বৃহস্পতিবার রাত ৯:৩৬, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

প্রোজ্জ্বল পাণ্ডুলিপি

৩৮৪ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

বলনা কী নামে তোমারে ডাকি?

আলহামদুলিল্লাহ। আজ আমাদের দাম্পত্য জীবনের আর্শীবাদ প্রিন্সেস সামীহা নূর জারা’র বয়স ১ মাস পূর্ণ হলো।

🌹ছৈয়দা জান্নাতুল রাবেয়া নাম রাখার প্রস্তাবনা পেশ করেন–সামীহার ছোট খালা মনির (সুমির) বড় মেয়ে লামিয়া।

🎂আর ছোট মেয়ে মুনিয়ার পক্ষ থেকে “মাহিয়া আক্তার তাহিয়া”– এই নামকরণের ইচ্ছা পোষণ করা হয়।

🌹খোদ ছোট খালা মনি হালিমা শরীফ সুমি নিজেই “নাওশীন অানজুম আমাতুল্লাহ্”এই নাম রাখার পক্ষে মতামত দেন।যার অর্থ দাড়ায়
সুন্দর-তারা -আল্লাহর বান্দি।

🎂সামিয়া জাহান নূর নাম রাখার জন্য প্রস্তাব এসেছে সামীহার ছোট ফুপির কনিষ্ঠ ছেলে তকীর পক্ষ থেকে।

🎁মেজু চাচার ছোট্ট মেয়ে হামিম নিজের নামের সাথে মিল রেখে নবজাতক বোনের নাম রাখেন তামিম।

🌹আর নানা ভাই ২নং মেহারী ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান জনাব,শরীফ এ কে এম শামসুল হক নাতনির নাম রাখেন সোনিয়া।

🎂আর সামীহার নানু মণি বড় মেয়ের কোলে আলোকিত নাতনির নাম রাখেন শান্তা।এমন নামকরণের পিছনে রয়েছে ছোট্ট এক সুখের গল্প।গল্পটি হল: আমাদের সাদামাটা,শান্ত ধীর দাম্পত্য জীবনের রুটিন দেখে আমার শাশুড়ি বিয়ের পর থেকেই কখনো সখনো মজা করে আমাকে শান্তার বাপ আর উনার মেয়েকে শান্তার মা বলে সম্বোধন করতেন।মহান আল্লাহর রহমতে আমাদের কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ার সংবাদে আমার শাশুড়ির ছোট মেয়ে সহ অনেক নিকটাত্মীয়রাই নাকি খুশী হয়ে সুকরিয়া আদায় করে উনাকে বলেছেন,”আপনিতো আগেই নাতনির বাবা মা কে শান্তার বাপ,শান্তার মা বলতেন, তাইতো কন্যা হয়েছে।ভালই হলো,আপনি একজন বান্ধবী পেলেন।”

🌹🌹স্বেচ্ছায় এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে নাম দিয়ে যিনি এবং যাহারা ভালবাসা প্রকাশ করেছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতার সহিত ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।মহান আল্লাহ আমাদের সকল ভাল কাজে সহায় হউন।আমীন।

২৪ নভেম্বর ২০১৭, ৭নং জলিল মেম্বার বাড়ি, বিজয়পথ, খিলবাড়িরটেক,ঢাকা।

 

নামকরণ ও আকীকা সম্পন্ন

আলহামদুলিল্লাহ।
আমাদের দাম্পত্য জীবনের আর্শিবাদ একমাত্র কন্যা সন্তানের অাকীকা সম্পন্ন করে নাম রাখা হলো- সামীহা নূর জারা।
আরবী অভিধানে -সামীহা অর্থ মহানুভব,নূর মানে আলো,জারা মানে বেহেশতি ফুল/প্রজাপতি/তারা/রাজকুমারী।
নবজাতক শিশু জন্ম গ্রহণ করার পর সন্তানের পিতা-মাতা বা তার অভিবাবকের উপর আকীকার বিধান ইসলামের সৌন্দর্যময় বিধান সমূহের মধ্য হতে অন্যতম একটি বিধান।
🌴আকীকার অর্থঃ ﺗﻌﺮﻳﻒ ﺍﻟﻌﻘﻴﻘﺔ ইসলামের পরিভাষায়, সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পর আল্লাহর শুকরিয়া ও আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে পশু জবাই করা হয়, তাকে আকীকা বলা হয়।

🌴আকীকার হুকুমঃ ﺣﻜﻢ ﺍﻟﻌﻘﻴﻘﺔ অধিকাংশ আলেমের মতে সন্তানের আকীকা করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। রাসূসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
( ﻣﻦ ﺃﺣﺐ ﻣﻨﻜﻢ ﺃﻥ ﻳﻨﺴﻚ ﻋﻦ ﻭﻟﺪﻩ ﻓﻠﻴﻔﻌﻞ )
“যে ব্যক্তি তার সন্তানের আকীকা করতে চায়, সে যেন উহা পালন করে”। (আহমাদ ও আবু দাউদ)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আরও বলেনঃ ( ﻛﻞ ﻏﻼﻡ ﺭﻫﻴﻨﺔ ﺑﻌﻘﻴﻘﺘﻪ ) অর্থ: প্রতিটি সন্তানই আকীকার বিনিময়ে আটক থাকে”। (আহমাদ, তিরমিজী ও অন্যান্য সুনান গ্রন্থ)
🌴আকীকা করার সময়ঃ
ﻭﻗﺖ ﺍﻟﻌﻘﻴﻘﺔ আকীকার জন্য উত্তম সময় হলো সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিবস। সপ্তম দিনে আকীকা দিতে না পারলে ১৪ম দিনে, তা করতে না পারলে ২১ম দিনে আকীকা প্রদান করবে। সপ্তম দিনে আকীকা করার সাথে সাথে সন্তানের সুন্দর নাম রাখা, মাথার চুল কামানো এর সমপরিমাণ ওজনের রৌপ্য ছাদকাহ করাও মুস্তাহাব(তিরমিযি)।

২নভেম্বর ২০১৭, বিজয়পথ, ঢাকা।

 

 

 

পিতা না হতে পারার বেদনা
আব্বু ডাক শুনার আনন্দ।।

আমার স্ত্রী বলেন,”পৃথিবীতে মাতৃত্বের মত মধুর অনুভূতি দ্বিতীয়টি নেই”।আমার কাছে পিতা না হতে পারার বেদনা হিমালয় আল্পসের জমাট বাঁধা বরফ সম।যা কখনো গলে শেষ হবার নয়।আমাদের দাম্পত্য জীবনের স্নেহাস্পদ সামীহা নূর জারা’র মুখে আব্বু ডাক শুনার আনন্দানুভূতি সাতসাগর ঊর্মিমুখর।আকাশে প্রতি রাতে চাদ তার মাধবী রূপ নিয়ে হাজির হয়না কিন্তু আমার ঘরে প্রতি রাতে মায়াবী চাদের জোছনা উপচে পড়ে।মেঘে ঢাকা আকাশ কিংবা সূর্যগ্রহণ আমার ঘরের ঝলমলে দিনের আলোকে ম্লান করতে পারেনা। দীর্ঘ দিন চীনের হোবে প্রদেশে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের কোমলমনা বাচ্চাদের হইহুল্লোড় খুব কাছ থেকে দেখেছি।স্কুল গেইটে রেখে যাওয়া ছোট্ট বেবিটির সাথে মা কিংবা বাবার বিদায় আলিঙ্গন আমাকে গভীর আবেগাপ্লুত করত। পিতৃত্বের হাহাকার বালুকাময় জীবনের তীরে কখনো কখনো ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়ত।পৃথিবীর অবাক শহর বৈরুতের কসমো সেন্টারে আন্ডা বাচ্চাদের খেলা উপভোগ করেছি।

মাঝেমধ্যে মনে হত আহা! আমার যদি এমন ফুটফুটে একটা বেবী থাকত!
সাইপ্রাসীয় মাই মলের কিডস জোনে আহ্লাদিত সোনামণিদের নানান রঙের খেলনার সাথে পরিচিত হয়েছি।সিঙ্গাপুরের চিল্ড্রেন হেভেনে সুন্দর সব কিডস টয়েস দেখে আহত হয়েছি।জাপানে চারতলা বিশিষ্ট চিলড্রেন্স টয় মার্কেট Hakuhinkan Toy Store ও Hakuhinkan Toy Park ভাবিয়েছে ঢের। জানি অনেক রাইড আর টয়েস আছে যা কিনা কোম্পানি আমার বেবীর জন্য তৈয়ার করেনি কিংবা ক্রয় করার ইচ্ছেও আমার নেই।অথবা আমার মানিব্যাগে সেই পরিমাণ ডলার কখনো রাখা হয়না।ইটস ডাজ নট এ মেটার। কি মালয়শিয়ার মাইডিন,তুরস্কের তারসুস,সিঙ্গাপুর সিটি যখন যেখানে গিয়েছি বুড়ো আর শিশুদের সাথে পেতেছি মিতালী।

আজ কিংবা এখনও যমুনা ফিউচার পার্কের কিডস প্যারাডাইস কিংবা ল্যাভেন্ডারের কিডস জোন কাজের ফাকে,অবসরে আমাকে ডাকে।মন চায় সবগুলো খেলনা কিনে ফেলি মেয়ের জন্য। এটা সেটা কেনাকাটা করলেও মনভরে না।যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীতে পিতা মাতা অর্থাৎ এডাল্ট মানুষজনের নিকট শ্রেষ্ঠ খেলনা সামগ্রী কি?আমি বলব নিজ শিশু সন্তান বা যেকোন শিশু বাচ্চা।কারণ,আমার সন্তানকে খেলনার ঝুড়ি আর পুতুল দিয়ে বলি,”সামীহা এই পুতুলগুলো হচ্ছে তোমার খেলার পুতুল আর তুমি হলে বাবার খেলার পুতুল।এসো আমরা খেলা করি।তখন মেয়ে আমার আনন্দে নিজের মত করে ঝর্নার মত নানান শব্দ ছড়ায়।বাবা মেয়ের এ খেলা কখনো শেষ হতো না যদিনা মেয়ের চোঁখে কিংবা বাবার চোঁখে ঘুম না আসতো। মেয়ের পেটে ক্ষুধা না পেত। অথবা বাবার অফিস না থাকতো………

হে আল্লাহ আমাদের সকলকে চক্ষু শীতলকারী নেক সন্তান দান করুন।আমিন।ছুম্মামিন।

২২জানুয়ারী ২০১৮,বিজয়পথ,ঢাকা।

 

চাঁদের হাসি তোর কাছে বড়ই বেমানান,
সামীহা নূর জারা বাবার প্রাণের পরাণ।

অফিস থেকে বাসায় ফিরেই ছুটে যাই মেয়ের ঘরে।মেয়ের মা আল্লাদি করে মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার দায়িত্ব শেষ এবার জারা সোনামণি তার বাবার সাথে খেলা করবে”। ক্ষুধার সংকেত পাওয়া মাত্র মেয়েকে খাওয়ানো,জামা চেঞ্জ করে দেওয়া,ন্যাচারাল কল সংশ্লিষ্ট ডায়াপার/ওয়েট টিস্যুর যথার্থ ব্যবহার,নিজ কাঁধে ওর মাথা রেখে গল্পের মুগ্ধতায় ঘুম পাড়ানো,সার্বক্ষণিক নার্সিং, হাইজিন ও সেফটি মেন্টেন্যান্স এবং চেষ্টা থাকে ‘না যেন লাগে রাজকন্যার গায়ে শীতের হিমেল পরশ’।আমার সরব উপস্থিতিতে একারণেই মেয়ের যুদ্ধ বিধ্বস্ত মায়ের মনে স্বস্তি ফিরে আসে।কখনো সখনো মুখে একটু হাসি ছড়িয়ে সটকে পড়েন অন্য কাজে।

আমি নিঃশব্দে মেয়ের পাশে যাই।আস্তে করে বসি। আমার দু’চোঁখ রাজকন্যার দুচোঁখে রাখি।বাবা মেয়ের চার চোঁখ অপলকে করে দেখাদেখি। মেয়ে আমার চোঁখ সরায় না,কোন শব্দ করে না,হাত পা নাড়ায় না,চাঁদপানা মুখে একটুও হাসে না।লোকালয়ে চলে আসা দলছুট হরিণ শাবকের মত চেয়ে রয়। যেন ভিন গ্রহের কোন অপরিচিত এক এলিয়েন আমি। আসলে দীর্ঘ সময় আমাকে কাছে না পাওয়ায় এটি তার মনের ভিতর জমে থাকা পুঞ্জিভূত অভিমান। আমিও তার মত এমন একটি ভাব করি যেন,ভাজা মাছটিও উল্টিয়ে খেতে জানিনা। আমার মনমরা নির্বাক মুখ আর বোকার মত তাকিয়ে থাকা নিষ্পলক চোঁখ দেখে মেয়ে আমার তার সারা মুখে,রাঙা ঠোঁটে হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে ফিক করে হেসে ফেলে। হি হু হি হু…..হু হু হু….(এমন) শব্দ করতে করতে আনন্দে হাত পা ছুটাছুটি করতে থাকে।চুম্বকের আকর্ষণে লৌহ কণাগুলো যেমন কাছে আসে ঠিক আমরাও তাই। যেন কত যুগ ধরে তার আমার পরিচয়। তার হাসির সৌন্দর্যময় রূপের কাছে পূর্ণিমারচাঁদ বড়ই ম্লান,সাগরের ঢেউ কিংবা ঝর্ণার ছন্দ নিষ্প্রাণ। সবুজ বনানী,রংধনুর রূপ বড্ড বেমানান। তৎক্ষনাত দু’হাত বাড়িয়ে প্রেমাবেগে মেয়েকে বুকে টেনে নেই। আমি যতবারই বলি,তুমি কি সামীহা নূর জারা?
মাত্র আড়াই মাস বয়েসী মেয়ে আমার ততবারই জবাব দেয়,হ হ হ।
মেয়েকে আদর করার সময় আমার জান্নাতবাসী পিতা মাতার কথা মনে পড়ে। উনারাও নিশ্চয়ই এমন যত্ন আর আদর সোহাগে আমাদের লালন পালন করেছিলেন। মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ ‘আল্লাহুম্মা রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা’।

৯ জানুয়ারি ২০১৮, ৭নং বিজয়পথ,ঢাকা।

 

তাঁর ভাষা বুঝার আশায়……..

জন্মের পর সামীহা নূর জারা প্রয়োজন অপ্রয়োজনে তেমন একটা বেশী কান্না কাটি করেনি।যখন পেটে খিদে পেতো তখনই ঘুম ভাঙত। অন্যথায় সারাক্ষণ ঘুমের রাজ্যে বিভোর থাকতো আমার রাজকন্যা।মাতৃগর্ভে শিশু অনায়াসে যে খাবার পায় প্রসবের পর তার জন্য সেই খাবার গ্রহন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়।জন্মের পর শিশুর প্রথম ভাষা হলো কান্না। নব জাতক শিশুর কান্নার ধরনই বলে দেয় সে কি চায়। আনন্দ,ক্ষুধা,অস্বস্তি কিংবা শরীর বৃত্তীয় কোন প্রকার অসুখ বিসুখ প্রত্যেক বিষয়ে কান্নার বহিঃপ্রকাশের ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে। আর কান্নার এ ভাষা বুঝার জন্য প্রয়োজন নিবিড় পর্যবেক্ষণ। প্রথমত, শিশুর মা,বাবা অতঃপর নিকটাত্মীয়রা সেই ভাষা বুঝার আশা করতে পারে।রুটিনবাঁধা ব্যস্ততম জীবনের অবসরটুকু আমি তাকে দিয়েছি,বিনিদ্র রজনীর সোনাঝরা মুহুর্ত গুলো শেয়ার করেছি,সময় অসময়ে কথার ফুলঝুরি ছড়িয়েছি,কখনো চোঁখের ভাষা বুঝার আশায় নিরব থেকেছি। আর পাহাড়ি ঝর্নার মত তার ছান্দসিক শব্দমালা আমি কান পেতে শুনেছি।দীর্ঘ ৪ মাস ১৩ দিন আমরা নদীর মত কলকলিয়ে চলেছি,রঙ ধনুর সাত রঙে সেজেছি, নীল সাগরের ঢেউয়ের মত খিলখিলিয়ে হেসেছি।

আর আমি একজন পিতা, একজন খেলার সাথী হিসাবে তার কান্নার ভাষা বুঝার জন্য দুই কান সতত খাড়া করে রেখেছি।

★সামীহা নূর জারার মুখ নিঃসৃত সাংকেতিক শব্দের অর্থগুলো যা বুঝায়।

👍উও উও -আরেকটু খাবো।

👍হুঁ হুঁ হুঁ-কোন কিছুর প্রতি দৃষ্টি মনোনিবেশিত হলে।

👍কখনো হেসে কখনো ঠোট বাকিয়ে–
আঁ আঁ ও…ও -আমাকে কোলে নাও বাবা।

👍 আম্ আম্… উয়া..উয়া.. মা আমার ক্ষুধা লেগেছে।

👍ও….(অতঃপর দ্রুত তিনবার) আও আও আও…….মা আমি পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছিনা।

👍তাঁর সাথে খেলার ছলে কথা বললে,সশব্দে ও য়া ও; ও য়া ও -(আনন্দানুভূতি) শব্দ উচ্চারণ করে। যার অর্থঃ আমি আনন্দ পাচ্ছি।

👍তাকে কোলে নিয়ে কিংবা বিছানায় শুয়ায়ে আল্লাহু,আল্লাহু এমন জিকির করতে থাকলে সেঁ ও স্পষ্টত লম্বা করে বলে,হু…..হু….কখনো সখনো বলে,”আললা হু”।

👍থেমে থেমে হে, হে, হেইইই….. তাঁর প্রতি কারোর দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে।

🌴🌙প্রার্থনাঃ রাব্বি লা তাজারনি ফারদাও ওয়া আন্তা খায়রুল ওয়ারেছিন।আমিন।

৮ মার্চ,২০১৮,ঢাকা।

 

উপহার ভালবাসার প্রতীক

Gift is the token of love. সম্ভবত এ কারণেই কারো কাছ থেকে কোন উপহার পেলে মনে এক ধরনের আনন্দানুভূতি ঢেউ খেলে।আবার কেউ কেউ উপহার পাওয়ার চেয়ে উপহার দেওয়ার মাঝে বেশী তৃপ্তি খুঁজে পান।আমার স্ত্রী বলেন, উপহার পাওয়ার চেয়ে উপহার দেয়া বেশী গৌরব ও আনন্দের।আমার কাছে দুটোই ভাল লাগে।একটি সময় ছিল বিয়ে,জন্মদিন কিংবা সুন্নতে খৎনা অনুষ্ঠানে নিজে পড়ে ভালো লেগেছে এমন বইগুচ্ছ উপহার দিতো।আমার মতে এটি ছিল শ্রেষ্ঠ উপহার।সময়ের সাথে পাল্টে গেছে উপহারের রকমফের।উপহার দামী কিংবা সস্তা সেটি কোন মুখ্য বিষয় হতে পারেনা।তবে এটি যদি নৈমিত্তিক প্রয়োজনে কাজে লাগে তখন তা আরো প্রতিভাত হয়ে উঠে।আমাদের দাম্পত্য জীবনে মহান আল্লাহ পাকের আর্শীবাদ একমাত্র কন্যা সামীহা নূর জারা’র অভিষেক হলে বহু নিকটাত্মীয় ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ দোয়াসহ উপঢোকন নিয়ে এসেছেন।কেউ কেউ আসতে না পারলেও ফোনে শুভাশীস জানিয়েছেন,উপহার সামগ্রী ও পাঠিয়েছেন।এবং এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যহত আছে।উপহার নয়,আমাদের রাজকন্যার প্রতি আপনাদের ভালোবাসার এরূপ বহিঃপ্রকাশ আর্শীবাদ হয়ে ঝরুক এই কামনা করছি।আমীন।

৯ মে ২০১৮, বিজয়পথ,ঢাকা।

 

সামীহার সিজারিয়ান সার্জন লেঃ কর্নেল শাপলা ম্যাডামের চেম্বারে

আলহামদুলিল্লাহ।
মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য তিনিই রোগ শোক দেন আবার তিনিই নিরাময় দান করেন।তিনি আর কেউ নন।তিনি মহা বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি ও পালনকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালা।
হে আল্লাহ আমাদেরকে আপনার সবচেয়ে বড় সুস্থতা নামক নিয়ামত দান করুন।আমিন।

সি এম এইচ ঢাকায় শিশু ও গাইনী বিভাগে যে কয়জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সামরিক বাহিনীর পরিবার ও সন্তানদের কল্যাণে সদানিবেদিত তাদের একজন লেঃ কর্নেল শাপলা ম্যাডাম।যাঁর দক্ষ হাতের ধারালো কাচির খুচায় গত ২৫ অক্টোবর ১৭ইং মাতৃগর্ভ থেকে পৃথিবীর আলোয় প্রথম চোখ মেলে তাকায় আমাদের দাম্পত্য জীবনের আর্শিবাদ সামীহা নূর জারা।

আজ উনার অফিস/চেম্বারে সামীহাকে কাছে পেয়ে পরম মমতায় কোলে তুলে নেন।আদর দেন।ছবি উঠানোর জন্য সহাস্যমুখে পোচ দেন।দোয়া করেন আর খেলার ছলে বলেন,”তুমিতো ঠিক প্রিন্সেস ডায়না হয়েছ।ভবিষ্যতে অনেক বড় হবে।”
ধন্যবাদ সার্জন লেঃকর্নেল শাপলা ম্যাডাম।আপনার শারীরিক সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

২৯ মে ২০১৮, বিজয়পথ, ঢাকা।

 

কন্যার মুখে প্রথম আব্বু ডাক ও ভাষার জন্ম রহস্য: এস এম শাহনূর

আমার একমাত্র তনয়া প্রিন্সেস সামীহা নূর জারা’র জন্ম হলে আমি কল্পনা করতাম,মেয়ে আমাকে বাবা বলে ডাকবে আর ওর গর্ভধারিনীকে ডাকবে মা।তাই সারাক্ষণ বাবা.বা বা….. বলে ওর মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করতাম।ভাবতাম পুরো শব্দটি প্রথম দিকে উচ্চারণ না করতে পারলেও বা…… বা….তো উচ্চারণ করতে পারবে।আমি একজন সুদক্ষ প্রশিক্ষকের মত ওর প্রতি সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করলাম।মহান আল্লাহ পাক গত বছর(২০১৭খ্রী:) ২৫ শে অক্টোবর আমাদের দাম্পত্যজীবনে আর্শীবাদ স্বরূপ এ কন্যা সন্তান দান করেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে লক্ষ্য করলাম চলতি বছরের (২০১৮খ্রী)১৭ মার্চ কোন এক স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মেয়ে আমার কোন প্রকার জড়তা ছাড়াই নিজ ভঙ্গিতে ছোট্ট করে ডেকে উঠলেন-আ ব্বু……আব্বু।

ঠিক একই দিনে ওর মাকে ডাকলো,আমমা..আম মা।

আমাদের শেখানো “বাবা” “মা”বুলিগুলো সে গ্রহন করেনি।বরং আমার চিন্তা জগতের সামনে উন্মোচন করেছে ভাষার উদ্ভব সংক্রান্ত এক মহাজাগতিক রহস্য।

বর্তমান পৃথিবীতে মোট সাত হাজার ৯৯টি ভাষা চলমান।[ভাষার জরিপ প্রকাশকারী সংস্থা অ্যাথনোলোগের (ethnologue) তথ্য মতে]
অনেক ভাষাবিজ্ঞানী এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে ইন্দো-ইউরোপীয় আদি ভাষা থেকে সব ভাষার উৎপত্তি। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০০ থেকে ৩৫০০ অব্দের মাঝামাঝি সময়ে এ আদি ভাষার জন্ম হয়।
আমি ওনাদের মত জ্ঞান তাপসদের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে পারছিনা বলে দুঃখ প্রকাশ করছি।

সত্যিকার অর্থে,ভাষার শুরুটা কিভাবে হয়েছে,এ নিয়ে ভাষাবিজ্ঞানীদের বিরোধের অন্ত নেই!চার্লস ডারউইন বলেছেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ভাষার উৎপত্তি হয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শব্দের ইঙ্গিত, প্রাণীদের আওয়াজ ও মানুষের স্বভাবগত উচ্চারিত ধ্বনির অনুসরণ ও সংশোধন করে। ’ (The Descent of Man, and Selection in Relation to Sex, 2 vols. London : Murray, p. 56.)

কিন্তু আমি তাঁর যুক্তির সাথে পুরোপুরিভাবে একমত নয়।

একদল ভাষাবিজ্ঞানী ভাষার উৎপত্তি নিয়ে দুটি তত্ত্ব দিয়েছেন,

★(এক) অবিচ্ছিন্নতাতত্ত্ব বা Continuity theories. সেটি হলো, ‘ভাষার বিষয়টি এত জটিল যে তার চূড়ান্ত প্রকৃতি বিষয়ে কল্পনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এটি পূর্বপুরুষদের থেকে পরম্পরাগতভাবে চলে আসছে। ’

★(দুই) বিচ্ছিন্নতাতত্ত্ব বা Discontinuity theories. এ তত্ত্ব আগেরটির বিপরীত। অর্থাৎ ‘ভাষা এমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত যে মানুষ ছাড়া অন্য কারো মধ্যে ভাষার ব্যবহার পাওয়া যায় না। মানবীয় বিবর্তনপ্রক্রিয়ার কোনো একসময়ে একবারেই হঠাৎ ভাষার প্রকাশ ও বিকাশ ঘটেছে।

★ওউ-ভৌ’ (wow-Bow) তত্ত্বঃ
ঊনবিংশ শতাব্দীতে মনে করা হতো, প্রাকৃতিক ধ্বনি থেকে ভাষা সৃষ্টি হয়েছে।বলা হয়ে থাকে, সর্বপ্রথম প্রাণী ও পাখির আওয়াজ থেকে ধ্বনি তৈরি হয়েছে। এ তত্ত্বের প্রবক্তা ছিলেন জার্মান লেখক ও দার্শনিক জুহান গটপ্রেড হার্ডার (Johann Gottfried Herder.)

★‘পুঃ পুঃ’ (Phoo-phoo) তত্ত্বঃ
মানুষের আনন্দ, বেদনা ও আবেগ অনুসৃত ধ্বনি থেকে ভাষার জন্ম। এটা

★‘ডিঙ-ডঙ’ (Ding-dong) তত্ত্বঃ
মুইলরের মতে, বস্তুর প্রাকৃতিক বুদ্বুদ বা আওয়াজ থেকে পাওয়া ধ্বনি থেকে ভাষার জন্ম।

★‘ইউ হে হু’ (Yo-he-ho) তত্ত্বঃ
মানুষের যৌথ কায়িক কসরতের পরিণতিতে ভাষার উদ্ভব হয়েছে। কায়িক প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন করার সময় যে আওয়াজ বের হয়, তা থেকে ভাষার জন্ম। (The Origin of Language. pp. 7-41.)

ভাষার উৎপত্তি বিষয়ে এত জটিলতা থাকার কারণে ১৮৬৬ সালে প্যারিসের ভাষাতাত্ত্বিক সমিতি (Linguistic Society of Paris) ভাষার উৎস সংক্রান্ত যেকোনো গবেষণাপত্র পাঠে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

আজ আমি বিনয়ের সাথে ওনাদের এমন সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করছিন।এবং এতদ্ বিষয়ে জটিলতার অবসান সংক্রান্ত প্রেসক্রিপশন দিচ্ছি। কারণ,ভাষা কোন কালেই মানুষ সৃষ্টি করেনি।ভাষার সৃষ্টিকাল এবং এর নিগুঢ় রহস্য উন্মোচন করতে হলে মানব সৃষ্টির মহা রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা জরুরী বলে আমি মনে করি।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে এমনভাবে বের করেছেন যে তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদের দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (সুরা : নাহল, আয়াত : ৭৮)
মহান আল্লাহ তাআলা অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, ‘তিনিই (আল্লাহ) মানুষকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে। ’ (সুরা : আর-রাহমান, আয়াত : ৪)
ভাব প্রকাশের মৌখিক পদ্ধতি ছাড়াও রয়েছে লিখিত পদ্ধতি। সে পদ্ধতিও আল্লাহর শেখানো। আল্লাহ বলেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভু মহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। ’ (সুরা : আলাক, আয়াত : ৩-৪)

বলা হয়ে থাকে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা যেসব জায়গায় অক্ষমতা প্রকাশ করেছে, ভাষার উৎপত্তি বিষয়ক গবেষণা তেমনই একটি স্পর্শকাতর জায়গা। আসলে কি তাই? মোটেও না।এ বিষয়ে কোরআন তো বহু আগেই মীমাংসা করে দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘‘আর আল্লাহ শেখালেন আদমকে (আদি মানব) সব বস্তুর নাম। তারপর সেসব বস্তু ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করেন। অতঃপর বলেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা (শ্রেষ্ঠত্বের দাবিতে) সত্য হয়ে থাকো। তারা বলল, আপনি পবিত্র! আমরা তো কোনো কিছুই জানি না, তবে আপনি যা আমাদের শিখিয়েছেন (সেগুলো ছাড়া)। নিশ্চয়ই আপনিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, প্রজ্ঞাময়। ‘’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩১-৩২)

কাজেই ভাষার ইতিহাস মানব ইতিহাসের সমসাময়িক। ভাষাজ্ঞান নিয়েই মানুষের জন্ম হয়েছে, এটা আল কুরআনের অকাট্য, সুনির্দিষ্ট ও শাশ্বত বক্তব্য। সুতরাং আদি মানব আদম (আ:) ভাষাজ্ঞান লাভ করেছেন মহান আল্লাহর কাছ থেকে। অতঃপর বংশপরম্পরায় তাঁর সন্তানদের মধ্যে ভাষার বিকাশ হতে থাকে। বলা যায়, একসময় পৃথিবীর মানুষ অভিন্ন ভাষায় কথা বলত। তখন ভাষা ছিল মাত্র একটি। কালক্রমে মানুষের চিন্তা ও রঙের বৈচিত্র্যের মতো ভাষাবৈচিত্র্যের উদ্ভব হয়। সেই উদ্ভাবনী ক্ষমতাও মহান আল্লাহ দান করেছেন। ভাষাবৈচিত্র্য মহান আল্লাহর অসীম কুদরতের নিদর্শন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে। ’ (সুরা : রুম, আয়াত : ২২)

★তথ্যসূত্রঃ
[1] (H. Christiansen, Language evolution. Oxford University Press. pp. 7-41)

২৮ আগস্ট ২০১৮,বিজয়পথ, ঢাকা।

 

“তুমিতো ঠিক প্রিন্সেস ডায়না হয়েছ।ভবিষ্যতে অনেক বড় হবে।”

আলহামদুলিল্লাহ।(৩১ মে ৩০১৮)
মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য তিনিই রোগ শোক দেন আবার তিনিই নিরাময় দান করেন।তিনি আর কেউ নন।তিনি মহা বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি ও পালনকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালা।
হে আল্লাহ আমাদেরকে আপনার সবচেয়ে বড় ‘সুস্থতা’ নামক নিয়ামত দান করুন।আমিন।

সি এম এইচ ঢাকায় শিশু ও গাইনী বিভাগে যে কয়জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সামরিক বাহিনীর পরিবার ও সন্তানদের কল্যাণে সদানিবেদিত তাঁদের একজন লেঃ কর্নেল শাপলা ম্যাডাম।যাঁর দক্ষ হাতের ধারালো কাচির খুচায় গত ২৫ অক্টোবর ২০১৭ইং মাতৃগর্ভ থেকে পৃথিবীর আলোয় প্রথম চোঁখ মেলে তাকায় আমাদের দাম্পত্য জীবনের আর্শিবাদ সামীহা নূর জারা।

আজ উনার অফিস/চেম্বারে সামীহাকে কাছে পেয়ে পরম মমতায় কোলে তুলে নেন।আদর দেন।ছবি উঠানোর জন্য সহাস্যমুখে পোচ দেন।দোয়া করেন আর খেলার ছলে বলেন,”তুমিতো ঠিক প্রিন্সেস ডায়না হয়েছ।ভবিষ্যতে অনেক বড় হবে।”
ধন্যবাদ সার্জন লেঃকর্নেল শাপলা ম্যাডাম।আপনার শারীরিক সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

 

 

Some text

ক্যাটাগরি: স্মৃতিচারণ

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি