![](https://www.old.deshdorshon.com/wp-content/uploads/2019/02/Brahmanbaria-Khal-pic-227-08-2016-2.jpg)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পরিবেশ রক্ষায় যে খালটি শহরকে মায়ের মত আগলে রেখেছে, সেই খালটিকেই আমরা নিজ হাতে সুস্থমস্তিষ্কে নির্মমভাবে হত্যা করছি। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিবেশকে হত্যা করার ক্ষেত্রে পৌর সভার দায়িত্বজ্ঞানহীন অযোগ্য দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের ভূমিকা সব সময় সামনের সারিতে থাকে। পৌর সভার নাকের ঢগা দিয়ে বয়ে চলা পৌর খালটিরই যদি এই হাল হয়, তাহলে শহরের বাকি ছোট বড় খাল ও ড্রেন গুলোর কি অবস্থা হবে তা সহজে অনুমেয় নয় কি?
পরিবেশবাদী ও আজ যেন অন্ধের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর জনগনের টেক্সের টাকা লালিত পালিত পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ হত্যার মূল কারিগররা তো এক বছর পর পর ১০ মিনিটের একটি র্যালীতে অংশ নিতে পারলেই বারো মাস ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মোটা অংকের বেতন ভাতা পাওয়ার নিশ্চয়তা মিলে যায়। সব মিলিয়ে রাষ্ট্র নিজেই আজ রাষ্ট্র ধ্বংসের আয়োজনে ব্যস্ত।। আগামী প্রজন্মকে আমরা কি দিয়ে যাচ্ছি ? এই প্রশ্ন থেকেই যায়।
আমার বাড়ির সামনে ড্রেনের ছবিটিও আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সকালে বিবেকের সামনে তুলে ধরলাম। এই ড্রেনটি গত কয়েক মাস যাবৎ পরিষ্কার করা হয় না। কিন্তু কেন? আমরা কি পৌর কর, ট্রেড লাইসেন্স ফিসহ আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া কোনোটা না দিয়ে পারছি? বিনামূল্যের জন্ম নিবন্ধন ফি নেওয়া হচ্ছে ৩০০/৫০০/ টাকা, ২০০ টাকা ট্রেড লাইসেন্স ফি নেওয়া হচ্ছে ৮০০-/১২০০/ টাকা।
আমাদের কষ্টার্জিত টাকাগুলো যাচ্ছে কোথায়? কেনইবা একটি ড্রেন ৩/৪ মাস ধরে পরিষ্কার করা হচ্ছে না? আমাদের গ্রামের পুরুষ/মহিলা মিলিয়ে ২ জন কাউন্সিলর রয়েছে। তারা কী করছে? পরিবেশ রক্ষায় দায়বদ্ধতা বলতে কি তাদের কিছুই নেই? যেসব জনপ্রতিনিধির চোখের সামনে দিয়ে নির্মমভাবে ধ্বংস হয় আমাদের পরিবেশ, সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠাটা কি অস্বাভাবিক?
আমরা দূষণমুক্ত পরিবেশ চাই। আজ ভারি বৃষ্টি হলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর খালসহ অন্যান্য ছোট বড় খাল ও ড্রেন থেকে যে হাজার টন বর্জ্য আমাদের প্রাণের তিতাস নদীতে গিয়ে নদীর তলদেশ দখল করে মাছের বংশ বিস্তার রোধ করা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করবে। এর দায় কে নেবে ? পৌর সভার দায়িত্বরত কেউ বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বজ্ঞানহীন কারো উপরে কি এই অপরাধের দায় বর্তাবে?
যাদের দায়িত্ব অবহেলায় কারণে ধ্বংস হচ্ছে আমাদের চারপাশের পরিবেশ সেই সব পরিবেশ বিরোধী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরীচ্যুতিসহ আইনের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে কি? আমাদের পরিবেশ আদৌ বাঁচবে কি ? আগামী প্রজন্ম বাচার জন্য শ্বাস নিতে পারবে কি? এই প্রশ্নের উত্তর পাবো কি না জানিনা। তবে একটি দেশ এমন করে চলতে থাকলে আগামী যে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে দৌড়াচ্ছে এটা সহজেই অনুধাবনীয়।
আসুন আমরা আমাদের নাগরিক অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হই। অন্যথায় কিছু অযোগ্য ও দায়িত্বজ্ঞানহীন দানবের হাত ধরেই ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের পরিবেশ। বসবাসের অযোগ্য হবে প্রিয় মাতৃভূমি।
মাহফুজুর রহমান পুষ্প : সমাজকর্মী ও অনলাইন এক্টিভিস্ট
Some text
ক্যাটাগরি: খবর, নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]