বৃহস্পতিবার বিকাল ৪:৪৪, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

মাংস খাওয়ার ঈদ কোরবানি ঈদ।

১২৬১ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

কোরবানি নিয়ে ওয়াজ করার ইচ্ছা নাই। কোরবানির ওয়াজ সবারই মুখস্থ।
কিন্তু কষ্ট হয় যখন দেখি আমরা মুসলমানদের “Sence Of Islam” দিন দিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
জিলহজ্ব মাসের সময় রাসূলুল্লাহ সাঃ ও তাঁর সাহাবীগণের কার্যক্রম আর আমাদের কার্যক্রম সম্পূর্ণই বিপরীত।
তেমনি কিছু বিষয় তুলে ধরতে চেষ্টা করবো।
১। কোরবানি একটি আনুষ্ঠানিক ও সামাজিক ইবাদত। তবে সাবার জন্য বাধ্যতামূলক ইবাদত নয়। কিন্তু আমাদের বর্তমান সমাজে দেখা যায়, “লোকে বা সমাজে কি বলবে” এই ভেবে অনেকেই কুরবানি দিচ্ছেন, যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব বা ফরজ কোনটাই নয়। অনেকে আবার ভাবে মেয়ে/ছেলে নতুন বিয়া করাইলাম, “একটা বড়সর গরু না দিলে তো ইজ্জত থাকে না।”
২। সকল ইবাদতের একমাত্র উদ্দেশ্যে আল্লাহ্‌ তা’য়ালার সন্তুষ্টি লাভ। এবং লোক দেখানো মনোভাব থেকে বিরত থাকা। যাকে ইসলামী পরিভাষায় “রিয়া” বলা হয়। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে “পাশের বাড়ির আক্কল মিয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বড় গরু কেনা, মহল্লায় সবচেয়ে দামী গরু কিনে আলোচনায় আসা এগুলো এখন ফ্যাশনের অংশ হয়ে গেছে। মাংস বিলি করে বুক ফুলিয়ে বলা “কত কত মাংস দান করেছি।”
— আরো ভয়াবহ হচ্ছে ছেলে-মেয়েদের “হাম্বা সেলফি” “কাউফি” প্রবণতা। যা লোক দেখানোর একটা বড় মিডিয়াম। এবং অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধি করতে “হাম্বা সেলফির” আয়োজন করছে, যা সহজে মানুষকে লোক দেখানো ইবাদতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখানেই পুঁজিপতিদের সফলতা, আর কথিত ধার্মিকদের অজ্ঞতা। অনেক বিখ্যাত আহাম্মকেরা তো দামও উল্লেখ্য করে সেলফির সাথে। আরো লজ্জার বিষয় “জবাইকৃত পশুর ওপরে উঠে কিছু পশুদের সেলফিও নিতে দেখা যায়।”
৩। মাংস বন্টন করা। আমরা অধিকাংশ মুসলিমই ইবরাহীম আঃ এর কোরবানি মানসিকতার মাইল খানেক ধারে কাছেও নাই। আল্লাহ্‌ তা’য়ালা প্রিয় বস্তু কোরবানির অর্থাৎ ত্যাগ করার কথা বলেছেন। আর আর আমরা ত্যাগের পরিবর্তে ৬০০০০-১০০০০০ টাকার পশু জবাই করে তা “ফ্রিজিং” করি। ভাই এটা তো ত্যাগ না এটা হলো ইনভেস্টমেন্ট। প্রতিদিন বাজার করে যেমন খাবার সংরক্ষণ করি তেমনই।
৪। যেটা আগে উল্লেখ্য করা উচিত তা পরেই উল্লেখ করছি। কোরবানি ঈদে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি জিলহজ্ব মাসের হুকুম-আহকাম, বিধি-বিধান না জেনে। আমারা অধিকাংশ মুসলিমরা জানিই না, এই মাসের ফযীলত, নফল রোজা ইত্যাদি সম্পর্কে। এগুলোর চর্চা আমরা পুরোপুরি ত্যাগ করে শুধু গোশত খাওয়ার চর্চাটা বাঁচিয়ে রেখেছি।
—- এরকম নানান সমস্যা দিনদিন আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধের সূক্ষাতিসূক্ষ অনুভূতির ক্ষতি করে চলেছে। যার ফলে ধীরে ধীরে ইসলাম একটি আচার সর্বস্ব ধর্মে রূপান্তরিত হচ্ছে ॥ আমারা যারা এখনো সজাগ তাদের উচিত এই সকল বিষয়ে সচেতনতামূল কাজের প্রসার ঘটানো ও ঘুমন্তদের জাগিয়ে দেয়া।
—- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জ্ঞান চর্চা। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে জিলহজ্ব মাসের ও কোরবানি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ জেনে নেয়া। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে তথ্য জানা অনেক সহজ। আপনি YouTube, Google ও অন্যান্য ভালো ইসলামিক ওয়েবসাইট থেকেও ঘরে বসে জানতে পারেন। পাশাপাশি আপনার চারপাশে বিশুদ্ধ আলেমরা তো আছেনই।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি