শুক্রবার দুপুর ২:৩৬, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং

শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ীর জীবনী

৬৫৯ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আবি আহমেদ আলি (সংক্ষেপে আবি আহমেদ অথবা আবি;জন্ম ১৫ আগস্ট ১৯৭৬) হলেন ইথিওপিয়ার রাজনীতিবিদ এবং ২ এপ্রিল ২০১৮ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী ইথিওপিয়ার ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[২][৩]

আবি আহমেদ আলি
PM Abiy Ahmed Ali.jpg

২০১৮ সালে আবি আহমেদ
ইথিওপিয়ার ১৫তম প্রধানমন্ত্রী
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২ এপ্রিল ২০১৮
রাষ্ট্রপতি মুলাটো তিসোম
সাহলে-ওয়ার্ক জুডি
ডেপুটি ডিমেক মিকোনেন
পূর্বসূরী হাইলমারিয়াম ডিসালেন
ইথিওপিয়ান পিপল’স রেভ্যুলোশনারী ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের ৩য় চেয়ারম্যান
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৭ মার্চ ২০১৮
ডেপুটি ডিমেক মিকোনেন
পূর্বসূরী হাইলমারিয়াম ডিসালেন
অরুৃমো ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
ডেপুটি লিমা মেগারসা
পূর্বসূরী লেমা মেগারসা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৬ অক্টোবর ২০১৫ – ১ নভেম্বর ২০১৬
প্রধানমন্ত্রী হাইলমারিয়াম ডিসালেন
পূর্বসূরী দিমুতো হামবিসিতু
ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক
ভারপ্রাপ্ত
কাজের মেয়াদ
২০০৮ – ২০১৫
পূর্বসূরী টেকলিবারগান ওল্ড ডিয়ারগে
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম ১৫ আগস্ট ১৯৭৬ (বয়স ৪৩)
বিশাসা, জিমা অঞ্চল, সোশ্যালিস্ট ইথিওপিয়া
রাজনৈতিক দল অরুমো ডেমোক্রেটিক পার্টি
অন্যান্য রাজনৈতিক দল ইথিওপিয়ান পিপল’স রেভুলোশনারি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট
দাম্পত্য সঙ্গী জিনাস তায়াকিউ[১]
সন্তান তিন কন্যা ও পালক পুত্র এক
শিক্ষা মাইক্রোলিংক ইনফরমেশন টেকনোলজি কলেজ (বিএ)
ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনিচ(এমএ)
অ্যাশল্যান্ড ইউনিভার্সিটি(এমবিএ)
আদ্দিস আবাবা ইউনিভার্সিটি (পিএইচডি)
পুরস্কার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার (২০১৯)
ওয়েবসাইট FDRE Office of the Prime Minister
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্য  ইথিওপিয়া
শাখা ইথিওপিয়ান আর্মি
কাজের মেয়াদ ১৯৯১-২০১০
পদ 13.EA-LTC.svg লেফটেন্যান্ট কর্নেল
ইউনিট আর্মি সিগনাল কর্পস
কমান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি এজেন্সি
যুদ্ধ ইথিওপিয়ার গৃহযুদ্ধ
রোয়ান্ডা গণহত্যার পর রোয়ান্ডা মিশনে যোগ
ইরিত্রিয়া-ইথিওপিয়া যুদ্ধ

তিনি ইথিওপিয়ান পিপল’স রেভ্যুলেশনারী ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ও অরোমু ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৪][৫]এছাড়াও তিনি ইথিওপিয়ান পার্লামেন্ট এবং ওডিপি ও ইপিআরডিএফ এর নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আর্মি ইন্টেলিজেন্সের একজন সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে, আবি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাজনীতি ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।[৬][৭][৮] ২০১৯ সালে আবি আহমেদের প্রচেষ্টাতেই ইরিত্রিয়ার সঙ্গে ইথিওপিয়ার পুরনো বৈরিতার অবসান ঘটেছে। ১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া সীমান্ত যুদ্ধে দু’দেশের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ২০০০ সালে তাদের মধ্যে শান্তিচুক্তি হলেও উত্তেজনা ঠিকই ছিল। শান্তি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার দীর্ঘ ২০ বছরের সমস্যার নিরসনের জন্য তিনি ২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।[৯]

প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা

আবি ১৫ আগস্ট ১৯৭৬ সালে[১০] ইথিওপিয়ার অরোমিয়া এলাকার ঐতিহাসিক কাফ্ফা প্রদেশ এর (বর্তমান জিমা অঞ্চল) বিশাসাতে জন্মগ্রহণ করেন।[১১][১২] তার বাবা আহমেদ আলি ছিলেন মুসলমান অরোমু সম্প্রদায়ের লোক।[১৩][১৪]আর তার চার স্ত্রীর মধ্যে আবির মা তিজিটা ওল্ডে ছিলেন খ্রিস্টান আমহারা সম্প্রদায়ের।[১৫][১৬][১৭][১৮] আবি তার বাবার ১৩তম সন্তান (যিনি একাধিক বিয়ে করেছিলেন) এবং তার মায়ের ৬ষ্ঠ ও ছোট সন্তান।[১০][১৭] শৈশবে তার নাম ছিলো আবিয়ত (Abiyot) (ইংরেজিতে বিপ্লব)। তার নামটি ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়া সংঘটিত হওয়া ডার্গ রেভ্যুলোশন থেকে নেওয়া।[১০] আবি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও পরে আগারু নামক উপশহরের এক স্কুলে তার মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। ব্যক্তিগত প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি তার লেখাপড়ার প্রতি বেশ আগ্রহী ছিলেন, যেটি পরবর্তীতে তাকে অন্যান্য শিক্ষায় ও উন্নতিতে সহায়তা করেছিলো।[১০]

শিক্ষাসম্পাদনা

ইথিওপিয়ান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সে কাজ করার সময় আবি ২০০১ সালে আদ্দিস আবাবার মাইক্রোলিংক ইনফরমেশন টেকনোলজি কলেজ থেকে কম্পিউটার প্রকৌশলের ওপর তার প্রথম ব্যচেলর ডিগ্রি লাভ করেন।[১৯]

আবি লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব গ্রীনিস থেকে ট্রান্সফরম্যাশনাল লিডারশীপ এর ওপর এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।[১৯] এছাড়াও তিনি ২০১৩ সালে আদ্দিস আবাবার অ্যাশল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধীনে লেডস্টার কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লিডারশীপ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন।[১৯]

আবি কয়েকবছর পূর্বে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে পিএইচডির জন্য লেখাপড়া শুরু করেন[২০] এবং ২০১৭ সালে আদ্দিস আবাবা ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউট ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন।[২১]

ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা

তিনি গোন্ডারের “জিনাস তায়াকিউ” নামক অামহারা মহিলাকে বিয়ে করেন,যখন তারা উভয়েই ইথিওপিয়ান ডিফেন্স ফোর্সে কর্মরত ছিলেন।[১০][১৭][২২] তারা উভয়েই তিন কন্যা সন্তান এবং সম্প্রতি দত্তক নেওয়া এক পুত্র সন্তানের পিতামাতা।[২২] আবি একজন বহুভাষায় কথা বলতে পারা ব্যক্তি, যিনি ইংরেজি, আফান অরুমো, অ্যামারিক এবং তিগ্রিনিয়া ভাষায়ও কথা বলতে পারেন।[২৩][২২] আবি যীশুর বাণী ও গসফেলে বিশ্বাসী একজন পূর্ণ খিস্ট্রান।[২৪]

মিলিটারি জীবনসম্পাদনা

১৯৯১ সালের শুরুর দিকে তার বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর কিশোর অবস্থায় তিনি[২৫] মার্কস ও লেনিনবাদীর বিপক্ষে লড়তে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তখন তিনি অরুমো ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন সদস্য ছিলেন।[২৩][১০][২২] সেনাবাহিনীতে অল্পসংখ্যক ওডিপি যোদ্ধা ও ৯০ হাজারের মতে তিগ্রায়ান ছিলো, যাদের থেকে খুব সহজেই তিনি তিগ্রিনিয়া ভাষা শিখে পেলেন। তিগ্রিনিয়া ভাষা জানা একজন বক্তা হিসেবে তিনি তার মিলিটারি ক্যারিয়ার সহজে সামনে এগিয়ে নিতে পেরেছিলেন।[২৩]

ডার্গে পতিত হওয়ার পর তিনি নিয়মানুযায়ী পশ্চিম ওলেগা প্রদেশের আসেফা ব্রিগেডে প্রশিক্ষণ নেন এবং সেখানেই অবস্থান করেন। তার মিলিটারি পোস্টটি ছিলো বুদ্ধিমত্তা ও যোগাযোগ সম্পর্কিত। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে বর্তমান ইথিওপিয়ান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের একজন সৈনিক হন এবং অধিকাংশ সময়ই বুদ্ধিমত্তা ও যোগাযোগ বিভাগেই কাজ করেন। ১৯৯৫ সালে রোয়ান্ডা গণহত্যার পর তিনি ইউনাইটেড ন্যাশনস এসিসট্যান্টে মিশন ফর রোয়ান্ডার সৈনিক হিসেবে রোয়ান্ডার কিগালিতে যুদ্ধ করতে যান।[২৬]১৯৯৮ ও ২০০০ সালে ইথিওপিয়া-ইরিত্রিয়া যুদ্ধের সময় তিনি ইরিত্রিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের অবস্থান নির্ণয়ে একটি ইন্টেলিজেন্স টিম এর নেতৃত্ব দিয়েছেন।

পরবর্তীতে আবি তার নিজের এলাকা বিশাসাতে ডিফেন্স অফিসার হিসাবে ফিরে আসেন, যেখানো মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে আন্তঃধর্মীয় সংঘাতের কারণে কয়েকজন লোক মৃত্যুবরণ করেছিলেন।[২৩][২৭] তিনি পরবর্তীতে এই পরিস্থিতি শান্ত ও শান্তিপূর্ণ করতে সক্ষম হন।[২৩]

২০০৮ সালে আবি, ইথিওপিয়ান ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি এজেন্সির (INSA) সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সেখানে তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেন।[১০] দুই বছরের জন্য তিনি INSA এর পরিচালকের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১০] এই কাজের জন্য পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন সরকারি তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সংস্থা ইথিও টেলিকম ও ইথিওপিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনেও কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। ২০১০ সালে হঠাৎ তিনি তার মিলিটারির ডেপুটি পরিচালকের পদ ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মিলিটারি জীবনে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল এর মতো উচ্চপদেও আসীন ছিলেন।[২১][২৩]

রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা

পার্লামেন্টের সদস্যসম্পাদনা

ওডিপির একজন সদস্য হিসেবে আবি তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।[২৮] ওডিপি ১৯৯১ সাল থেকে অরোমিয়া শাসন করা দল। দ্রত সফলতার সাথে তিনি ওডিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ইআরডিপি’র একজন কংগ্রেস সদস্য হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।[২৩]

শান্তির জন্য ২০১০ সালে ধর্মীয় ফোরামে আবি আহমেদ

২০১০ সালে ওরোমো ডেমক্রেটিক পার্টি (ওডিপি) থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন আবি। ওই সময়ে তার জন্মস্থান ‘জিম্মা অঞ্চলে’ মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে হরহামেশাই দাঙ্গা বেঁধে থাকত। সেই দাঙ্গায় ‍বহু মানুষ নিহত হয়। সে সময় পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে দাঙ্গা ঠেকাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন আবি। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। এজন্য তিনি “রিলিজিয়াস ফোরাম ফর পিস” নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।[২১]

২০১৫ সালে ওডিপির এজন্য নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন আবি।[২৯][৩০][৩১] ওই বছরই তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ওরোমি অঞ্চল, বিশেষ করে আদ্দিস আবাবার চারপাশে অবৈধভাবে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকায় চলে আসেন আবি। আন্দোলনের মুখে জমি অধিগ্রহণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।[৩২]

ক্ষমতায় আরোহণসম্পাদনা

২০১৫ সালের শুরু থেকে অবৈধ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় আবি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।[৩৩][২৩]

টানা তিন বছরের আন্দোলন এবং বিক্ষোভের মুখে ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইথিওপিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাইলেমারিয়াম দেসালজেন পদত্যাগে বাধ্য হন। সেই সঙ্গে তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন জোট ইপিআরডিএফ এর প্রধানের পদও হারান। ইথিওপিয়ার অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতাসীন জোটের প্রধানই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।[৩৩][৩৪]দেশটির চার দল ওডিপি, এডিপি, এসইপিডিএম এবং টিপিএলএফ মিলেই এ জোট। হিলেমারিয়ামের পদত্যাগের পর প্রথমবারের মত ইপিআরপিএফ জোটের নেতা নির্বাচনের জন্য ভোট হয়। ওই সময় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ওডিপি প্রধান লেমা মেগেরসা এবং আবি আহমেদকে এগিয়ে রেখেছিলেন।[২৯][৩৫][৩৬] লেমা মেগেরসা দলীয় প্রধান হলেও পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন না। আর ইথিওপিয়ার সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হতে হলে অবশ্যই পার্লামেন্ট সদস্য হতে হবে। যে কারণে লেমা মেগেরসার বদলে আবি আহমেদকেই ওডিপি প্রধান ঘোষণা করা হয়।[৩২] ২০১৮ সালের ১ মার্চ ইপিআরপিএফ এর নির্বাহী কমিটির সদস্যদের ভোটে আবি জোট প্রধান নির্বাচিত হন এবং পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।[৩৭][২৯]

যুদ্ধের সমাপ্তিতে ভূমিকাসম্পাদনা

১ এপ্রিল ২০১৮ সালে আবি ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে ইথিওপিয়ার জনগণের মধ্যে ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ইথিওপিয়া-ইরিত্রিয়া সীমান্তে যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দেন।[৩২]

আফ্রিকার দরিদ্র এ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ১৯৯৮ সালের মে মাস থেকে ২০০০ সালের জুন মাস পর্যন্ত যুদ্ধ হয়। সেখানে পরবর্তী দুই দশক পর্যন্ত চলে ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার মধ্যে সংঘাত ও সীমান্ত সমস্যা। আবি আহমেদের উদ্যোগে ২০১৮ সালে দুই দেশ একটি শান্তি চুক্তি করেন এবং যুদ্ধের অবসানে ভূমিকা রাখেন। শান্তি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার দীর্ঘ ২০ বছরের সমস্যার নিরসনের জন্য তিনি ২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।[৩২][৩৮]

প্রাপ্ত পুরস্কারসমূহসম্পাদনা

 
পুরস্কারের নাম পুরস্কারদানকারীপ্রতিষ্ঠান তারিখ
মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য পিয়ার্ল অব আফ্রিকা: গ্র্যান্ড মাস্টার[৩৯] উগান্ডা ৯ জুন ২০১৮
অর্ডার অব দ্য জায়েদ মেডেল[৪০] আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স ২৪ জুলাই ২০১৮
হাই র্যাংক পিস অ্যাওয়ার্ড[৪১] ইথিওপিয়ান অর্থোডক্স চার্চ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
অর্ডার অব কিং আবদুল আজিজ[৪২] সৌদি আরব ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত[৪৩] টিপারেরি পীস কনভেনশন নভেম্বর ২০১৮
প্রভাবশালী ১০০ আফ্রিকান[৪৪] নিউ আফ্রিকান ম্যাগাজিন ১ ডিসেম্বর ২০১৮
আফ্রিকান অব দ্য ইয়ার[৪৫] দ্য আফ্রিকান লিডারশীপ ম্যাগাজিন ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮
২০১৮ সালের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব[৪৬] টাইম ম্যাগাজিন ১ জানুয়ারি ২০১৯
২০১৯ সালের ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদ[৪৭] ফরেন পলিসিম্যাগাজিন ১ জানুয়ারি ২০১৯
বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব[৪৮] AfricaNews.com ১ জানুয়ারি ২০১৯
আফ্রিকান এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ফর জেন্ডার[৪৯] আফ্রিকান ইউনিয়ন ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
হিউম্যানিটারিয়ান এন্ড পিস ম্যাকার অ্যাওয়ার্ড[৫০] আফ্রিকান আর্টিস্ট পিস ইনিশিয়েটিভ ৯ মার্চ ২০১৯
ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার[৫১] ইউনেস্কো ২ মে ২০১৯
পিস অ্যাওয়ার্ড ফর কন্ট্রিবিউশান অব ইউনিটি টু ইথিওপিয়ান মুসলিমস[৫২] ইথিওপিয়ান মুসলিম কমিউনিটি ২৫ মে ২০১৯
চ্যাথাম হাউস প্রাইজ ২০১৯ মনোনীত[৫৩] চ্যাথাম হাউস জুলাই ২০১৯
বিশ্ব পর্যটন পুরস্কার ২০১৯[৫৪] বিশ্ব পর্যটন ফোরাম আগস্ট ২০১৯
হেসিয়ান শান্তি পুরস্কার[৫৫] স্টেট অব হেজেন আগস্ট ২০১৯
PHC লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেপ্টেম্বর ২০১৯
আফ্রিকান এসোসিয়েশন অব পলিটিকাল কনসালটেন্ট অ্যাওয়ার্ড[৫৬] APCAfrica সেপ্টেম্বর ২০১৯
নোবেল শান্তি পুরস্কার[৫৭] নোবেল ফাউন্ডেশন ১১ অক্টোবর ২০১৯

 

 

.গোলাম কিবরিয়া, লেখক ও প্রাবন্ধিক।

.তথ্যসংগ্রহ: উইকিপিডিয়া

Some text

ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি