![](https://www.old.deshdorshon.com/wp-content/uploads/2019/05/Jaha-02-copy-750x420.jpg)
আসসালামুয়ালাইকুম, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যের একটি হলো শিশুদের স্নেহ করা। এটা ইসলামও শিক্ষা দেয়। আমাদের রাসূল (সাঃ) শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সমাজের ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নিচু, সাদা-কালো সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখতেন। সকল মানুষের কল্যাণে তিনি নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। শিশুদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহার ছিল স্নেহপূর্ণ, কোমল এবং বন্ধুসূলভ।
তিনি তাদের হাসি আনন্দে যোগ দিতেন। ছোটদের চপলতায় তিনি কখনও অসন্তষ্ট কিংবা বিরক্ত হতেন না। রাসূল (সাঃ) তাদের সাথে সবসময় হাসিমুখে কথা বলতেন। শিশুরা তাঁর কাছে এলে নিজেদের সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে যেতো। আমাদের প্রিয় নবীর শিশুপ্রীতি সম্পর্কেএকটি ঘটনা শোনা যাক। একদিন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) খেতে বসেছিলেন। কিন্তু খানা তখনও শুরু করেননি। উম্মে কায়েস বিনতে মুহসিন (রাঃ) তার শিশুপুত্রটিকে কোলে করে রাসূলের সাথে দেখা করতে আসলেন। শিশুটিকে দেখে রাসূল (সাঃ) তার দিকে এগিয়ে এলেন। পরম আদরে কোলে তুলে নিয়ে খাবারের জায়গায় গিয়ে বসলেন।
শিশুটি নবীজীর আদর পেয়ে তাঁর কোলেই পেশাব করে ভিজিয়ে দিলো। রাসূল (সাঃ) স্মিত হাসলেন। চেহারায় বিরক্তি প্রকাশ পেলো না। তিনি পানি আনার জন্য একজনকে বললেন। পানি আনা হলে যে যে জায়গায় পেশাব পড়েছিল সেখানে পানি ঢেলে দিলেন। রাসূলেখোদা মনে করতেন, বাগানের ফুল যেমন পবিত্র, মায়ের কোল থেকে নেয়া শিশুও তেমনি পবিত্র। রাসূলে খোদা বলেছেন, “তোমরা শিশুদেরকে স্নেহ কর এবং তাদের প্রতি দয়ালু রাসূল (সাঃ) শিশুদের সাথে খেলতেন এবং এমনকি তাদের খেলনা ও পোষা প্রাণীরও খবর নিতেন ৷ তিনি তাঁদের সাথে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে ও নীচু কন্ঠে কথা বলতেন ৷
বিশেষ করে নাতি ইমাম হাসান ও হোসাইনের প্রতি রাসূলের ভালোবাসা ও স্নেহের কথা কম বেশী সবাই জানে ৷ মহানবী (সাঃ) তাঁর এ নাতিদের সাথে খেলাধুলা করতেন এবং অন্যদের সামনে তাদের চুমু দিতেন ৷ তিনি প্রতিদিন তাঁদের সান্নিধ্য দিতেন ৷ আর এভাবে তিনি মুসলমানদের বাস্তবে শিখিয়ে গেছেন যে,কিভাবে শিশুদের সাথে ব্যবহার করতে হয় ৷ শিশুদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, তাদের সাথে আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা রাসূলেখোদার জীবনী থেকে জানলাম।
কিন্তু অনেক অভিভাবক আছেন যারা শিশুদের সাথে কোমল আচরণ করেন না, তাদের কথাও মনোযোগ দিয়ে শোনেন না। কেবল হু,হা করে যান। এমন আচরণ করলে শিশুরা কষ্ট পায়। আর এটা ইসলামী আদর্শেরও পরিপন্থী। মনে রাখতে হবে, ঘর সাজাতে হলে শিশু প্রয়োজন। যত মূল্যবান আসবাবপত্র দ্বারাই গৃহ পূর্ণ করা হোক না কেন, একটি শিশু ঘরটিতে যত জীবন্ত, আনন্দময় এবং সুন্দর করে তোলে, অতি মূল্যবান আসবাবপত্রও তার তুলনায় মূল্যহীন। তাই আমাদের সবাইকে শিশুদের প্রতি আন্তরিক ও স্নেহশীল হতে হবে। তো, আমরা সবাই রাসূল (সাঃ) এর নির্দেশিত আদর্শ পরিবার গঠনে ভূমিকা রাখবো-এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। সবাইকে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা৷
জাহাঙ্গীর আলম বিপ্লব : সহ-সম্পাদক, দেশ দর্শন
Some text
[sharethis-inline-buttons]