রবিবার রাত ১২:১৬, ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ১০ই জুন, ২০২৩ ইং

যাকাত কার উপর ফরয এবং কীভাবে আদায় করবেন?

৬৯০ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

যাকাত কার  উপর ফরয? সুস্থমস্তিষ্ক, আযাদ, বালেগ মুসলমান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে যাকাত আদায় করা তার ওপর ফরয। কোন্ কোন্ জিনিসের উপর যাকাত ফরয হয়? সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে যাকাত ফরয হয়। মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরয হয়। টাকা-পয়সা ব্যবসায় না খাটিয়ে রেখে দিলে বা হজ্বের উদ্দেশ্যে কিংবা ঘর-বাড়ি নির্মাণ, ছেলে-মেয়ের বিয়ে-শাদি ইত্যাদি প্রয়োজনে রেখে দিলেও যাকাত ফরয হয়।

নিসাব কী? স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হলো, বিশ মিসকাল; আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি। রুপার ক্ষেত্রে নিসাব হল দু’শ দিরহাম; আধুনিক হিসাবে সাড়ে বায়ান্ন তোলা। এ পরিমাণ সোনা-রুপা থাকলে যাকাত দিতে হবে। প্রয়োজনের উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা বা ব্যাবসা-দ্রব্যের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয় তাহলে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে ধরা হবে এবং এর যাকাত দিতে হবে। কোন সম্পদে যাকাত আবশ্যক? যাকাত আবশ্যক হয় মোট ৪টি বস্তুর উপরে। যথা- ১-স্বর্ণ।২-রৌপ্য। ৩-ব্যবসায়ীক পণ্য।৪-নগদ অর্থ। যে সম্পদের উপর যাকাত ফরয হয়েছে তার চল্লিশ ভাগের একভাগ (২.৫০%) যাকাত দেওয়া ফরয। সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা হারে নগদ টাকা কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়-চোপড় বা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে ।

ঘর-বাড়ী নির্মাণের জন্য জমানো টাকার উপর যাকাত আবশ্যক হবে? বাড়ি নির্মাণ শুরু করে টাকা খরচ করে ফেলার আগ পর্যন্ত জমানো টাকার উপর যাকাত আবশ্যক হবে। ঋণগ্রস্তের ঋণ মাফ করে দেবার মাধ্যমে যাকাত আদায় করার হুকুম কী? এইক্ষেত্রে যাকাতটি ঋণ বাবদ পরিশোধ করার পদ্ধতি হলো, প্রথমে যত টাকার ঋণ যাকাত হিসেবে পরিশোধ করে নিতে চাচ্ছেন, তত টাকা ঋণগ্রস্ত লোকটাকে যাকাত হিসেবে প্রদান করা। তারপর ঋণগ্রস্তকে বলা যে, আমাকে এবার ঋণটি পরিশোধ করে দাও। তারপর তার কাছ থেকে টাকাটি গ্রহণ করে নেওয়া।এ পদ্ধতি অবলম্বন করার দ্বারা যাকাতও আদায় হবে, আবার লোকটার ঋণও আদায় হয়ে যাবে।

দোকানের এডভান্সের যাকাত কার উপর আবশ্যক? প্রথমত জানতে হবে, ভাড়াদাতা এডভান্সের টাকাটা কী হিসেবে নিচ্ছেন? যদি তিনি জামানত (সিকিউরিটি) হিসেবে নিয়ে থাকেন তাহলে উক্ত টাকা তার কাছে আমানত। অনুরূপভাবে যদি বন্ধক হিসেবে নিয়ে থাকেন তাহলেও এটি আমানত। আর আমানতের বস্তুতে হস্তক্ষেপ করা তথা খরচ করা জায়েয নয়। সে হিসেবে উক্ত টাকা ভাড়াদাতার কাছে থাকলেও তিনি তা খরচ করতে পারবেন না এবং এর মালিকানা থাকবে ভাড়াটিয়ার। সুতরাং সিকিউরিটি মানির জাকাত প্রতি বছর ভাড়াটিয়া প্রদান করবে। কিন্তু আমরা সাধারণত দেখতে পাই, ভাড়াদাতা উক্ত টাকার উপর হস্তক্ষেপ করেন অর্থাৎ, তিনি টাকাটা নিয়ে খরচ করে ফেলেন। সুতরাং এটিকে আমানত বলা যায় না।

তাছাড়া আমানতের বস্তু আমানতগ্রহীতার কাছে কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেলে এবং এতে তার হাত না থাকলে তা মূল মালিককে ফেরত দিতে হয় না। অথচ ভাড়াটিয়া পরবর্তীতে ওই টাকাটা সর্বাবস্থায় ফেরত পায়। সুতরাং এটিকে কোনোভাবে আমানত বলা যায় না। অনুরূপভাবে একে ঋণ মনে করারও সুযোগ নেই। কেননা, তখন চুক্তিটি বৈধ হচ্ছে না। কারণ ঋণের বিনিময়ে কারো থেকে উপকার অর্জন করা সুদ। যা নিসন্দেহে হারাম। এক্ষেত্রে একে জায়েয পদ্ধতির আওতাভুক্ত করার একটি পদ্ধতি আছে। আর তা হলো–দীর্ঘমেয়াদী ভাড়া চুক্তি সম্পাদন। অর্থাৎ ভাড়া চুক্তি সম্পাদনের সময় প্রতি মাসের জন্য নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করে নিবে। তারপর সামনের মাসগুলোর ভাড়া অগ্রিম পরিশোধের নামে এডভান্স মানি ভাড়া দাতাকে দেয়া হবে। এরপর প্রতি মাসে ভাড়াটিয়া নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করতে থাকবে।

আর যে মাসে দোকান ছেড়ে ভাড়াটিয়া চলে যাবে, তার কয়েক মাস আগে থেকে ভাড়া দাতার কাছে জমাকৃত এডভান্সের টাকা থেকে ভাড়া হিসেবে কেটে নেয়া হবে। যদি কোনো অর্থ এরপরও বেঁচে যায়, তাহলে মালিক তা ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। যদি এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, তাহলে উক্ত চুক্তিটি এবং এডভান্স হিসেবে ভাড়াটিয়া ভাড়াদাতাকে অতিরিক্ত টাকা প্রদান করা জায়েয হবে। তখন মৌলিকভাবে উক্ত এডভান্সের টাকার মালিক হবে ভাড়াদাতা এবং ভাড়াটিয়ার কোনো মালিকানা বাকি থাকবে না। যেহেতু ভাড়াটিয়া উক্ত টাকার মালিক থাকছে না, তাই্ তার উপর উক্ত টাকার জাকাত আবশ্যক হবে না।

পক্ষান্তরে যেহেতু দোকান-মালিক উক্ত টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে, তাই উক্ত টাকা খরচ করা তার জন্য জায়েয হয়ে যাবে। সেই সাথে উক্ত টাকার যাকাতও দোকান-মালিকের উপর আবশ্যক হবে। (জাদীদ ফিক্বহী মাসায়েল) যাকাতের টাকা আলাদা করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ফকীর-মিসকীনকে দেওয়ার আগেই তা চুরি হয়ে গেলে বা অন্য কোনোভাবে নষ্ট হয়ে গেলে, যাকাত আদায় হযবে না। পুনরায় যাকাত দিতে হবে।

মাওলানা ইসমাইল ভূঁইয়া: মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া মদিনাতুল উলুম

সোনারামপুর, আশুগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

Choosing Virtual Data Rooms

Work Search Strategies – How…

THAT World and Business

Program For Modern Business

Why Every one Is Speaing…

Using Your Hot Filipino Girls…

Hot Brazilian Girls Some ideas

What To Expect From Bark…

GRATUITO ROM: Download Oppo Stock…