শুক্রবার বিকাল ৩:০৬, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই মে, ২০২৪ ইং

আওয়ামী বাচালদের লম্ফঝম্পে কামাল-মান্নাদের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন

মন্তব্যেদন

সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নিজস্ব দূরদৃষ্টির মাধ্যমেই হোক অথবা তার নিরাপত্তা পরিষদের বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই হোক, আগেভাগেই আঁচ করে ফেলেছেন যে ড. কামালের নেতৃত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্ট তার জন্য এক বিশাল হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই তিনি ধৈর্য ধরতে পারেননি, রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারের মাথা খেয়ে শুরু করেছেন ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে প্রবল আক্রমণ।

দেশ দর্শন প্রতিবেদক : চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন। বিষহীন সাপের ফোঁসফাসটা একটু বেশিই হয়। টানা দুদু বার করে ক্ষমতায় যাওয়া আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় এখন মাটি দেখা যাচ্ছে না। পত্র-পত্রিকা, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া আগেই সরকার কব্জায় নিয়েছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে যে কোনো মুহূর্তে সরকারবিরোধী আন্দোল দানা বাধতে পারে বা গণবিস্ফোরণ ঘটতে পারে- সে সতর্কবার্তা দেশি-বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক আগেই সরকারকে দিয়ে রেখেছে। মাত্র কিছুদিন আগে ‘সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন’ তেমনই একটা অভিনব গণবিস্ফোরণ।

এর মধ্যেই আবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে কোণঠাসা ড. কামাল-মান্নারা দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছে রাজনীতির মাঠে। অবশ্য তাদের ফিরে আসাটা যতটা না নিজেদের শক্তিবলে, তারচেয়ে বেশি প্রতিপক্ষের বিরোধিতার বলে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ও যুক্তফ্রন্ট এখন মাঠে না থাকলেও আওয়ামী লীগাররাই প্রবল বিরোধিতা ও ভয়ে তাদের মাঠে রাখবে। এতদিন তাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতে বিএনপিকে আক্রমণ করতে করতে নিজেরাও বিরক্ত হচ্ছিল, জনগণকেও বিরক্ত করছিল। এখন তাদের মুখে নতুন কিছু শব্দ এবং নতুন কিছু ব্যক্তির নাম যুক্ত হবে। মানুষও তাদের বক্তৃতা-বিবৃতি-সেমিনারে সামান্য নতুনত্ব খুঁজে পাবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এসবই আওয়ামী লীগের পুরনো খেলা। এতে কোনো নতুনত্ব নেই, বরং আওয়ামী লীগের স্বভাবই এমন।

সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নিজস্ব দূরদৃষ্টির মাধ্যমেই হোক অথবা তার নিরাপত্তা পরিষদের বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই হোক, আগেভাগেই আঁচ করে ফেলেছেন যে ড. কামালের নেতৃত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্ট তার জন্য এক বিশাল হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই তিনি ধৈর্য ধরতে পারেননি, রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারের মাথা খেয়ে শুরু করেছেন ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে প্রবল আক্রমণ। এদিকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ভালো-মন্দ যাই বলুন, তার ‘যোগ্য শিষ্যরা’ তাই রিপিট করতে থাকে ক্রমাগত। তাই দেখতে দেখতেই শুরু হয়ে গেল ঐক্যফ্রন্টকে মোকাবেলার বিভিন্ন ঘোষণা, কলা-কৌশল নির্ধারণ। সাথে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও প্রবল বাক্যবাণ। চুমু-বিশেষজ্ঞ খ্যাত সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের থেকে শুরু করে নারায়নগঞ্জ রাজনীতির খলনায়ক শামীম উসমানসহ সবার মুখে মুখে এখন একই কথা, ঐক্যফ্রন্ট এই, ঐক্যফ্রন্ট সেই… ইত্যাদি ইত্যাদি।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণও অবাক, কেবলমাত্র সরকারের বিরোধিতার উপর ভর করে একটি নবগঠিত জোটের লাইমলাইটে চলে আসা এবং সরকারের মসনদে কাঁপন ধরিয়ে দেয়াটা। যদিও বিএনপিতে এখন যোগ্য কোনো নেতা নেই, কামাল-মান্নারাও তেমন দক্ষ না এবং যুক্তফ্রন্ট কেবল বিশেষ একটা পরিস্থিতিতেই নিজেদের ‘ঐক্যবদ্ধ’ করতে পেরেছে সাময়িক সময়ের জন্য। মূলত দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই ও সামগ্রিক জনকল্যাণধর্মী কোনো চিন্তা-পরিকল্পনার সক্ষমতা তাদের নেই। তা যে নেই তা বোঝার ক্ষমতাও তাদের দেখা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় যুক্তফ্রন্টের উত্থানে কেউ কেউ খুশি হলেও অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য ঘোর দুর্দিন অপেক্ষা করছে বলেই অনেকে মনে করছেন।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply