শুক্রবার সকাল ৮:৫১, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

স্রোতের বিপরীত ভাবনা: পুনর্জন্ম

দেলোয়ার হুসাইন

বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। এই দেশের বেশির ভাগ মানুষ মুসলমান হলেও বিভিন্ন কথা, রীতি-নীতি, অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমরা (তথাকথিত মুসলমান) হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের মতবাদকেই মনেপ্রাণে ধারণ ও প্রকাশ করি।

স্রোত হচ্ছে একটি গতি, যার গন্তব্য নিম্নদিকে। স্রোত শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে যে দৃশ্যটি ভেসে উঠে তা হচ্ছে খাল, নদী বা নিচু কোনো জায়গা দিয়ে আরো নিচের দিকে বয়ে যাওয়া পানি। তবে স্রোত বলতে শুধু নিম্নগতির পানিকেই বোঝায় না, আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা , কালচার, আচার আচরণও একটি স্রোত, যার গতি নিচের দিকে।

স্রোতের সাথে চলতে কোনো শক্তির প্রয়োজন হয় না। যেমন একটি খড়কে পানির স্রোতে ছেড়ে দিলে তা স্রোতের সাথে নিচের দিকে এমনিতেই চলতে থাকে। কিন্তু স্রোতের বিপরীত দিকে চলতে প্রয়োজন হয় শক্তির।  ক্ষেত্রবিশেষে প্রচণ্ড শক্তির। আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা, রীতি-নীতি, আধুনিকতা, আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন- কারো মৃত্যুতে চল্লিশা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নারী পুরুষ এক সাথে দোয়া, পূজা, বিয়েতে গায়ে হলুদ ও বিভিন্ন নিয়ম, জন্মদিন পালন ইত্যাদি বিষয়গুলো কেবল ভুলই নয় বরং একটি বিপদগামী স্রোত।

অথচ বেশির ভাগ মানুষই সেগুলোকে ভুল বা বিপদগামী স্রোত মনে করে না, বরং সেগুলো পালন না করাই খারাপ মনে করে। কিছুসংখ্যক মানুষ সেগুলোকে ভুল বা খারাপ মনে করলেও নিজেরাই সেগুলো পালন করে ভুল বিষয়গুলোর ভিত্তি আরো শক্ত ও মজবুত করে যাচ্ছে। আর অল্পসংখ্যক মানুষ সেগুলো থেকে বিরত থাকছে ও নিজের অবস্থান থেকে সে ভুলগুলো সমাজ থেকে অপসারণের চেষ্টা করছে। আমি এখন থেকে চেষ্টা করবো ধারাবাহিকভাবে সেই ভুলগুলো তুলে ধরার।

এক. পুনর্জন্ম

‘পুনর্জন্ম বলতে কোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর মৃত্যুর পরেও আবার নতুন কোনো দেহে তার আত্মার জীবিত হওয়াকে বোঝায়। এটি একটি ধর্মীয় মতবাদ যা প্রধানত জৈন, বৌদ্ধ, হিন্দু, শিখ প্রভৃতি ধর্মে প্রচলিত। বিভিন্ন সময়ে নানা দার্শনিক এবং গবেষকগণ গবেষণা করলেও এটি বৈজ্ঞানিকভাবে একেবারে নির্ভুল বলে প্রমাণিত হয়নি।’ তথ্য: উইকিপিডিয়া

স্রোতের সাথে চলতে কোনো শক্তির প্রয়োজন হয় না। যেমন একটি খড়কে পানির স্রোতে ছেড়ে দিলে তা স্রোতের সাথে নিচের দিকে এমনিতেই চলতে থাকে। কিন্তু স্রোতের বিপরীত দিকে চলতে প্রয়োজন হয় শক্তির।  ক্ষেত্রবিশেষে প্রচণ্ড শক্তির।

বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। এই দেশের বেশির ভাগ মানুষ মুসলমান হলেও বিভিন্ন কথা, রীতি-নীতি, অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমরা (তথাকথিত মুসলমান) হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের মতবাদকেই মনেপ্রাণে ধারণ ও প্রকাশ করি। এমনই একটি মতবাদ হচ্ছে পুনর্জন্ম। কয়েকদিন আগে এক বোন তার ফেসবুক আইডির একটি পোস্টে পুনর্জন্মের কথা বলেছিলেন। আমি কমেন্টে বিষয়টা বলার পরে উনি লেখাটি সম্পাদনা করেছেন, আলহুমদুলিল্লাহ।

ইসলামে পুনর্জন্ম বলতে কিছু নেই। যারা পুনর্জন্ম বিশ্বাস করে তাদের অনেকের ধারণা- একজন মানুষ জন্মগ্রহণের পর যদি ভালো কোনো কাজ করে, তাহলে সে সেই ভালো কাজের ফল হিসেবে পুনর্জন্মে হয়তো ভালো কোনো পরিবারে জন্মগ্রহণ করবে বা ভালো রূপে জন্মগ্রহণ করবে। অর্থাৎ সে আগের ভালো কাজের ফল পরের জন্মে পাবে।

আরো পড়ুন> আমাদের ট্রেন্ডিং লাইফ

হিন্দু ধর্মানুসারে মানুষ বা প্রাণীর দেহের মৃত্যু হয়, আত্মা চিরস্থায়ী ও অবিনশ্বর। আত্মা সর্বদাই জীবন চক্রাকারে আবর্তিত হয় অর্থাৎ একবার মৃত্যুবরণ করলে আবার পুনর্জন্ম গ্রহণ করে পৃথিবীতে আসে। ইসলাম ধর্ম অনুসারে ব্যক্তি বা প্রাণী ইত্যাদি কোনো কিছুরই পুনর্জন্ম হয় না। সকল ব্যক্তি বা প্রাণীর শুধু একটাই জীবন এবং মৃত্যুর পরে আল্লাহ তার বিচার করবেন এবং সে সৎ হলে তাকে পুরস্কারস্বরূপ জান্নাত এবং অসৎ হলে শাস্তিস্বরূপ জাহান্নাম দিবেন। অতএব একটি বিষয় পরিষ্কার, আমাদের (মুসলমানদের) পুনর্জন্ম বিশ্বাস বা ‘কথার কথায়’ বলা থেকেও বিরত থাকতে হবে।

চলবে…

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এ লেখকের পরবর্তী বিষয়: ১. পুনর্জন্ম, ২. বার্থডে (জন্মদিন) পালন, ৩.  গায়ে হলুদ, ৪. সমঅধিকার, ৫. বর্তমান শিক্ষ্যাব্যবস্থা, ৬. লাকী নাম্বার ও লাকী প্রোডাক্ট ইত্যাদি। -বিভাগীয় সম্পাদক

 

লেখক: দেলোয়ার হুসাইন

চেয়ারম্যান: অপটিমাম আইটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ক্যাটাগরি: প্রধান কলাম

ট্যাগ: দেলোয়ার হুসাইন

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply