রবিবার সকাল ৯:৫১, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৫ই মে, ২০২৪ ইং

ক্রীড়াঙ্গনে কসবার শিমরাইলের তরুণ সমিতি ফুটবল মাঠ

৪২৩ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

উৎসর্গ: বিংশ শতাব্দীর ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম কুদওয়াতুছ ছালেকীন, জুবদাতুল আরেফীন, প্রফেসর পীর আব্দুল খালেক ছতুরাভী (র.) এর মুরিদগণের মধ্যে মাস্তান খেতাবে ভূষিত আমার মরহুম পিতা হাজী আব্দুল জব্বার বল্লভপুরী (র.)[১৯২৭-১৯৮৮] www.muktochintablog.com/blogpost/details/27468 এর পীর ভাই,এক সময়ের মাঠ কাঁপানো ফুটবল খেলোয়াড় ও খ্যাতিমান রেফারি শিমরাইল গ্রামের কৃতি সন্তান জনাব হাজী আব্দুর রশিদ সাহেবের করকমল তলে।

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধূলায় কসবা উপজেলার ২নং মেহারী ইউনিয়নের #শিমরাইল অন্যান্য গ্রাম গুলোর তুলনায় একধাপ এগিয়ে।বিশেষতঃ ফুটবল খেলায় এ গ্রামের খেলোয়াড়েরা বহু আগে থেকেই সুনাম ও সম্মান বয়ে এনেছেন। মেহারী ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের নামকরণের ইতিকথা bbariafinder.com/shimrail/ লিখতে গিয়ে গত একযুগ ধরে সংগৃহিত প্রতিটি গ্রামের জানা অজানা বহু তত্ত্ব ও তথ্য আমার স্মৃতির ভান্ডারে জমা রয়েছে।আমার তথ্য ভান্ডার থেকে শিমরাইল তরুণ সমিতি ফুটবল মাঠের কিছু কথা পাঠকের উদ্দেশ্যে নিবেদন করলাম।এতদ বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য শিমরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক জনাব,মো: মোসলেহ উদ্দিন ও লায়ন মো: আব্দুল খালেক সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

১৯৫৩ সালের কথা।শিমরাইল গ্রামের একদল টগবগে তরুণ সামাজিক নিরাপত্তা,দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও নির্মল বিনোদনের জন্য শিমরাইল তরুণ সমিতি নামে একটি সংগঠন করেন।যতদূর জানা যায়,এটিই গ্রামের প্রথম কোন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনের সদস্যরা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য একটি খেলার মাঠের অভাব বোধ করলেন।ওনাদের উর্বর মস্তিস্কে সুন্দর এক চিন্তা এলো।নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে একটি খেলার মাঠ তৈরির কথা ভাবলেন।একদিন বড়দের চোঁখ ফাকি দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে এক পরামর্শ সভার আয়োজন করলেন। শুরু হল সভা।কোথায় করা যায় খেলার মাঠ? কে জমি দিবে? কোথায় পাবো জমি? এ সকল প্রশ্ন ও চিন্তায় সবাই যখন অস্থির ঠিক তখনই আজকের ৯০ বছর উর্ধ্ব জনাব, হাজী আব্দুর রশিদ সাহেবের মাথায় এর সমাধান এসে ধরা দিল। তিনি মনে মনে আর্কিমিডিসের মতোই বলে উঠলেন ‘ইউরেকা’।পেয়েছি! পেয়েছি!মুহুর্তে উপস্থিত সকলের চোঁখে মুখে আনন্দ ঢেউ খেলে যায়।কারোরই আর তর সয় না।জানতে চায়, কী পেয়েছ? কোথাই খেলার মাঠ করা যায়?

শিমরাইল উত্তর পাড়া কবরস্থানের পাশে একটি পতিত খাস জমি আবিস্কার করলেন তারা।কিন্তু সুন্দর একটি খেলার মাঠ তৈরির জন্য খাস জমিটা পর্যাপ্ত ছিলনা।এমন একটি জমির সন্ধান পেয়েও ফের উপস্থিত সবার মন ভেঙ্গে গেল।পরক্ষণে উপস্থিত সকলের মলিন মুখে হাসি ফোটালেন জনাব, মরহুম আব্দুর রাজ্জাক পিয়ন সাহেব। ঐ খাস জমির পাশে ওনার দাদার বেশ কিছু জমি ছিল।তিনি বড় একটি মাঠের প্রয়োজনে তা বিনা পয়সায় দিবার প্রস্তাব রাখলেন।আর তাতেই বড় একটি মাঠ করার জন্য জায়গা জমির সমস্যার সমাধান হল নিমিষেই।

খাস জমিতে খেলার মাঠ করতে গেলে নানান বাধ্য আসতেই পারে।এমন চিন্তা থেকে সকল তরুণরা মিলে এক রাতের মধ্যেই উঁচুনিচু জায়গাটি ভরাট করে একটি বিশাল সমতল মাঠ তৈরি করে ফেললেন। সকালবেলা গাঁয়ের মুরুব্বিরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন, গ্রামের তরুণরা সংঘবদ্ধ হয়ে মাঠে ফুটবল খেলছে।আর সেই থেকে মাঠের নাম শিমরাইল তরুণ সংঘ ফুটবল মাঠ।শিমরাইল তরুণ সমিতি ফুলবল মাঠের যাত্রা শুরুর ইতিহাসটা এতটুকুই ।

শিমরাইল তরুণ সমিতি ফুলবল মাঠের অভিযাত্রী যে সকল দূরন্ত তরুণরা ছিলেন আজ অনেকেই বেঁচে নেই।অনেকের নাম উল্লেখ করাও সম্ভব হচ্ছে না। সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
✪ জনাব, হাজী আব্দুর রশিদ
✪ জনাব, মরহুম সিদ্দিকুর রহমান
✪ জনাব, মরহুম আব্দুল হাই
✪ জনাব, ফজলুল হক মাষ্টার
✪ জনাব, মরহুম আব্দুল মালেক দারোগা
✪ জনাব,ইন্সপেক্টর আব্দুন নূর (আমেরিকা)
✪ জনাব, মরহুম আব্দুর রাজ্জাক
(তিনি ডাক বিভাগে পিয়ন পদে চাকরি করতেন)

শিমরাইল তরুণ সমিতি ফুটবল মাঠ বহু তুখোড় খেলোয়াড় তৈরীতে অবদান রেখেছে বলে অনেকে মনে করেন।ফুটবল সহ নানা ধরনের খেলায় যে সকল ক্রীড়াবিদ শিমরাইল গ্রামের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম কয়জন হল:

✪ জনাব,মনির হোসেন (উত্তর পাড়)
✪ জনাব,রফিকুল ইসলাম (উত্তর পাড়া)
✪ জনাব,মোঃ মোসলেহ উদ্দিন
✪ জনাব, মরহুম অলী উল্লাহ অলী হোসেন
✪ জনাব, বায়েছ উদ্দিন (উত্তপাড়া)
✪ জনাব, হাফিজুর (উত্তর পাড়া)
✪ জনাব, ঠাকুর চাঁন (সাতপাড়া)
✪ জনাব, লায়ন আব্দুল খালেক (সাতপাড়া)
✪ জনাব, আবু হানিফ মাষ্টার (সাতপাড়া)
✪ জনাব, আব্দুর রশিদ (কাতার প্রবাসী)
✪ জনাব, মোস্তাফিজুর রহমান (সৌদি প্রবাসী)
✪ জনাব, আবু জাহের মাষ্টার (উত্তরপাড়া)
✪ জনাব, মুক্তিযোদ্ধা সূরুজ মিয়া (উত্তর পাড়া) প্রমুখ।

🤡 দৃষ্টি আকর্ষণ: সমালোচনা নয়; শিমরাইল তরুণ সমিতি ফুটবল মাঠ সম্পর্কে আপনার জানা যে কোন তথ্য দিয়ে লেখাটিকে আরো সমৃদ্ধ করতে অবদান রাখুন।

এস এম শাহনূর: কবি ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক

Some text

ক্যাটাগরি: বিবিধ

[sharethis-inline-buttons]

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি