শুক্রবার বিকাল ৫:৫৫, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং

শঙ্কা

৫৪৪ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

(এখন কবিতা লেখার সময় নয়। আর এই লেখা কোনো অর্থেই কবিতা নয়। শঙ্কিত মনের অনুভূতি
মাত্র)

দিনের সফর শেষে,
লাল ঘোলা চোখে বাড়ি ফিরছে সূর্যটা।
এনজিও অফিসের কর্মচারীটি-নিত্যই দেখা হয়।
সালাম দেয় না আমাকে। বাড়ি ফিরছে।
রোজকার খাটাখাটুনি শেষে।
আমাদের গ্রামের বুড়ো। কী যেন এক
মাছের নামে নাম তার। রিকশার হুড তুলে
বসে আছে আরো কিছু উপার্জনের আশায়।কান খাড়া, দুটো শব্দ শুনতে-যাইবেন নি?

 

আমাদের তখন দিন শুরু। শহরের দু প্রান্ত থেকে এসে মিলিত হই তিন রাস্তার মোড়ে।

যেখানে দিন শেষ হতে আরো কিছু সময় বাকি। এরপর শুরু হয় বিনে পয়সার ডিউটি-

ভবটাকে ঘুরে দেখা। হেঁটে হেঁটে দেখি, উঁচু উঁচু দালান; নতুন গজানো ক্লিনিক;ইন্টারন্যাশনাল স্কুল; জামেয়া ইসলামিয়া।

 

উচ্চ শিক্ষিত বেকার সংঘের গর্বিত সদস্য আমরা।
আমাদের আলাপ হয় খোদার বিছানো ঘাসে।
রাস্তার পাশ ধরে হেঁটে হেঁটে।
দুনিয়ায় বিচিত্র সব ইস্যু, বিষয়ে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্মের উত্থান-পতন,
চাকরির বাজার, মনোজগতের ব্যপারগুলো, আরো যতো টপিক গুলো।
রাত তার ডানা মেলে ধরেছে অনেকটাই।
কথা আমাদের শেষ হয় না। মন টানতে থাকে বাড়ির দিকে। মার অপছন্দ বাহিরে ঘোরাফেরা।
আচ্ছা ঠিক আছে বলবো বলবো করেই কেটে
যায় আরো ঘন্টাখানেক।

আলোচনা অসম্পূর্ণ রেখেই বিদায় নেই আবার দেখা হবে বলে।
এভাবেই যাচ্ছিল বেকার জীবনের
অলস সময়গুলো। কেটে যেত আরো কিছু কাল।
কিন্তু তা আর হলো না। রাস্তাগুলো ভরে গেছে
ভয় আর আতঙ্কে। খোদার দুনিয়ায় নেমে এসেছে
মহামুসিবত। মৃত্যুরোগ। কভিড১৯ নাম পড়েছে
যার। মোকাবেলায় নেমে এসেছে উর্দিওয়ালারা।
মুহূর্তে পরিবর্তন হচ্ছে ব্রেকিং নিউজ।
আপডেট হচ্ছে মৃত্যুর পরিসংখ্যান। প্রচন্ড ভীড়
মৃত্যু কাউন্টারে। দীর্ঘ লাইন পড়ে গেছে
তাবত পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিমে।
নিজ থেকে না হয় ডান্ডার বাড়ি খেয়ে
খাঁচায় ঢুকে পড়েছে কোটি কোটি মানুষ।

ঘরের নির্জন কোণে বসে ভাবি, আবার কী দেখা হবে আমাদের? ঘাসের বিছানায়
ফিরে আসবে জীবন ও জগতের আলাপ গুলো?
এনজিও কর্মীর সালাম না পেয়ে মলিন হবে এক
হুজুরের মুখ? জনকোলাহোলে আবার কী দেখা যাবে এক বুড়ো রিকশা চালকের অনিশ্চিত অপেক্ষা?
না চারদিক থেকে স্তব্ধ হতে হতে স্তব্ধতা নেমে
আসবে আমাদের ও জীবনে?
অচ্ছুৎ আর সৎকারহীন লাশের মিছিলে
যোগ হবে আরো কিছু নতুন কংকাল?

খবরের পাতায় মৃতের সজনের পালায়ন দেখে মনে শঙ্কা জাগে। রাত্রির ভীতিকর নীরবতায় কানে বাজে
করুণ সুর- ইয়াওমা ইয়াফিররুল মারউ মিন
আখীহ। ওয়া উম্মিহি ওয়া আবিহি।
ওয়া সাহিবাতিহি ওয়া বানিহ….

Some text

ক্যাটাগরি: চিন্তা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি