রবিবার সন্ধ্যা ৬:৫৮, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৩রা নভেম্বর, ২০২৪ ইং

রেলের উচ্ছেদ অভিযানে দুর্বিষহ জীবন-যাপন ঠাকুরগাঁওয়ে ১৫০ পরিবারের ৫শ সদস্য

৩৫১ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

উচ্ছেদের দেড়মাস পেড়িয়ে গেলেও এখনো মাথা গোজার ঠাঁই মেলেনি রেল প্রশাসন কর্তৃক গুড়িয়ে দেওয়া ঠাকুরগাঁও রেল ষ্টেশনের ধারে বসবাস করে আসা ১৫০টি পরিবারের। এদিকে শুরু হয়ে গেছে শীতের আনাগোনা। এ অবস্থায় পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটছে পরিবারগুলোর।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও রোড রেল স্টেশনের জায়গা থেকে আবাসিক ভাবে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ । এতে ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনের আশে পাশে গড়ে ওঠা তালিকাভুক্ত ১৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে।

পূণর্বাসনের বন্দোবস্ত না করে এভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করায় সেসময় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে এগিয়ে যান তাদের সাহাযার্থে, প্রদান করেন নিত্য প্রয়োজনীয় চাল-ডাল-আলু ইত্যাদি। এদিকে উপায়ন্তর না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই গুড়িয়ে দেওয়া ধ্বংসস্তুুপের মাঝেই পলিথিন ও চটের বস্তা বিছিয়ে কোনরকমে রাত্রিযাপন করছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

তবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ৩ দিন পর তাদের সাহায্যে চাল-ডাল খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির হন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন। এসময় তিনি তাদের দূ:খ-দূর্দশার কথা শোনেন এবং দ্রুত পূণর্বাসনের আশ্বাস দেন। কিন্তু দেড় মাস অতিবাহিত হলেও সেরকম কোন অগ্রগতি না দেখতে পেয়ে হতাশায় দিনযাপন করছে তারা।

রোববার দিবাগত রাতে রেলষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সত্তোর্ধ লাল মিয়া একটি পলিথিন মোড়ানো ঝুপড়ির মধ্যে শুয়ে রয়েছেন। কারোও গলার আওয়াজ পেলে চোখ মেলে তাকিয়ে একটিই অনুরোধ জানান “বাবারা আমাদের বাঁচার একটা গতি করে দেন, আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করবে”।

পাশেই আরেক পলিথিন মোড়ানো ঘরে বাস করেন বয়োবৃদ্ধ হাসমত ও ফজিরন। ক্যামেরা ও লোকজন দেখে তারা প্রথমে ঘাবড়ে যান, এই বুঝি তাদের তাড়িয়ে দিতে এসেছে কেউ। অনেকটা ভয়ে ভয়ে বললেন বাবারা আমাদের যাওয়ার তো কোন জায়গা নাই, তাই এখানেই কোনমতে পড়ে আছি।

শুধু লাল মিয়া, ফজিরন বা মিলন মিয়া নয় এমন দূর্দশায় রয়েছে উচ্ছেদ হওয়া দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের ১৫০টি পরিবারের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভাধীন ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুদ্দৌলা সাহেব জানান, উচ্ছেদ অভিযানের দিন থেকে এসব অসহায় পরিবারদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করে আসছি। তারা নিদারুন কষ্টে দিনযাপন করছে।

এ বিষয়ে জানতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উচ্ছেদ অভিযানের পরপরই আমি সেখানে গিয়েছিলাম, তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছি। এছাড়াও তাদের পূণর্বাসনে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করি খুব অল্প সময়েই তাদের পূণর্বাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হবে।

Some text

ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি