বৃহস্পতিবার দুপুর ২:৩৭, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

নারী এবং পুরুষ

১১৮৪ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ১ টি

প্রকৃতিতে রয়েছে দুটি বিপরীত শক্তি- বিপরীত থাকার জন্য নয়- দুইয়ে মিলে নতুন সৃষ্টির জন্য, জীবনের বিকাশধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। পুরুষ ইতিবাচক শক্তি, নারী নেতিবাচক শক্তি। নেতিবাচক মানে মন্দ নয়। শক্তির নেতিবাচক গতিপথকে মন্দ বলা ভুল। শক্তি ভালো বা মন্দ হয় না। ইতিবাচক শক্তি যদি আরেকটি বৃহত্তর ইতিবাচক শক্তির সম্মুখীন হয় তবে তা নেতিবাচক হয়ে যায়। যেমন, বাচাল যদি তার চেয়ে বড় বাচালের সম্মুখীন হয়, তবে বাকশক্তির রূপান্তর ঘটে শ্রবণশক্তিতে; দাতা যদি বড় দাতার সম্মুখীন হয়, তবে সে গ্রহীতা হয়ে যায়।

নেতিবাচক শক্তির গুণেই ইতিবাচক শক্তি ক্রিয়াশীল হয়। কিন্তু নেতিবাচকের জন্ম ইতিবাচক থেকে এবং ইতিবাচকেই এর প্রত্যাবর্তন ঘটে। ‘আদমের পাঁজরের হার থেকে হাওয়া সৃষ্টি’- এই রূপকের ব্যাখা এটিই। নারী শ্রবণশক্তি, পুরুষ বাকশক্তি। গ্রহণ করা নারীশক্তি, দেওয়া পুরুষশক্তি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হয় আমরা শ্রোতা, না হয় বক্তা; হয় দাতা, না হয় গ্রহীতা; হয় নারী, না হয় পুরুষ। এই দুটি বিপরীত শক্তির সামঞ্জস্যই জীবনে সুরের সৃষ্টি করে। এটি না মিললেই জীবন বেসুরো হয়ে যায়।

নারী-পুরুষ চুম্বকের উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরুর মতো পরস্পরকে আকর্ষণ-বিকর্ষণ করে। নারীর মধ্যে পুরুষশক্তি বেশি থাকতে পারে, আবার পুরুষের মধ্যেও নারীশক্তি বেশি থাকতে পারে। সম্পর্কের নিয়ামক হলো অন্তর্নিহিত নারী-পুরুষশক্তি- বাহ্য নারী-পুরুষ নয়। অন্তর্নিহিত পুরুষ স্বাধীনতা চায়- নারী চায় প্রেম। স্বাধীনতা হলো শূন্য- প্রেম হলো পূর্ণ, একটি অপরটির বিপরীত। প্রেমের জন্য প্রয়োজন বিশ্বাস। বিশ্বস্ততা অর্জন করার জন্য প্রয়োজন দৃঢ়তা।

সংসারের সুখ-দুঃখ এই দুটি বিপরীত শক্তির খেলা। দুটি বিপরীত শক্তি খেলা করে একই সঙ্গে। একটি আরেকটিকে শক্তি দেয় এবং ধরে রাখে। নৌকা চলার জন্য হালও লাগে, পালও লাগে। হাল পুরুষশক্তি। পাল নারীশক্তি। সংসারে সিদ্ধান্ত যে নেয় বাস্তবে পুরুষ সে-ই; সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের শক্তি যে দেয়, বাস্তবে নারী সে-ই- এবার লিঙ্গ যাই হোক না কেন। যে পুরুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীকে ভয় পায়, সে যে কখন নারী হয়ে গেছে, তা সে নিজেও জানে না। যে নারী সিদ্ধান্ত গ্রহণে পুরুষের তোয়াক্কা করে না, সে যে কখন পুরুষ হয়ে গেছে, তাও সে জানে না।

যদি এমনটি হয়, মহাবিপদ। বিপদ এ কারণে যে, সংসারে দুজন পুরুষ হয়ে যায়। ফলে বিপরীত মেরুর প্রতি আকর্ষণ থাকে না। আকর্ষণ নেই মানে অগ্নি নেই, প্রেম নেই, সৃজন নেই। হাল আছে তো পাল নেই, পাল আছে হাল নেই।

খেলা তো খেলাই, কিন্তু খেলারও কিছু নিয়ম আছে। নিয়ম না মেনে খেলা হয় না, যদিও অতি উৎসাহীরা নিয়মকে বলে পরাধীনতা। নারী-পুরুষের খেলা জগতের সবচেয়ে রহস্যময় খেলা। সবাই খেলে কিন্তু খেলার নিয়ম সবাই জানে না। যে যতটুকু জানে ততটুকুও মানে না। লাফালাফি করে যখন ক্লান্ত হয়, পেছনে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে-‘খেলাটি হলো না কেন? চেষ্টা তো কম করিনি?’

নিয়মগুলো কোথায়? বইয়ে নেই নিশ্চিত- জীবনে আছে এটিও নিশ্চিত। দুজনে হাল ধরলে হবে না- দুজনে পাল ধরলেও হবে না। হয় নারী হাল ধরবে- পুরুষ পাল ধরবে; না হয় পুরুষ হাল ধরবে- নারী পাল ধরবে। নারী-পুরুষ দুজনের একজনকে মনেপ্রাণে নারী হতেই হবে; অন্যজনকে মনেপ্রাণে পুরুষ হতেই হবে- অন্যথায় শান্তি অসম্ভব।

হালটি পুরুষের হাতে থাকাই উত্তম। কারণ, নারী হলো শক্তি- পুরুষ শক্ত। পুরুষ ধীর- তেজ কম। স্টিয়ারিং ধরে বসে থাকবে- তেজ কম থাকলেও চলে। গাড়ি চলতে হলে জ্বালানীর সরবরাহ অব্যাহত থাকা প্রয়োজন। তাই পাল হওয়া নারীর জন্য উত্তম।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

১ কমেন্ট “নারী এবং পুরুষ

  1. লেখাটা খুব সুন্দর ও চমৎকার হয়েছে। তবুও কিছু মন্তব্য করতেছি, ভুল হলে ক্ষমা করবেন, আর সঠিক বিষয়টা জানিয়ে দেবেন। অন্ধকার না থাকলে, আলো মূল্যহীন।মিথ্যা না থাকলে, সত্য মূল্যহীন। ইত্যাদি, আরো অনেক কিছু। সমস্ত কিছুই জোড়া জোড়া, একটা ছাড়া আরেকটা অচল। আমরা শুধুমাত্র ধারণার উপর বলি যে, ওইটা বড়, ওইটা ভালো। কিন্তু যদি একটু ভালো করে লক্ষ্য করি, তাহলে কোনটা বড় কোনটা ভাল এটা বলার সামর্থ্যই আমার নাই। যেমন : বিদ্যুতের নেগেটিভ ছাড়া পজেটিভ অচল। তাহলে পজেটিভ কে, কি বড় বলা যাবে? আর (নারী-পুরুষ দুজনের একজনকে মনেপ্রাণে নারী হতেই হবে; অন্যজনকে মনেপ্রাণে পুরুষ হতেই হবে- অন্যথায় শান্তি অসম্ভব।) এতোটুকু করতে পারলেই কি শান্তি পাওয়া সম্ভব?

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি