলাকার নাম জুরাইন’ শিরোনামে লিখেছে, “চারদিকে উৎকট দুর্গন্ধ। ড্রেন-স্যুয়ারেজের উপচে পড়া নোংরা ও ময়লাযুক্ত পানি রাস্তার উপর উঠে এসেছে। জমাটবদ্ধ এসব পানিতে মশা-মাছি, আবর্জনার স্তূপ, কাগজের পোঁটলা, মলমূত্রসহ নানা বিষাক্ত বর্জ্য। এই দৃশ্য রাজধানীর জুরাইন এলাকার বেশির ভাগ সড়কের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জলাবদ্ধতা এই এলাকার অনেক দিনের সমস্যা। বর্ষাকালে তা আরো প্রকট আকার ধারণ করে। তবে ড্রেন ও স্যুয়ারেজের অব্যবস্থাপনার কারণে বছরজুড়েই এই এলাকার বিভিন্ন সড়কে নোংরা পানি জমে থাকে। স্থানীয় কয়েকজন জানান, অন্যান্য বছরে শীতে জলাবদ্ধতা কম হলেও এ বছর তা আগের চেয়ে অনেক বেশি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিরা বারবার শুধু জলাবদ্ধতা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন, সমস্যার সমাধান করেন না। এই এলাকাটি ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের অঞ্চল-৫-এর অন্তর্ভুক্ত। জুরাইনের কুসুমবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেনের উপর দিয়ে নোংরা পানি উপচে গোটা এলাকার বিভিন্ন সড়কে ও বাড়ির আশপাশে জমে আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তারা সিটি করপোরেশনের ওপর ত্যক্ত-বিরক্ত। করপোরেশনের কেউ এখানে আসে না, যেন বিষয়টি নিয়ে কারও মাথাব্যথ্যা নেই। …”

কালের কণ্ঠ (১০ মার্চ ২০১২) ‘জলাবদ্ধতায় নাকাল জুরাইন’ শিরোনামে লিখেছে, “ঢাকা দক্ষিণ জুরাইন এলাকায় অসময় জলাবদ্ধতার এমন চিত্র দেখে একদিকে যেমন হতাশ হচ্ছেন। অন্যদিকে আসছে বর্ষা মৌসুমের কথা ভেবে সবাই উৎকণ্ঠায় আছেন। রাস্তার জমাটবদ্ধ পানি স্থানান্তরের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জুরাইন রেলগেট রাস্তা থেকে শুরু করে জুরাইন মাজার রাস্তা পর্যন্ত পুরো রাস্তা এখন পানিতে থৈ থৈ অবস্থা। এসব বিষয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সুফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেন-স্যুয়ারেজ এবং ম্যানহোলের ঢাকনা উপচে নোংরা ও ময়লাযুক্ত পানি রাস্তার ওপর উঠে এসেছে। কয়েক দিন ধরে এসব পানি কোনোদিকে চলাচল না করার ফলে চারদিকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া জমাটবদ্ধ এসব ময়লা পানিতে মশা-মাছি, আবর্জনার স্তূপ, কাগজের পোঁটলা, খড়-মলমূত্রসহ নানা বিষাক্ত বর্জ্য পানির সঙ্গে ভাসছে।

… এসব দুর্ভোগের বিষয় নিয়ে কথা হলো জুরাইন (পূর্ব ৯০) বর্তমানে ৫৪ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার সচিব মুহম্মদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, এসব সমস্যার কথা স্থানীয় এমপি সানজিদা খানমকে বারবার জানানোর পরও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা এখন অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি চাইলে তো আর সব কিছু করতে পারি না। নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যদি এসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে না আসেন, মানুষের সুখ-দুঃখ না বোঝেন আপনি-আমি চেয়ে কি আর করব? এ ছাড়া আগের আঞ্চলিক কর্মকর্তা বিভাষ চন্দ্র দাশকে এসব বিষয় জানানো হলে তিনি করছি, করব এসব বলে বদলি হয়ে যান। তাই সমস্যাটা থেকেই যাচ্ছে। …”

বাংলাদেশ প্রতিদিন (২৪ এপ্রিল ২০১৪) ‘জনদুর্ভোগ দেখার কেউ নেই’ শিরোনামে লিখেছে, “রাস্তা ডুবে আছে ড্রেন উপচানো নোংরা পানিতে। চারদিকে উৎকট দুর্গন্ধ। জুতা-স্যান্ডেল পায়ে রাস্তায় হাঁটার উপায় নেই। প্রচ- ভ্যাঁপসা গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ, তখন রাজধানীর পূর্ব জুরাইনে চলছে খাবার পানির খরা। ওয়াসার লাইনে পানি নেই। যে পানি পাওয়া যাচ্ছে তা খাওয়ার অযোগ্য। পানির নিলাভ রং ও দুর্গন্ধ। মানুষ জীবন বাঁচাতে ছুটছে পানির সন্ধানে। স্থানীয় ঈদগা মসজিদের ডিপটিউবওয়েল থেকে ভালো পানি পাওয়ার খবর পেয়ে লাইন দিয়েছে সেখানে। মসজিদ কমিটি বাধ্য হয়ে জন চাহিদা মেটাতে পানি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। আবার পূর্ব জুরাইনের কমিশনার গলির দারুসসালাম জামে মসজিদে যেতে হয় নোংরা পানি মাড়িয়ে। জনপ্রতিনিধিত্বহীন রাজধানীর ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে জনদুর্ভোগের এমন একটি খণ্ডচিত্র পাওয়া গেল। মিষ্টির দোকান থেকে মেডিকেল রোড, হাজী খোরশেদ আলী সরদার রোড ও কমিশনার গলি নোংরা পানির নিচে। এ বিষয়ে স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়, নবীনবাগ, তালতলা গলি, সবুজবাগ, ওয়াসা রোড, হাজী খোরশেদ আলী সরদার রোড এলাকায় সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না।

বিদ্যুতের লোডশেডিং হয় ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। বেশিরভাগ রাস্তায় বাতি জ্বলে না। এক নম্বর রোডে (দারোগার গলিতে) সুরকির বস্তা ফেলে ড্রেনের পানিতে ডুবে থাকা রাস্তায় মানুষ পায়ে হাঁটার পথ করে নিয়েছে। নির্বাচিত ওয়ার্ড কমিশনার না থাকায় তারা কার কাছে অভিযোগ দেবে-সেটাও জানে না। জনৈক পান দোকানদার বলেন, ‘সরকার যদি ওয়ার্ড তদারকির জন্য নিজের দলের কাউকেই সিলেকটেড করে দিত তাইলেও তো সুবিধা-অসুবিধার কথাটা বলতে পারতাম’। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ নূর হোসেন বলেন, [বর্তমানে তিনি ওয়ার্ড কমিশনার] জনগণের চরম দুর্ভোগ চলছে। মানুষ খাবার পানি পায় না। রাত ২টার পর যারা পারছে মোটর দিয়ে পানি টেনে নিচ্ছে। আবার ড্রেনের নোংরা পানির জন্য মানুষ রাস্তায় বের হতে পারে না, বাচ্চারা জুতা পায়ে স্কুলে যেতে পারে না। বৃষ্টি হলে এবার কী ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে চিন্তাই করতে পারছি না। পানি সরার কোনো জায়গা নেই। ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে। উন্নয়ন কাজ বন্ধ। …”

যুগান্তর শিরোনাম ‘জলাবদ্ধতা, গ্যাস ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট’ (২৩ মার্চ ২০১৭), ‘ডিএনডি এখন মরণ বাঁধ’ (০৪ আগস্ট ২০১৬), ইত্তেফাক ‘দুর্ভোগের নাম ডিএনডি বাঁধ : প্রতিবছর জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে লাখো মানুষ’ (১৪ জুলাই ২০১৫), বাংলাদেশ প্রতিদিন ‘ডিএনডি বাঁধের জলাবদ্ধতার সমাধানে’ (কলাম- ড. মো আওলাদ হোসেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬), ‘ডিএনডি এলাকা : প্রদীপের নিচে অন্ধকার’ (কলাম- ঐ, ৩ মে ২০১৭), দৈনিক খোলা কাগজ ‘সিটি কর্পোরেশনকে কেন ‘কর’ দেব’ (কলাম- শাকিলা নাছরিন পাপিয়া, ২২ জুন ২০১৬)। এছাড়া বিভিন্ন দৈনিকে বিভিন্ন শিরোনামে এ সমস্যা নিয়ে অসংখ্য নিউজ, প্রতিবেদন, কলাম ইত্যাদি এসেছে এবং আসছে। কিন্তু রাষ্ট্র ও সরকারের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।

দেশ দর্শনকে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানান, তার স্ত্রীর দাঁতে সমস্যা ও প্রচ- ব্যথা। ডাক্তার রুট-ক্যানেল ট্রিটমে›টের অর্ধেক কাজ করে দুদিন পর এসে বাকিটা করিয়ে নিতে বলেছেন। কিন্তু বৃষ্টি হওয়াতে রাস্তায় স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত পানি জমে। এদিকে রাস্তাও ভাঙ্গা। দুদিন পর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথে তার স্ত্রী রিক্সা থেকে পড়ে গিয়ে কোমড় ভাঙ্গে। এরপর আর যেতে না পারায় দাঁতটি একপ্রকার নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাটি খারাপ হওয়ায় নিত্যদিন এ ধরনের আরো অনেক সমস্যার শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে আগত অতিথিগণ। বিশেষ করে জুরাইনের উক্ত রাস্তাটি এত খারাপ যে এমন রাস্তা বিশ্বে দ্বিতীয়টি আছে বলে আমাদের জানা নেই। বিশ্বের ‘সপ্তম আশ্চর্য’ স্বীকৃত, অষ্টম আশ্চর্যের দাবিদার অনেক, আর ‘নবম আশ্চর্য’ হিসেবে দাবি তুললে এটি ‘নির্ঘাত’ টিকে যাবে।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply